যুদ্ধ বন্ধে সব জিম্মিকে মুক্তি দিতে ‘প্রস্তুত’ হামাস

বৃহস্পতিবার টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে হামাসের সিনিয়র নেতা ও আলোচনাকারী দলের প্রধান খলিল আল-হাইয়া জিম্মিদের মুক্তি ও যুদ্ধ বন্ধের প্রস্তাব দেন।

গাজায় স্থায়ীভাবে যুদ্ধ বন্ধ ও ইসরায়েলে বন্দি ফিলিস্তিনিদের বিনিময়ে আটক জিম্মিদের ছাড়তে প্রস্তুত হামাস। ইসরায়েলের দেয়া অন্তর্বর্তীকালীন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে এর ইতি টানতেই এমনটা জানিয়েছেন দলটির শীর্ষ এক নেতা।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে হামাসের সিনিয়র নেতা ও আলোচনাকারী দলের প্রধান খলিল আল-হাইয়া জিম্মিদের মুক্তি ও যুদ্ধ বন্ধের প্রস্তাব দেন।

তিনি বলেন, হামাস অন্তর্বর্তীকালীন কোনো চুক্তিতে সম্মত হবে না। গাজা যুদ্ধের স্থায়ী অবসান, ইসরাইল কর্তৃক বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তি এবং গাজার পুনর্গঠনের বিনিময়ে প্রতিরোধ যোদ্ধাদের হাতে আটক বাকি সব জিম্মিকে মুক্তি দিতে অবিলম্বে ‘বিস্তৃত প্যাকেজ আলোচনায় অংশ নিতে প্রস্তুত।

নেতানিয়াহু ও তার সরকার রাজনৈতিক এজেন্ডার অংশ হিসেবে গাজায় যুদ্ধ অব্যাহত রাখতে চায় বলেও অভিযোগ করেন হামাসের এই নেতা।

তিনি বলেন, স্বল্পমেয়াদী যে কোনো চুক্তি নেতানিয়াহুর গণহত্যাকে লুকিয়ে রাখার কৌশল হবে। যতদিন ফিলিস্তিনের ভূমি দখলে রাখবে ইসরাইল, ততদিন অস্ত্র হাতে রাখবে হামাস।

দীর্ঘ ১৫ মাস যুদ্ধের পর গত ১৯ জানুয়ারি কাতার, যুক্তরাষ্ট্র ও মিশরের মধ্যস্থতায় গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। এটি ছিল তিন পর্বের। প্রথম পর্বে ছিল যুদ্ধ বন্ধ ও জিম্মি-বন্দি বিনিময় শুরু করা, দ্বিতীয় পর্বে ছিল জিম্মি-বন্দি বিনিময়ের কাজ শেষ করা এবং গাজা থেকে ইসরাইলি সেনাদের সম্পূর্ণ প্রত্যাহার, তৃতীয় পর্বে ছিল যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজাকে পুনর্গঠন।

তবে ইসরাইল যুদ্ধবিরতি চুক্তির দ্বিতীয় পর্বে প্রবেশ না করে গত ১৮ মার্চ থেকে ফের গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে। ইসরাইলের ফের শুরু করা এই হামলায় দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে উপত্যকাটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

এমন পরিস্থিতিতে এ চুক্তি আবার পুনরুজ্জীবিত করতে মিশরীয় মধ্যস্থতাকারীরা কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু ইসরায়েল এবং হামাস উভয়েই একে অপরকে দোষারোপ করায় এ ব্যাপারে তেমন কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না।

জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জেমস হিউইট বলেন, হামাসের মন্তব্য প্রমাণ করে যে তারা শান্তিতে আগ্রহী নয় বরং চিরস্থায়ী সহিংসতায় আগ্রহী। ট্রাম্প প্রশাসনের দেয়া শর্তাবলীর কোনো পরিবর্তন হয়নি: জিম্মিদের মুক্তি দিন, নয়তো নরকের মুখোমুখি হোন।

এদিকে বৃহস্পতিবার গাজাজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৩৫ জন নিহত হওয়ার পর শুক্রবার সকালে খান ইউনিসের একটি বাড়িতে ইসরাইলি হামলায় ১৩ জনের একটি পরিবারের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

আরও