এক দশকে অনেক কাজে মানুষের বিকল্প হবে এআই: বিল গেটস

আগামী এক দশকের মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) মানুষের অনেক কাজের বিকল্প হয়ে উঠবে বলে মন্তব্য করেছেন মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস।

আগামী এক দশকের মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) মানুষের অনেক কাজের বিকল্প হয়ে উঠবে বলে মন্তব্য করেছেন মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস। সম্প্রতি এনবিসির ‘দ্য টুনাইট শো’-তে কমেডিয়ান জিমি ফ্যালনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, চিকিৎসা পরামর্শ ও শিক্ষাদানসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ এআই সহজলভ্য করে তুলবে। খবর সিএনবিসি।

গেটস বলেন, ‘বর্তমানে দক্ষ পেশাদারদের ওপর মানুষের নির্ভরতা বেশি। বিশেষ করে চিকিৎসক ও শিক্ষকদের ক্ষেত্রে এ নির্ভরতা বেশি হলেও এআই দ্রুত উন্নত হচ্ছে। ভবিষ্যতে এসব কাজ সহজেই প্রযুক্তির মাধ্যমে সম্ভব হবে।’ তিনি এ প্রযুক্তিকে ফ্রি ইন্টেলিজেন্স যুগের সূচনা হিসেবে দেখছেন।

বিশ্ব এখন বিনামূল্যে বুদ্ধিমত্তার যুগে প্রবেশ করছে বলে মনে করেন বিল গেটস। উন্নত চিকিৎসা পরামর্শ ও টিউটরিং সেবা আগামী দশকে বিনামূল্যে এআইয়ের মাধ্যমে পাওয়া যাবে বলে ধারণা তার। এতে করে জীবনের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার বাড়বে।

এ প্রসঙ্গে মাইক্রোসফট এআইয়ের প্রধান নির্বাহী মুস্তাফা সুলেমান জানান, এআই প্রযুক্তির বিকাশ কর্মক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন আনবে। তার মতে, এআই শুধু মানুষের দক্ষতা বাড়াবে না। বরং অনেক ক্ষেত্রে সরাসরি শ্রম প্রতিস্থাপন করবে। তার লেখা ‘দ্য কামিং ওয়েভ’ বইয়ে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে প্রযুক্তির বিকাশের ফলে অনেক কাজ মানুষের পরিবর্তে স্বয়ংক্রিয়ভাবে করা যাবে।

বিল গেটস মনে করেন, এআই মানবজাতির জন্য নতুন সম্ভাবনা তৈরি করবে। বিশেষ করে উন্নত রোগ নির্ণয় ব্যবস্থা, জলবায়ু পরিবর্তনের সমাধান ও উচ্চমানের শিক্ষার ক্ষেত্রে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তবে কিছু কাজ হয়তো কখনই এআই প্রতিস্থাপন করতে পারবে না বলে মনে করেন তিনি। উদাহরণ হিসেবে জানান, মানুষ নিজেদের বেসবল খেলা দেখতে চাইবে, কিন্তু রোবটদের নয়।

তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দ্রুত বিকাশ নিয়ে উদ্বেগও রয়েছে। বিল গেটস বলেন, ‘এআই এখনো ভুল করতে পারে। এছাড়া অনলাইনেও ভুল তথ্য ছড়ানোর আশঙ্কা থেকেই যায়। তবে ভবিষ্যতে অনেক ব্যবসায়িক সুযোগ তৈরি হবে, যেখানে এআই-ভিত্তিক উদ্যোগ সবচেয়ে বেশি লাভজনক হবে।’

প্রসঙ্গত, বিল গেটস দীর্ঘদিন ধরেই এআইয়ের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলে আসছেন। ২০১৭ সালে তিনি এআইয়ের অগ্রগতিকে প্রযুক্তির ক্ষেত্রে একটি ‘গভীর পরিবর্তন’ হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন। পরে ২০২৩ সালে ওপেন এআইয়ের তৈরি একটি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর পেতে সক্ষম হয়। গেটসের মতে, ১৯৮০ সালের গ্র্যাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেসের পর এটি প্রযুক্তির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।

আরও