নোবেলজয়ী জেফ্রি হিন্টনের সতর্কবার্তা

এআই আমাদের চেয়ে স্মার্ট হলে সবই নিয়ন্ত্রণে নিতে থাকবে

প্রযুক্তি বিশ্বে আজকের সময়ে সবচেয়ে আলোচিত বিষয়ের একটি হলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই। এআইয়ের মাধ্যমে মেশিন লার্নিংয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় ২০২৪ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়েছে জন হপফিল্ড ও জেফ্রি হিন্টনকে। এ সময় ‘এআইয়ের গডফাদার’ হিসেবে পরিচিত হিন্টন মেশিন লার্নিংয়ের ভিত্তি স্থাপন করার জন্য বেশ প্রশংসিত হয়েছেন, যা আজকের অনেক এআইভিত্তিক পণ্য ও অ্যাপ্লিকেশনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এ স্বীকৃতি তার কাজের গুরুত্বকে তুলে ধরে, যা এআইয়ের অগ্রসরে সহায়ক হয়েছে। তবে হিন্টন এআইয়ের কিছু সম্ভাব্য নেতিবাচক পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করেছেন, বিশেষত সিস্টেমগুলো নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার ঝুঁকি নিয়ে। খবর সিএনএন।

মেশিন লার্নিং হলো এমন প্রযুক্তি, যা কম্পিউটারকে ডাটা বিশ্লেষণ করে সে ডাটা থেকে শিখতে সক্ষম করে। এর মাধ্যমে কম্পিউটার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার মতো অনেক কাজ স্বয়ংক্রিয়ভাবে করতে পারে।

এআই প্রযুক্তির গুরুত্ব নিয়ে টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞানী হিন্টন বলেন, ‘এআই আমাদের সমাজের ওপর বিশাল প্রভাব ফেলবে, যা একটি শিল্পবিপ্লবের সঙ্গে তুলনা করা যায়। আমরা কখনই এমন কিছু নিয়ে কাজ করিনি, যা মানুষের চেয়ে স্মার্ট।’ তবে নোবেল পুরস্কার জয়ের পর এআইয়ের কিছু সম্ভাব্য ঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন হিন্টন। এজন্য কোম্পানিগুলোকে এআইবিষয়ক নিরাপত্তা নিয়ে আরো গবেষণা করার প্রতি আহ্বান জানান তিনি। হিন্টন বলেন, ‘বড় বড় অনেক গবেষক বিশ্বাস করেন যে আগামী ২০ বছরের মধ্যে এআই আমাদের চেয়ে বেশি সূক্ষ্মবুদ্ধি সম্পন্ন হয়ে উঠবে। তখন কী হবে সে সম্পর্কে আমাদের ভাবতে হবে। আমি চিন্তিত ভবিষ্যতে আমাদের চেয়েও বেশি বুদ্ধিমান সিস্টেম তৈরি হতে পারে। যদি চারপাশে দেখেন, তাহলে খুব কম উদাহরণ আছে, যেখানে বেশি বুদ্ধিমান জিনিস কম বুদ্ধিমানের দ্বারা নিয়ন্ত্রণ হয়। এ কারণে এআই আমাদের চেয়ে স্মার্ট হলে, এটি সব নিয়ন্ত্রণে নিতে শুরু করবে।’

হিন্টন আরো বলেন, ‘এআই প্রযুক্তি স্বাস্থ্যসেবার মতো ক্ষেত্রগুলোয় ব্যাপক উন্নতি আনবে ও উৎপাদনশীলতা বাড়িয়ে দেবে। একই সঙ্গে এসব সিস্টেম মানুষের শারীরিক শক্তির চেয়েও বুদ্ধিমত্তাকে ছাড়িয়ে যাবে।’

জেফ্রি হিন্টন ২০২৩ সালে গুগলের চাকরি ছেড়ে দেন এবং মানুষের চেয়ে মেশিনের স্মার্ট হওয়ার ঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। হিন্টন ওই সময় সতর্ক করে বলেছিলেন, ‘এআইয়ের জন্য যে সীমা নির্ধারণ করা আছে, তা অতিক্রম করাও শিখতে পারে প্রযুক্তিটি। তার ধারণা, এআই নিজের লক্ষ্য অর্জনের জন্য ব্যক্তিতে ব্যবহার করে উপায় বের করতে পারে।’

আরও