২০৩৩ সাল

২০ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে এআই ড্রোনের বাজার

ড্রোন প্রযুক্তিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করা হয় ড্রোনের সক্ষমতা উন্নত করার লক্ষ্যে। এসব ড্রোন সামরিক, কৃষি, বিতরণ পরিষেবা, সরকারি কাজ, শিল্প ও নির্মাণের মতো অনেক ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়। বাজার গবেষণা ও পরামর্শক কোম্পানি মার্কেটডটইউএসের আগস্টের প্রতিবেদন বলছে, ড্রোনে ব্যবহৃত এআইয়ের বাজার ২০২৩ সালের ১ হাজার ২৫০ কোটি ডলার থেকে বেড়ে ২০৩৩ সালে প্রায় ২০ হাজার ৬৯০ কোটি ডলারে পৌঁছবে। এ প্রবৃদ্ধি ২০২৪ সাল থেকে প্রতি বছর ৩২ দশমিক ৪ শতাংশ হারে ঘটবে। খবর ফাইন্যান্সিয়াল নিউজ মিডিয়া।

প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এআই ড্রোনের বাজার দ্রুত বৃদ্ধির কারণ হলো, বিভিন্ন শিল্প ড্রোনের মাধ্যমে কার্যকারিতা বাড়ানো ও খরচ কমানোর সম্ভাবনা দেখছে। এ বাজারে এআই ব্যবহারের কিছু প্রধান ক্ষেত্র হলো কৃষি, আকাশপথে নজরদারি ও প্যাকেজ বিতরণ।

প্রযুক্তিবিদরা বলছেন, ড্রোনে এআই মানে হলো উন্নত অ্যালগরিদম ও মেশিন লার্নিং প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্ত করা। এ প্রযুক্তিগুলো ড্রোনকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে উড়তে, বাধা শনাক্ত করতে, এড়াতে এবং বিভিন্ন বস্তু চিনতে সাহায্য করে। এছাড়া প্রযুক্তিটি বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে পথ নির্ধারণ করতে ও এমনকি সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এআইচালিত ড্রোনগুলো রিয়েল টাইমে বিশাল পরিমাণ তথ্য বিশ্লেষণ করতে পারে, যা বিভিন্ন কোম্পানিকে আরো সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ও দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানাতে সহায়ক। তাই কৃষি, লজিস্টিক ও প্রতিরক্ষা শিল্পগুলো এ ড্রোনের প্রধান ব্যবহারকারী।

মার্কেটডটইউএস বলছে, যেহেতু ড্রোনের ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে, এক্ষেত্রে এআই এগুলোর সক্ষমতা উন্নত করতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। যেসব কোম্পানি এআই-চালিত ড্রোনে বিনিয়োগ করছে, তারা কম শ্রম খরচের মতো গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা পেতে পারে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ড্রোন প্রযুক্তিতে এআই ব্যবহারে উৎসাহিত করার জন্য সরকারি সহায়তাও গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্রে ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডাবলএ) চার লাখের বেশি বাণিজ্যিক ড্রোন অপারেটরকে অনুমোদন দিয়েছে, যাদের মধ্যে অনেকেই এআই-চালিত ড্রোন ব্যবহার করছে। এআই ও ড্রোন মিলে কেবল ব্যবসায়িক কার্যক্রমের দক্ষতা বাড়াচ্ছে না বরং অর্থনৈতিক সুবিধাও দিচ্ছে। এআই-চালিত ড্রোনগুলো দ্রুত ও আরো সঠিকভাবে কাজ করতে সক্ষম, যা বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রথাগত পদ্ধতিকেও পরিবর্তন করছে।

বর্তমানে এআই ও ড্রোন প্রযুক্তির বাজারে কিছু সক্রিয় কোম্পানি হলো জেনাটেক, অ্যারোভায়রনমেন্ট, ড্রাগনফ্লাই, রেড ক্যাট হোল্ডিংস ও এজিইগল এরিয়াল সিস্টেমস। এর মধ্যে জেনাটেককে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে মার্কেটডটইউএস। তারা বলছে, প্রযুক্তি কোম্পানি জেনাটেক এআইচালিত ড্রোন ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক কাজে সফটওয়্যারভিত্তিক সমাধান তৈরি করে। ২০১৭ সাল থেকে তারা ড্রোন ডিজাইন ও উৎপাদনসক্ষমতা বাড়াতে কাজ করছে। এআই ড্রোন বাজারের কিছু চ্যালেঞ্জের কথাও উল্লেখ করেছে মার্কেটডটইউএস, এর মধ্যে রয়েছে ব্যবহারের ওপর বিধিনিষেধ, তথ্য গোপনীয়তা নিয়ে উদ্বেগ ও এআই-চালিত ড্রোনের উচ্চ খরচ। ড্রোন পরিচালনাসংক্রান্ত নিয়মাবলি আরো উন্নত হলে ও এ প্রযুক্তির জন্য সহায়তা বাড়লে, সামগ্রিকভাবে এআইয়ের বাজার উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে বলে আশা করছেন প্রযুক্তিবিদরা।

এদিকে গত বছর অক্টোবরে ইয়াহুর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, বৈশ্বিক ড্রোনে এআইয়ের বাজার ২০৩০ সালের মধ্যে ৮ হাজার ৪০০ কোটি ডলারে পৌঁছবে এবং প্রতি বছর এর প্রবৃদ্ধি হবে ২৮ দশমিক ৫ শতাংশ হারে।

আরও