যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটসে অবস্থিত টাফটস বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি শিক্ষার্থী রুমেইসা ওজতুর্ক গত মঙ্গলবার রাতে তার অ্যাপার্টমেন্টের কাছ থেকে মুখোশধারী সাদা পোশাকের কর্মকর্তাদের হাতে আটক হতে দেখা গেছে। তিনি বন্ধুদের সঙ্গে ইফতার করার জন্য বের হয়েছিলেন। খবর সিএনএন।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ছয়জন কর্মকর্তা তাকে ঘিরে ফেলেন। একজন তার হাত চেপে ধরেন। অন্য একজন গোপনে রাখা ব্যাজ দেখান ও তার মোবাইল ফোন জব্দ করেন। এরপর তারা মুখ কাপড়ে ঢেকে ফেলেন। তাদের মধ্যে কয়েকজনের চোখে সানগ্লাস দেখা গেছে। এক কর্মকর্তাকে বলতে শোনা যায়, ‘আমরা পুলিশ।’ পাশে থাকা একজন তখন বলেন, ‘আপনাদের দেখে তো মনে হচ্ছে না। মুখ ঢাকছেন কেন?’
এক মিনিটের মধ্যে ওজতুর্ককে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে একটি এসইউভি গাড়িতে তুলে নেয়া হয়। তার আইনজীবীদের মতে, এরপর তাকে একাধিক রাজ্য ঘুরিয়ে সরকারি দপ্তরগুলোতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তীতে কোনো অভিযোগ ছাড়াই ১ হাজার ৫০০ মাইল দূরে লুইজিয়ানায় নিয়ে যাওয়া হয়। অথচ আটকের ছয় ঘণ্টা পরই আদালত নির্দেশ দেন যে, তাকে ৪৮ ঘণ্টার নোটিশ ছাড়া ম্যাসাচুসেটসের বাইরে পাঠানো যাবে না।
রুমেইসা ওজতুর্ককে গ্রেফতারের দৃশ্য। ছবি: এপি
লুইজিয়ানায় নিয়ে যাওয়ার পথে ওজতুর্কের হাঁপানির সমস্যা বেড়ে যায়। শুক্রবারে দায়ের করা সংশোধিত হেবিয়াস কপাস পিটিশনে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। ওই পুরো সময়ে তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ দাখিল করা হয়নি। এমনকি তাকে আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলার সুযোগও দেয়া হয়নি বলে মুখপাত্র জানিয়েছেন। বর্তমানে তিনি লুইসিয়ানার বাসিলে অবস্থিত দক্ষিণ লুইজিয়ানার আইসিই প্রসেসিং সেন্টারে আটক রয়েছেন।
জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ফিলিস্তিনপন্থী আন্দোলনের বিরুদ্ধে অভিযানের অংশ হিসেবে ওজতুর্ককে আটক করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের দাবি, ‘তিনি হামাসের পক্ষে কাজ করেছেন।’ যদিও কোনো নির্দিষ্ট অভিযোগ জানানো হয়নি। আইনজীবীরা বলছেন, তিনি ফিলিস্তিনের পক্ষে মত প্রকাশ করার কারণে অন্যায়ভাবে শাস্তির মুখে পড়েছেন।
তার আটকের ঘটনায় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে। আদালত আপাতত তার দেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া স্থগিত করেছেন। তবে তার মুক্তির দাবিতে আইনি লড়াই অব্যাহত আছে ।