‘মাফ করে দিও, মা। এটা সেই পথ, যা আমি মানুষকে সাহায্য করার জন্য বেছে নিয়েছি। আর্মি এসে গেছে।‘ — এগুলোই ছিল ফিলিস্তিনি প্যারামেডিক রিফাত রাদওয়ানের শেষ মুহূর্তের ভাঙা ভাঙা গলায় আবেগঘন কথা। গত ২৩ মার্চ গাজার রাফার তেল আল-সুলতান এলাকায় ১৪ জন সহকর্মীসহ ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারান এই রিফাত রাদওয়ান। খবর মিডল ইস্ট মনিটর।
৬ মিনিট ৪২ সেকেন্ডের এক হৃদয়বিদারক ভিডিওতে পাওয়া গেছে এসব কথা। একটি গণকবর থেকে রাদওয়ানের মরদেহ পাওয়া গেলে তার মোবাইল থেকে ভিডিওটি উদ্ধার করে ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি। ইসরায়েলি বাহিনী অ্যাম্বুলেন্স ও সিভিল ডিফেন্স কর্মীদের লাশ সেখানে চুপিসারে পুঁতে রেখেছিল।
ভিডিওতে টানা পাঁচ মিনিটের বেশি সময় ধরে গুলির শব্দ শোনা যায়। অনেকে চিৎকার করছিলেন, সাহায্যের আকুতি জানাচ্ছিলেন। ভিডিওতে স্পষ্টভাবে দেখা যায়, ইসরায়েলি বাহিনী যখন বাহিনী আসে উদ্ধারকারী অনেক কর্মী তখনো জীবিত ছিলেন। এ ঘটনা প্রমাণ করে যে, তাদের সচেতনভাবে হত্যা করা হয়েছে।
ভিডিওর এক পর্যায়ে রাদওয়ান বলেন—‘হে আল্লাহ, আমাকে শহীদ হিসেবে কবুল করো। আমাকে ক্ষমা করো, আমার প্রতি দয়া করো।‘ সবশেষে, ক্ষীণ কণ্ঠে বলেন, ‘আর্মি এসে গেছে।‘
গাজা সিভিল ডিফেন্স-এর মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল জানান, নিহত কর্মীদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে ধ্বংস হওয়া অ্যাম্বুলেন্স থেকে প্রায় ২০০ মিটার দূরে। তাদের সবার পরনে ছিল উজ্জ্বল কমলা রঙের রেসকিউ ইউনিফর্ম।
কিছু মরদেহের হাত ও পা বাঁধা ছিল, মাথা ও বুকে ছিল গুলির চিহ্ন — যা কাছ থেকে গুলি করার প্রমাণ। একজন কর্মীর মাথা বিচ্ছিন্ন অবস্থায় পাওয়া যায় এবং বাকিদের মরদেহ ক্ষত-বিক্ষত করে কবর দেয়া হয়েছিল।
বাসাল বলেন, এটা কল্পনাতীত ভয়াবহতা। এটা আধুনিক ইতিহাসে নজিরবিহীন।