বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে কলম্বিয়ার বিপক্ষে রোমাঞ্চকর জয় তুলে নিয়েছে ব্রাজিল। ২০২৬ বিশ্বকাপে সরাসরি জায়গা করে নেওয়ার লড়াইয়ে জয় ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প ছিল না সেলেকাওদের সামনে। ম্যাচের ৯৮ মিনিট পর্যন্ত স্কোরলাইন ছিল ১-১ সমতায়। ঠিক সেই সময় নাটকীয় মোড় নেয় খেলা, ৯৯তম মিনিটে ভিনিসিয়াস জুনিয়রের দুর্দান্ত গোলে রোমাঞ্চকর জয় নিয়ে তিন পয়েন্ট নিশ্চিত করে ব্রাজিল।
এ জয়ে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের পয়েন্ট তালিকার দুইয়ে উঠে আসল দরিভাল জুনিয়রের দল। ১৩ ম্যাচে ব্রাজিলের পয়েন্ট এখন ২১। আর ব্রাজিলের কাছে হেরে কলম্বিয়া নেমে গেছে ৬ নম্বরে। ১৩ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ১৯। ২৬ মার্চ আর্জেন্টিনার বিপক্ষে মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর লক্ষ্যে এই জয় বড় প্রাপ্তি ব্রাজিলের জন্য।
এদিন শুরুতে দুই দলই লাতিন অঞ্চলের পরাশক্তি হওয়ায় হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস আগেই মিলেছিল। মাঠের খেলায়ও দুই দল যথেষ্ট উত্তেজনার জন্ম দেয়। ম্যাচের শুরুতেই পেনাল্টিতে ব্রাজিলকে এগিয়ে দেন দারুণ ফর্মে থাকা রাফায়েল রাফিনিয়া। বিরতির আগমুহূর্তে গোল করে লুইস দিয়াজ কলম্বিয়াকে সমতায় ফেরান।
তবে ইনজুরি সময়ের নবম মিনিটে গিয়ে ডি বক্সের বাইরে থেকে জোরালো শটে ভিনিসিয়ুস স্বাগতিক দর্শকদের উল্লাসে মাতান। জয় নিশ্চিত করেন ২-১ গোলে। ব্রাজিল ম্যাচের প্রথম গোলটাও পায় ভিনিসিয়ুসের কল্যাণে। কলম্বিয়ার ডিফেন্ডার দানিয়েল মুনোজ তাকে ডি-বক্সে ফেলে দিলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। এরপর বাঁ পায়ের বাঁকানো শটে সফল স্পট কিক নিয়েছেন বার্সেলোনা ফরোয়ার্ড রাফিনিয়া। এ নিয়ে ব্রাজিলের জার্সিতে শেষ ৪ ম্যাচে তিনি চতুর্থ গোল করলেন। খানিক বাদেই রদ্রিগোর শট বেরিয়ে যায় বাইরে দিয়ে। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের মাঝে ব্রাজিল ম্যাচে দু’বার ধাক্কা খায়। প্রথমত চতুর্দশ মিনিটে কলম্বিয়ার কাউন্টার অ্যাটাক রুখতে গিয়ে ট্যাকল করে হলুদ কার্ড দেখেন গুইমারেস, যা তাকে আর্জেন্টিনা ম্যাচ থেকে ছিটকে দিয়েছে। এরপর ২৭ মিনিটে চোট নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় গারসনকে।
বিরতিতে যাওয়ার ঠিক চার মিনিট আগে সমতায় ফেরে কলম্বিয়া। এই গোলে দায় বেশি ব্রাজিল মিডফিল্ডার জোয়েলিন্টনের। সতীর্থের কাছ থেকে বল পেয়ে শট নিতে দেরি করায় তাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে কলম্বিয়ার একজন। ফলে হামেস রদ্রিগেজ হয়ে সেই বল যায় লুইস দিয়াজের পায়ে। লিভারপুলের এই ফরোয়ার্ড আড়াআড়ি শটে জাল খুঁজে নেন। এর আগেও ব্রাজিলের বিপক্ষে জয়ের ম্যাচে জোড়া গোল করেছিলেন দিয়াজ।
দ্বিতীয়ার্ধে কলম্বিয়া গোলরক্ষক কামিলো ভার্গাসের বেশ কয়েকবার পরীক্ষা নিয়েছেন ভিনি-রাফিনিয়ারা। প্রতিবারই অবশ্য তিনি ভালোভাবে উৎরে গেছেন। ৬৩ মিনিটে অবশ্য গোলও পেয়ে যায় সফরকারী কলম্বিয়া। তবে তার আগে গোলরক্ষক অ্যালিসনকে ফাউল করায় তারা সমতায় ফেরার সুযোগ হাতছাড়া করে। ৭১ মিনিটেই তিনি আরো বড় ধাক্কাটি খান। সানচেজের সঙ্গে সংঘর্ষ লেগে মাথায় আঘাত পান অ্যালিসন। ফলে দুজনকেই মাঠ ছাড়তে হয়। ব্রাজিলের গোলবার সামলাতে নামেন ম্যাথিয়াস বেন্তো।
এরপর দুই দলই লিড পাওয়ার আশায় আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে ম্যাচ জমিয়ে তোলে। ব্রাজিলের নিউক্যাসল তারকা জোয়েলিন্টন ভালো একটি শটও নিয়েছিলেন, তবে সেটি ছিল লক্ষ্যভ্রষ্ট। যোগ করা সময়ের অষ্টম মিনিটে দূরের পোস্টে হেড করতে গিয়ে মাথায় চোট পান ব্রাজিল ডিফেন্ডার গুইলার্মে অ্যারানা। কয়েক সেকেন্ড পরই ডি-বক্সের বাইরে থেকে দূরপাল্লার আড়াআড়ি শটে জাল খুঁজে নেন ভিনিসিয়ুস। যা গোলরক্ষক ভার্গাস ঝাঁপিয়েও নাগাল পাননি।