হাত বাড়িয়ে ছোঁয়া যাবে হলোগ্রাম

হলোগ্রাম এমন এক ধরনের ত্রিমাত্রিক (থ্রিডি) চিত্র, দেখতে বাস্তব জিনিসের মতো মনে হলেও এটি আসলে আলো দিয়ে তৈরি।

হলোগ্রাম এমন এক ধরনের ত্রিমাত্রিক (থ্রিডি) চিত্র, দেখতে বাস্তব জিনিসের মতো মনে হলেও এটি আসলে আলো দিয়ে তৈরি। হলোগ্রাম যেদিক থেকেই দেখা হোক না কেন, একটা বাস্তব বস্তু সামনে আছে বলেই মনে হয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন পর্যন্ত সবচেয়ে রোমাঞ্চকর বিষয় হলো মানুষ প্রথমবারের মতো এমন একটি বস্তুকে হাত দিয়ে স্পর্শ করতে পারবে, যা বাস্তবে সেখানে নেই। এ অভিজ্ঞতা নিঃসন্দেহে প্রযুক্তিরজগতে এক অভূতপূর্ব মুহূর্ত।

নতুন এ প্রযুক্তি সম্পর্কে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে গবেষণা দলের প্রধান লেখক এলোডি বাউজবিব বলেন, ‘চলচ্চিত্রে যেসব হলোগ্রাম দেখা যায়, সেগুলোর প্রযুক্তিগত নাম ভলিউমেট্রিক ডিসপ্লে। এগুলো এমন ধরনের গ্রাফিকস, যা মাঝ আকাশে ভেসে থাকে। ভলিউমেট্রিক ডিসপ্লে বিভিন্ন কোণ থেকে পরিষ্কারভাবে দেখা যায়। এজন্য আলাদা কোনো ভার্চুয়াল রিয়ালিটি চশমার প্রয়োজন পড়ে না। এ প্রযুক্তিকে “‍ট্রু থ্রিডি গ্রাফিকস’’ বলে।’

তার মতে, ভলিউমেট্রিক ডিসপ্লে বা প্রকৃত থ্রিডি গ্রাফিকস নতুন কোনো বিষয় নয়। একে অনেক দিন ধরেই প্রোটোটাইপ বা পরীক্ষামূলকভাবে তৈরি করা হচ্ছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এগুলো দেখতে ছোট প্রজেক্টরের মতো। তবে পার্থক্য হলো এগুলো টুডি নয়, থ্রিডি ছবি প্রজেক্ট করে (আলো ফেলে ছবি বা দৃশ্যকে সামনে তুলে ধরা)। এ প্রযুক্তিতে ডিফিউজার নামে এক ধরনের স্ক্রিন ব্যবহার হয়। স্ক্রিনটা খুব দ্রুত ওপরে-নিচে নড়ে, যা মানুষের চোখে ধরা পড়ে না। স্ক্রিনে চলমান প্রতিটি বিন্দুতে আলাদা আলাদা ছবি ফেলা হয়। চোখ এসব ছবিকে একসঙ্গে মিলিয়ে একটি সম্পূর্ণ হোলোগ্রামের মতো দেখতে পায়।

প্রতিবেদন বলছে, নতুন উদ্ভাবিত প্রযুক্তিটিও একই মূলনীতিতে কাজ করে। তবে এতে এসেছে এক বিশেষ পরিবর্তন। আগের ডিফিউজারগুলো ছিল পাতলা, অনমনীয় ও ভঙ্গুর। ফলে সেগুলোর তৈরি থ্রিডি ইমেজে কেউ হাত দেয়ার চেষ্টা করলে ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা থাকত, এমনকি ব্যবহারকারী নিজেও আঘাত পেতে পারত। কিন্তু নতুন প্রযুক্তিতে ব্যবহৃত ডিফিউজার তৈরি করা হয়েছে নমনীয়, ইলাস্টিক ব্যান্ডের মতো উপাদান দিয়ে, যা স্পর্শ করলে ভাঙবে না বা ক্ষতি করবে না। বরং ব্যবহারকারী এখন নিরাপদে থ্রিডি ছবিগুলোর সঙ্গে সরাসরি ইন্টার‍্যাক্ট করতে পারবে, ছুঁতে পারবে এবং নাড়াচাড়াও করতে পারবে।

তবে ছুঁয়ে দেখার এ প্রযুক্তি এখনো বিকাশের প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। এছাড়া ভবিষ্যতের জন্য রয়েছে বেশকিছু উদ্ভাবনী পরিকল্পনা, বিশেষ করে স্পর্শের অনুভূতিকে আরো বাস্তব করে তুলতে এতে বিশেষ সুবিধা যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। খবর দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

আরও