সেমিফাইনাল প্রায় নিশ্চিতই করে ফেলল বার্সেলোনা। সিগনাল ইদুনা পার্কে পরের লেগ এখনো বাকি, তবে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে মন্টজুইকের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে ৪-০ গোলের দাপুটে জয়ের পর দ্বিতীয় লেগ যেন শুধুই আনুষ্ঠানিকতা। রাফিনিয়া, লামিন ইয়ামাল ও পেদ্রিদের দারুণ পারফরম্যান্সে বার্সা এখন ইউরোপিয়ান ফুটবলের সবচেয়ে রোমাঞ্চকর দলগুলোর একটি।
জোড়া গোল করে ম্যাচের মূল নায়ক ছিলেন ৩৭ বছর বয়সী পোলিশ নাম্বার নাইন রবার্ট লেভানডোভস্কি। এ নিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগে তার গোলসংখ্যা দাঁড়াল ৪০। আর তাকে ছাপিয়ে চলতি আসরে গোলদাতার তালিকায় শীর্ষে আছেন রাফিনিয়া, যিনি নিজেও স্কোরশিটে নাম লিখিয়েছেন। এই দুজনের সঙ্গে লামিন ইয়ামালের ত্রিফলা আক্রমণভাগের সামনে ডর্টমুন্ড ছিল অনেকটাই অসহায়।
খেলার শুরু থেকেই আধিপত্য বিস্তার করে বার্সেলোনা। মাত্র ছয় মিনিটের মাথায় তিনবার গোলের সুযোগ তৈরি করে ফেলে দলটি। ইয়ামাল ও রাফিনিয়া দুর্দান্ত গতিতে ডর্টমুন্ডের ডিফেন্স ছিন্নভিন্ন করে দেন। কর্নার থেকে ইনিগো মার্টিনেজের হেড থেকে বল পেয়ে গোলমুখে বাড়ান ১৭ বছর বয়সী পাও কুবার্সি। তবে রাফিনিয়া শেষ স্পর্শটা না দিলে চ্যাম্পিয়নস লিগে প্রথম গোলের দেখা পেয়ে যেতেন কুবার্সি। অফসাইড না হওয়ায় বার্সা পায় প্রথম গোল।
বার্সার জয়ের দুই নায়ক লামিন ইয়ামাল (বাঁয়ে) ও রাফিনিয়া। ছবি: সংগৃহীত
এরপর ডর্টমুন্ড কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও সুযোগ হাতছাড়া করেন গিরাসি ও চুকউয়েমেকা। বার্সা গোলরক্ষক শেজনি বেশ কয়েকবার সেভ করে দলকে রক্ষা করেন। তবে বিরতির পরেই বার্সেলোনা ফের ছন্দে ফেরে। পেদ্রির দুর্দান্ত পাস থেকে শুরু হওয়া মুভে ইয়ামাল, রাফিনিয়া ও লেভানডোভস্কির সমন্বয়ে আসে চোখজুড়ানো দ্বিতীয় গোলটি।
তৃতীয় গোলটি আসে মিনিট দশেকের মধ্যে—ফারমিন ও ইয়ামালের দারুণ বোঝাপড়ায় সুযোগ পেয়ে যান লেভানডোভস্কি, যিনি দুর্দান্ত ফিনিশিংয়ে কোনো ভুল করেননি।
শেষ গোলটি যেন ছিল এক কিশোরের খেলার মাঠের গল্প। রাফিনিয়ার পাসে ফাঁকা জায়গায় বল পেয়ে লামিন ইয়ামাল ঠাণ্ডা মাথায় বাঁ পায়ের টোকায় গোল করে ম্যাচের সকল উত্তেজনায় সমাপ্তি টানেন।
ডর্টমুন্ড পুরো ম্যাচেই বার্সার গতি, পাসিং ও ট্যাকটিকসে দিশেহারা ছিল। বার্সার এখন চ্যালেঞ্জ আরো কঠিন—পরবর্তী রাউন্ডে পিএসজি বা অ্যাস্টন ভিলা অপেক্ষায়। কিন্তু এই বার্সেলোনাকে থামানো সহজ হবে না।