শুষ্ক ঠোঁটের দরকার বাড়তি যত্ন

শুষ্ক ও কালচে ঠোঁট সৌন্দর্য আর আত্মবিশ্বাস দু’টোই কমিয়ে দেয়। আমাদের ঠোঁট তুলনামূলক বেশি পাতলা। সাধারনত ত্বকের আউটার লেয়ারে স্ট্রটাম কর্নিয়াম থাকে, কিন্তু ঠোঁটে এটি থাকে না। এখানে কোনো সোয়েট গ্ল্যান্ড নেই, ফেইসের অন্যান্য অংশের তুলনায় সেবাসিয়াস গ্ল্যান্ডও কম পরিমাণে থাকে। তাই এটি হাইড্রেটেড ও ময়েশ্চারাইজড রাখতে হয়। নাহলে ঠোঁট শুস্ক হয়ে যায়।

যেসব কারণে ঠোঁট রুক্ষ ও শুষ্ক হয়

১. অনেকেরই অভ্যাস আছে জিহ্বা দিয়ে বার বার ঠোঁট ভেজানো। এতে ঠোঁট অল্প সময়ের ব্যবধানে শুষ্ক হতে হতে একসময় শুষ্কতাই স্থায়ী হয়ে যায়।

২. সান এক্সপোজার এবং রেগুলার বেসিসে এস পি এফ যুক্ত লিপ কেয়ার প্রোডাক্ট না ব্যবহার করার কারণে ঠোঁটের পিগমেন্টেশন দেখা দেয়। তবে জিনগত কারণেও অনেকের ঠোঁট একটু ডার্ক হয়ে থাকে৷

৩. বার বার ঠোঁট ঘষা, চামড়া টেনে তোলা – এগুলো অনেকেই করে থাকেন। এগুলোও ঠোঁটের ত্বক নষ্টের কারণ হতে পারে।

৪.. নন ব্র্যান্ডের লিপ টিন্ট, রেপ্লিকা লিপস্টিক, লিপ গ্লস এগুলোতে ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ থাকে যা ঠোঁটের ত্বকের ক্ষতি করে। এগুলো দীর্ঘদিন ব্যবহারে লিপস কালচেও হয়ে যেতে পারে।

৫. স্মোকিং, অ্যালকোহল- এগুলোও ঠোঁটের পিগমেন্টেশনের কারণ।

৬. ঠোঁটের আশপাশে একজিমা, অ্যালার্জির সমস্যা ঠোঁট কালচে ও শুষ্ক করে দিতে পারে।

৭. শরীরে যদি ভিটামিন বি১২ এর ঘাটতি থাকে, তাহলে ঠোঁটের পিগমেন্টেশন হতে পারে। আবার ভিটামিন ই, সি এর অভাবেও ঠোঁট শুষ্ক হয়ে যায়।

ঠোঁটের যত্ন

প্রতিদিনের কিছু অভ্যাস ও সঠিক উপায়ে যত্ন ধীরে ধীরে ঠোঁটের কালচে ভাব ও শুষ্কতা দূর করতে পারে। নরম তুলতুলে ঠোঁট কে না চায়। ঠোঁটের যত্নে শীত কিংবা গ্রীষ্মে যেকোনো সময়েই এই টিপসগুলো মেনে চলা জরুরি-

১. দিনের বেলায় অন্তত এস পি এফ ১৫ যুক্ত লিপ কেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করা উচিত। এখন মার্কেটে অনেক ধরনের এস পি এস যুক্ত লিপবাম, লিপ জেল, লিপ টিন্ট ইত্যাদি রয়েছে৷ টিন্ট ছাড়াও আছে, আপনার পছন্দ মতো প্রোডাক্ট আজই যুক্ত করে নিন সেলফ কেয়ার রুটিনে।

২. রেপ্লিকা লিপস্টিক অ্যাপ্লাই করা আজই ব্যবহার বন্ধ করে দিন। যদি এমন হয় যে কোনো লিপস্টিক, লিপ টিন্ট বা অন্য কোনো প্রোডাক্ট ব্যবহারের কারণে ঠোঁটে কালচেভাব দেখা দিচ্ছে বা চুলকানি হচ্ছে, তাহলে সেগুলো ব্যবহার করা বন্ধ করুন।

৩. চ্যাপড লিপসের সল্যুশনে ময়েশ্চারাইজিং লিপবাম শীতকালে ব্যবহারে করুন। অথবা ঠোঁটে প্রথমে ময়েশ্চারাইজার অ্যাপ্লাই করে তারপর ভ্যাজলিন বা লিপবাম দিয়ে সিল করুন। বেশি শুষ্ক মনে হলে রাতের বেলা লিপ স্লিপিং মাস্ক অথবা লিপ অয়েল ইউজ করুন। যাদের এক্সট্রিম ড্রাই লিপস, তারা আরগান অয়েলও ব্যবহার করে দেখতে পারেন।

৪. সপ্তাহে একদিন লিপস স্ক্রাবিং করুন, এতে ঠোঁটের মৃত কোষগুলো দূর করা যাবে।

৫. ধূমপান অবশ্যই পরিত্যাগ করতে হবে। অতিরিক্ত গরম খাবার, অতিরিক্ত ক্যাফেইন এড়িয়ে চলুন। খাবারের তালিকায় কমলা, টমেটো, দুধ, বাদাম এগুলো যোগ করুন। এগুলো সফট প্লাম্পি লিপস পেতে ভেতর থেকে পুষ্টি যোগাবে। বেশি করে পানি পান করুন, এতে আপনার ত্বকের পানিশূন্যতা দূর হবে।

ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শ

অ্যালার্জি অথবা একজিমা থাকলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। একজিমা থাকলে ত্বকের অনেক বেশি শুষ্ক হয়ে যাওয়ার প্রবণতা থাকে। সঠিক চিকিৎসা নিতে হবে।

আরও