প্রোটিনের জটিল বিন্যাসের রহস্য ভেদ করে নোবেল জয়

১০ ডিসেম্বর আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুবার্ষিকীতে সুইডেনের স্টকহোমে বিজয়ীদের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে দেয়া হবে নোবেল পুরস্কার।

রসায়নে চলতি বছর নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিন বিজ্ঞানী—ডেভিড বেকার, ডেমিস হ্যাসাবিস ও জন এম জাম্পার। তাদের মধ্যে মার্কিন বিজ্ঞানী ডেভিড বেকারকে নোবেল দেয়া হচ্ছে একেবারে নতুন ধরনের প্রোটিনের বিন্যাস গঠনের স্বীকৃতি হিসেবে। অন্যদিকে ব্রিটিশ গবেষক ডেমিস হ্যাসাবিস ও জন এম জাম্পারকে বেছে নেয়া হয়েছে এক ধরনের জটিল প্রোটিনের সম্ভাব্য গঠন উন্মোচন করার জন্য।

সুইডেনের স্টকহোমে গতকাল এ তিন বিজ্ঞানীর নাম ঘোষণা করে দ্য রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস। বেকারের অবদান ব্যাখ্যা করতে গিয়ে নোবেল কমিটির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘প্রোটিন সাধারণত ২০ ধরনের অ্যামাইনো অ্যাসিড নিয়ে গঠিত। প্রোটিনকে প্রাণের একেকটা ব্লক বা ইট হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। ২০০৩ সালে ডেভিড বেকার এসব ব্লক ব্যবহার করে নতুন ধরনের প্রোটিনের বিন্যাস গড়তে সক্ষম হন, যা অন্য যেকোনো প্রোটিন থেকে একেবারেই আলাদা। এর পর থেকে তার নেতৃত্বাধীন গবেষকরা একের পর এক প্রোটিন তৈরি করেছেন, যেগুলো ওষুধ, টিকা, অতিক্ষুদ্র বস্তু কিংবা সেন্সর তৈরিতে ব্যবহার করা যায়।’

হ্যাসাবিস ও জাম্পারের গবেষণা সম্পর্কে নোবেল কমিটি বলছে, ‘তাদের অবদান প্রোটিনের জটিল এক ধরনের বিন্যাস উন্মোচনসংক্রান্ত। প্রোটিনে অ্যামাইনো অ্যাসিডগুলো একটির সঙ্গে আরেকটি যুক্ত থাকায় দীর্ঘ চেইনের মতো সৃষ্টি হয়, যা ভাঁজ হয়ে একটি ত্রিমাত্রিক কাঠামো তৈরি করে। এ ত্রিমাত্রিক কাঠামো প্রোটিনকে কার্যকর রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৭০-এর দশক থেকে গবেষকরা এ বিন্যাস উন্মোচনের চেষ্টা করেও সফল হতে পারেননি। সাফল্য আসে চার বছর আগে; হ্যাসাবিস ও জাম্পারের হাত ধরে।’

গত বছর রসায়নে নোবেল পান তিন মার্কিন বিজ্ঞানী মুঙ্গিয়া জি বাবেন্দি, লুইস ব্রুস ও অ্যালেক্সি একিমভ। ন্যানো টেকনোলজির গবেষণায় কোয়ান্টাম ডটস নামের অতি ক্ষুদ্র ন্যানোপার্টিকেল উদ্ভাবন ও উন্নয়নে অবদান রাখায় তাদের এ পুরস্কার দেয়া হয়।

চিকিৎসাশাস্ত্রের পুরস্কার ঘোষণার মধ্য দিয়ে সোমবার শুরু হয় এবারের নোবেল পর্ব। এবার চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পেয়েছেন দুই মার্কিন বিজ্ঞানী ভিক্টর অ্যামব্রোস ও গ্যারি রাভকুন। মাইক্রোআরএনএ আবিষ্কার এবং জিন নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে এর ভূমিকা উদ্ঘাটন করায় তাদের এ পুরস্কার দেয়া হয়। দ্বিতীয় ঘোষণা হয় পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল বিজয়ীদের নাম। কৃত্রিম নিউরাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে মেশিন লার্নিংয়ের ভিত্তি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অবদান রাখায় মার্কিন বিজ্ঞানী জন জে হোপফিল্ড এবং কানাডিয়ান বিজ্ঞানী জেফ্রি ই হিন্টন এ পুরস্কার পেয়েছেন। আজ ঘোষণা হবে সাহিত্যে নোবেল বিজয়ীর নাম। আর আগামীকাল শান্তিতে পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে। ১০ ডিসেম্বর আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুবার্ষিকীতে সুইডেনের স্টকহোমে বিজয়ীদের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে দেয়া হবে নোবেল পুরস্কার।

আরও