ঘরের শোভা বাড়াতে নিজেই বানান সানব্রাস্ট মিরর

আয়না আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ। আবিষ্কারের পর থেকেই এর প্রতি মানুষের তৈরি হয়েছে অন্যরকম ভালোবাসা। আয়নাতে নিজের প্রতিবিম্ব দেখেই সবার নিজেকে জানা ও চেনা। এই আয়না নিয়ে লেখা হয়েছে অনেক গান ও কবিতা। নিত্যদিনের ব্যবহারের পাশাপাশি বর্তমানে এর নকশাতেও লেগেছে আভিজাত্যের ছোঁয়া। ঘর সাজানোর অন্যতম একটি উপকরণ হয়ে উঠেছে এই আয়না। সিঁড়ির পাশে, করিডোরে বা লিভিং রুমের বড় দেয়ালে, বেলকনি সাজাতে বিভিন্ন রকম আয়নার ব্যবহার ইদানিং বেশ চোখে পড়ে। এটি দেখতে যেমন দারুণ লাগে, তেমনই ঘরের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেয় আরো কয়েক গুণ। দোকান থেকে কিনে আনা আয়নার বদলে কেমন হয় যদি আমরা হাতের কাছে থাকা সহজলভ্য কিছু উপকরণ দিয়ে কম খরচেই বানিয়ে নিতে পারি দারুণ কিছু আয়না? তবে চলুন আজকে ঘরের শোভা বাড়াতে হাতে তৈরি কিছু নান্দনিক আয়না বানানো শিখে নেই-

ঘরের শোভা বাড়াতে নান্দনিক আয়না

ঘর সাজাতে নান্দনিক আয়নার প্রচলন শুরু হয়েছে বেশ কিছুদিন আগে থেকেই। এতে রুচিশীলতারও প্রকাশ পায়। হাতে বানানো কয়েকটি আয়নার নকশা চলুন দেখে নেই-

১) সানব্রাস্ট মিরর

সানব্রাস্ট মিরর মূলত আমরা সূর্যকে যেভাবে এঁকে দেখাই সেভাবে তৈরি করা আয়না। একবারে সহজলভ্য কিছু উপকরণ দিয়ে দারুণ এই দেয়াল আয়নাটি তৈরি করে ফেলা যায়।

বানাতে যা যা লাগবে

একটি গোল আয়না

কার্ডবোর্ড

সাসলিকের কাঠি বা লম্বা পেপার রোল

আঠা, হট গ্লু গান

পছন্দমতো বিভিন্ন সাইজ ও শেইপের ছোট ছোট আয়না বা ডলার

স্প্রে পেইন্ট/অ্যাক্রেলিক পেইন্ট

পাটের দড়ি

স্কেল, পেন্সিল, কম্পাস

সানব্রাস্ট মিরর তৈরিতে যা যা লাগবে

যেভাবে বানাবেন

১। প্রথমে আপনার পছন্দমতো সাইজের একটি গোল আয়না নিন। আয়নাটি কার্ডবোর্ড এ রেখে সাইজটি ট্রেস করুন। এবার এই বৃত্তটির পাশে ৩ থেকে ৪ ইঞ্চি বড় করে আরেকটি বৃত্ত আঁকুন এবং কেটে নিন। তৈরি হলো আয়নার বেইস। এই বড় বৃত্তটির মাপে আরেকটি কার্ডবোর্ড এর বৃত্ত কেটে নিন। একটি কার্ডবোর্ড এর গোল বেইসকে কম্পাস ও স্কেলের সাহায্য নিয়ে সমান চারটি ভাগে ভাগ করে দাগ দিন।

২। পেপার রোল নিলে সেক্ষেত্রে পেপার টিউব তৈরি করুন। খেয়াল রাখবেন যেন পেপার টিউবগুলো চওড়ায় সমান হয়। সাসলিকের কাঠি/পেপার টিউবগুলো ছোট ও বড় সাইজ করে কাটুন। একটি কাঠি বা পেপার টিউব ১০ ইঞ্চি নিলে আরেকটি ৭ বা ৬ ইঞ্চি করে কাটুন। চাইলে তিনটি সাইজেরও করতে পারেন।

৩। কাঠি বা পেপার টিউবগুলো স্প্রে পেইন্ট বা অ্যাক্রেলিক কালার দিয়ে রঙ করে নিন। মেটালিক লুক দিতে সিলভার বা গোল্ডেন রঙ করতে পারেন। অ্যাক্রেলিক রঙ করলে উপরে স্প্রে পেইন্ট করবেন যেন রঙটি দীর্ঘস্থায়ী হয়।

৪। প্রথমে কার্ডবোর্ডের চারটি ভাগের দাগের উপর বড় চারটি কাঠি/পেপার টিউব আঠা দিয়ে লাগিয়ে নিন। আয়নার সাইজের বৃত্তের একটু ভেতরের দিকে কাঠি/পেপার টিউবগুলো বসাবেন, যেন আয়না এর উপর বসানো যায়। প্রধান চারটি কাঠি/পেপার টিউব বসানোর পর ফাঁকা জায়গাগুলোতে একটি বড়, এরপর একটি ছোট অথবা নিজের পছন্দমতো প্যাটার্নে কাঠি/পেপার টিউবগুলোকে আঠা দিয়ে লাগিয়ে দিন।

৫। এবার আয়নাটি একটু বেশি আঠা দিয়ে মাঝে বসিয়ে দিন যেন আয়না তার ভার ধরে রাখতে পারে।

৬। প্রত্যেকটি কাঠি/পেপার টিউবের মাথায় ছোট ছোট গোল আয়না/ডলার বসিয়ে দিন। বড় কাঠি/পেপার টিউবগুলোতে নির্দিষ্ট দূরত্ব মেনে তিনটি আর ছোটগুলোতে ২টি করে আয়না/ডলার বসাবেন। আরো ঘনত্ব চাইলে এর চেয়ে বেশিও বসাতে পারেন। তাছাড়া বিভিন্ন শেইপের আয়না বা ডলারও নিতে পারেন।

আয়না ঝোলানোর উপায়

আয়নাটির পেছনে, কার্ডবোর্ড এর বেইসে পাটের দড়ি মোটা করে নিয়ে আঠা দিয়ে লাগিয়ে লুপের মত করে নিন, যেন দেয়ালে ঝোলানো যায়। আরেকটি গোল কার্ডবোর্ড নিয়ে এর উপর লাগিয়ে দিন যেন দড়িটি খুলে না আসে।

ব্যস! তৈরি হয়ে গেলো সানব্রাস্ট মিরর। আয়নার চারপাশের গোল করে পুঁথির লাইন ঘুরিয়ে লাগিয়ে দিতে পারেন, এতে করে আরো একটু গর্জিয়াস লুক আসবে এবং কাঠি/পেপার টিউবের মাথাও দেখা যাবে না। পুরো মেটালিক লুক দিতে পুঁথিগুলোকেও রঙ করে দিতে পারেন। তবে এটা বাধ্যতামূলক নয়। চাইলে আপনি পুঁথি না লাগিয়ে ফ্রেশও রাখতে পারেন।

আরও