মহামারীর সিনেমা: ‘হেয়ার অ্যালোন’

একা বেঁচে থাকার গল্প

পুরো বিশ্ব এক ভয়ানক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে। একটি মারাত্মক মহামারীর কবলে পরে এরই মধ্যে পৃথিবীর অধিকাংশ জনসংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। আর যারা এখনো বেঁচে আছে তাদের মধ্যে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এ মহামারী। এবং আক্রান্ত ব্যক্তিরা হয়ে পড়ছেন জম্বির মতো রক্তপিপাসু। এ রকমই একটি ভয়ংকর কাহিনী নিয়ে নির্মিত হয়েছে ‘হেয়ার অ্যালোন’।

পুরো বিশ্ব এক ভয়ানক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে। একটি মারাত্মক মহামারীর কবলে পরে এরই মধ্যে পৃথিবীর অধিকাংশ জনসংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। আর যারা এখনো বেঁচে আছে তাদের মধ্যে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে মহামারী। এবং আক্রান্ত ব্যক্তিরা হয়ে পড়ছেন জম্বির মতো রক্তপিপাসু। রকমই একটি ভয়ংকর কাহিনী নিয়ে নির্মিত হয়েছে হেয়ার অ্যালোন

ছবিটির মূল চরিত্র অ্যান নামের একজন ২৮ বছর বয়সী মহিলা। যার স্বামী এবং একমাত্র কন্যা মহামারীতে মারা যায়। যারা মহামারীটিতে আক্রান্ত হয়ে জম্বিতে পরিণত হয়েছে, তাদের হাত থেকে বাঁচতে অ্যান নিউইয়র্কের একটি উঁচু প্রান্তরে আশ্রয় নেয়। একদিকে ক্ষুধা আর অন্যদিকে নিজের অতীত স্মৃতি ক্রমাগত কষ্ট দিতে থাকে অ্যানকে। একই সঙ্গে তার আশ্রয়স্থলের বাইরে ছড়িয়ে পড়া মহামারী দ্বারা আক্রান্ত রক্তপিপাসুদের হুমকির বিরুদ্ধেও লড়াই করতে হয় তাকে। একাকী ধৈর্য ধারণ করাকেই বেঁচে থাকার মূল চাবিকাঠি হিসেবে মেনে দিন অতিবাহিত করতে থাকে অ্যান।

খাবার শেষ হয়ে যাওয়ায় অ্যান একদিন খাবারের সন্ধানে মরিয়া হয়ে নিকটবর্তী একটি শহরে অভিযানে যায়। সেখানে গিয়ে অ্যানের সঙ্গে দেখা হয় অলিভিয়া নামক একটি কিশোরী মেয়ে এবং তার আহত সৎ বাবা ক্রিসের। ক্রিস অলিভিয়ার ধারণা উত্তর দিকে মহামারীটি সংক্রমিত হয়নি। তাই তারা সেদিকেই যাওয়ার চেষ্টা করছে বলে জানায়। অ্যান তাদের তার কাঠের শিবিরে থাকতে দেয়। যাতে তারা তাদের যাত্রার জন্য প্রস্তুত হতে পারে।

প্রথমদিকে ক্রিস অলিভিয়াকে বিশ্বাস করতে না পারলেও পরে ক্রিসের স্নেহসুলভ আচরণ অ্যানকে তার অতীতের কষ্ট ভুলতে সাহায্য করে। এর ফলে অ্যান ক্রিস ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠে। কিন্তু তাদের সম্পর্ক মোটেও ভালো লাগে না অলিভিয়ার। সে মনে করতে থাকে ক্রিস তার থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। অলিভিয়া অ্যানের ওপর তিক্ত হয়ে ওঠে। যখন মহামারীতে আক্রান্ত জম্বিরা অ্যানের নিরাপত্তাবেষ্টনী পার হয়ে চলে আসে তখন অ্যান আবার তার অতীতের সম্মুখীন হয়।

যদিও চলচ্চিত্রটি নির্মিত হয়েছে অন্য যেকোনো জম্বি ছবির মতো করেই, তবুও এর মূল বিষয়টি অন্যান্য ছবির থেকে আলাদা। ছবিতে মানবজাতির বিলুপ্তির চেয়ে তাদের টিকে থাকার বিষয়টি বেশি প্রাধান্য পেয়েছে।

জম্বি নিয়ে নির্মিত অন্যান্য চলচ্চিত্র সিরিজ থেকে ছবি আলাদা হওয়ার আরেকটি কারণ হলো, ছবিটির মূল চরিত্র অ্যান। সে একা থাকতে চায়। অন্যান্য প্রায় সব ছবিতেই দেখানো হয়েছে রকম বিপদের সময়ে বেঁচে থাকতে হলে দল বেঁধে থাকতে হবে। যখন সামাজিক রীতিনীতি মূল্যবোধ ভেঙে পড়বে তখন মানুষ কেমন আচরণ করবেসেই দিকটিও তুলে ধরা হয়েছে ছবিতে। হেয়ার অ্যালোন ছবিটি পরিচালনা করেছেন রড ব্ল্যাকহার্স্ট। এতে অ্যান চরিত্রে অভিনয় করেছেন লুসি ওয়াল্টার্স। এছাড়া শেন ওয়েস্ট, অ্যাডাম ডেভিড থম্পসন জিনা পিয়েরসান্তিও আছেন। ২০১৬ সালে ত্রিবিকা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ছবিটির প্রিমিয়ার হয়েছিল এবং প্রেক্ষাগহে মুক্তি পেয়েছিল ২০১৭ সালের ৩০ মার্চ।

 

আরও