পুরনো ফোন ভালো দামে বিক্রির কৌশল

বর্তমান যুগে প্রযুক্তির উৎকর্ষ এতটাই দ্রুত যে প্রতি বছরই বাজারে আসছে নতুন নতুন মডেলের স্মার্টফোন।

বর্তমান যুগে প্রযুক্তির উৎকর্ষ এতটাই দ্রুত যে প্রতি বছরই বাজারে আসছে নতুন নতুন মডেলের স্মার্টফোন। উন্নত প্রযুক্তির সঙ্গে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে অনেকেই চেষ্টা করেন নিয়মিত ফোন আপগ্রেড করতে। তবে তা হতে পারে বেশ ব্যয়বহুল। যদি ব্যবহৃত ফোনের সঠিকভাবে যত্ন নেয়া যায়, তাহলে তা বিক্রির মাধ্যমে নতুন ফোনের ব্যয়ভার বেশ খানিকটা কমানো সম্ভব। কিছু সহজ ও কার্যকর অভ্যাস অনুসরণ করলে যে কেউই তাদের ব্যবহৃত ফোন ভালো দামে বিক্রি করতে পারে।

কেস ও প্রটেক্টরের ব্যবহার

স্মার্টফোনে আজকাল মজবুত গ্লাস কভার ও অ্যালুমিনিয়ামের ফ্রেম থাকে। কিছু ফ্ল্যাগশিপ মডেলে টাইটেনিয়াম পর্যন্ত ব্যবহার করা হচ্ছে। তবু ফোনকে নতুনের মতো রাখার জন্য কেস ও স্ক্রিন প্রটেক্টর ব্যবহার করা অত্যন্ত জরুরি। শক্ত কেস ও স্ক্রিন প্রটেক্টর ফোনকে দাগ বা পড়ে যাওয়ার ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। এছাড়া ভালো মানের কেস ও প্রটেক্টর কেনা থাকলে বিক্রির সময় ফোনের সঙ্গে সেগুলো দিলে ক্রেতার কাছ থেকে তুলনামূলক বেশি দাম পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ভালো অবস্থায় থাকা ফোনের পুনঃবিক্রয় মূল্য ২০ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বেশি পাওয়া যেতে পারে। শুধু ব্যবহারের সময় ফোনের সুরক্ষায় বাড়তি যত্ন নেয়ায় মনোযোগ দিতে হয়।

বক্স ও চার্জার রাখা

বর্তমানে অধিকাংশ স্মার্টফোনের বক্সে খুব বেশি কিছু থাকে না—একটি সাধারণ কেস, ইউএসবি-সি কেবল, সিম ইজেক্টর পিন ও কিছু কাগজপত্র। তবুও ফোনের বক্স ও ক্রয়ের রসিদ রাখা জরুরি। বক্সে চার্জার না থাকায় নতুন করে কিনতে হয়। ফলে বক্সের কেবল অনেক ক্ষেত্রে অব্যবহৃত থেকে যায়। ছোটখাটো এসব বিষয় আলাদাভাবে তেমন গুরুত্বপূর্ণ না হলেও ফোন বিক্রির সময় সামগ্রিকভাবে মূল্য বাড়াতে সাহায্য করে। যত্নসহকারে রাখা বক্সসহ ফোন বিক্রি করলে ক্রেতার কাছে সেটি আরো বিশ্বাসযোগ্য ও দামি মনে হয়।

ব্যাটারি হেলথ বজায় রাখা

ফোনের ব্যাটারি হেলথ ভালো রাখা সহজ কাজ নয়। তবে বিক্রির সময় ভালো দাম পেতে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফাস্ট চার্জিং ও ফাস্ট ওয়্যারলেস চার্জিং এড়ানো যেতে পারে। ব্যাটারির চার্জ শূন্য শতাংশে নামিয়ে আনা বা ১০০ শতাংশ পর্যন্ত চার্জ না দেয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। ব্যাটারি হেলথ ৯৫ শতাংশ নিয়ে বিক্রি করলে ভালো দাম পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ৮০ শতাংশ বা তার কম হলে দাম কম পাওয়া যাবে। যদি ব্যাটারি দুর্বল হয়, আগে থেকেই বদলে ব্যবহার করে পরে বিক্রি করা যেতে পারে।

ওয়ারেন্টির ব্যবহার

ওয়ারেন্টি অক্ষত থাকলে যেকোনো সমস্যা হলে অফিশিয়াল সার্ভিস সেন্টারে যাওয়া জরুরি। এতে ওয়ারেন্টি বজায় থাকে ও মানসম্মত সার্ভিস পাওয়া যায়। অন্যদিকে অচেনা থার্ড-পার্টি সার্ভিস সেন্টার থেকে কাজ করানো হলে আরো সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে পুরনো ও ওয়ারেন্টি শেষ হওয়া ফোনের ক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্য থার্ড-পার্টি সার্ভিসই বিচক্ষণ বিকল্প। কারণ অফিশিয়াল সার্ভিস সেন্টারের খরচ তুলনামূলক অনেক বেশি হয়ে থাকে।

বিক্রির উপযুক্ত সময়

কনটেন্ট ক্রিয়েটররা হ্যান্ডি গ্যাজেট হিসেবে পছন্দ করেন আইফোন। সেপ্টেম্বরে আইফোনের নতুন মডেল উন্মোচন করা হয়। সে হিসেবে পুরনো মডেল বিক্রি করতে চাইলে উপযুক্ত সময় হবে আগস্ট। কারণ নতুন মডেল বাজারে এলে পুরনো মডেল বিক্রির মাধ্যমে ভালো অর্থ না পাওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। এজন্য যেকোনো কোম্পানির নতুন মডেল বাজারে আসার আগে পুরনো মডেল বিক্রি করলে ১৫-২০ শতাংশ বেশি দাম পাওয়া যায়।

একাধিক প্লাটফর্মে বিক্রির চেষ্টা

ব্যক্তিগতভাবে চেষ্টার চেয়ে একাধিক মার্কেটপ্লেসে পুরনো ফোন বিক্রির বিজ্ঞাপন কস্ট কমিয়ে আনবে। তাছাড়া দাম যাচাই করে নেয়ার সুযোগ তো থাকছে। যদিও এক্ষেত্রে বাড়তি যোগাযোগের সম্মুখীন হতে হয়, তবে ভালো দাম পাওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। ফোন হস্তান্তর করার আগে অবশ্যই সব ডাটা মুছে ফেলতে হবে।

আরও