তুরস্কের প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) নেতা ওজগুর ওজেল ঘোষণা করেছেন, যতদিন না আগাম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ডাকা হয় বা ইস্তানবুলের মেয়র একরেম ইমামোগলু মুক্তি পান, ততদিন দেশজুড়ে বিক্ষোভ চলবে।
ওজেল বিবিসিকে বলেন, শনিবার (২৯ মার্চ) ইস্তানবুলে এক বিশাল সমাবেশের মাধ্যমে ইমামোগলুকে ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য দলের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করা হবে। তিনি আরো বলেন, প্রতিটি শহরে আমরা আমাদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জনসমাবেশ করব।
গত সাত দিনে ইমামোগলুর গ্রেফতারের পর দেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে, যা গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড়। তবে, এ পর্যন্ত ১,৪০০ জনের বেশি মানুষ গ্রেফতার হয়েছেন—যার মধ্যে সাতজন সাংবাদিকও রয়েছেন।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান এই বিক্ষোভকে ‘সড়কের সন্ত্রাস’ বলে অভিহিত করে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশ আক্রমণ ও সরকারি সম্পদ ধ্বংসের অভিযোগ এনেছেন। তিনি দাবি করেন, বিরোধীদের এই ‘নাটক’ শেষ পর্যন্ত থেমে যাবে।
ওজেল জানান, তিনি এরইমধ্যে ইস্তানবুলের সিলিভরি কারাগারে ইমামোগলুর সঙ্গে দেখা করেছেন। ওজেল বলেন, ইমামোগলু একাকী বন্দি অবস্থায় আছেন, তবে ভালো আছেন এবং এখন পর্যন্ত কোনো দুর্ব্যবহারের শিকার হননি।
তিনি ইমামোগলুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলাকে একটি ‘ষড়যন্ত্র’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
ইমামোগলু নিজেও তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ অস্বীকার করে তার গ্রেফতারকে একটি ‘অভ্যুত্থান’ বলে বর্ণনা করেছেন। তুরস্কের সরকার আদালতকে স্বাধীন দাবি করলেও মানবাধিকার সংস্থাগুলো সে দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে।
ওজেল বলেন, এরদোয়ান তিনবার নির্বাচিত একজন জনপ্রিয় নেতাকে পুরো বিশ্বের সামনে কারাগারে পাঠিয়েছেন। এটি ঠিক যেন ফুটবল খেলায় প্রতিদ্বন্দ্বী দল জিততে থাকলে কেউ বল কেটে ফেলে।
সিএইচপি মনে করে, ইমামোগলুর মুক্তির জন্য দেশটির জনগণ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তবে ওজেল যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ও তার লেবার পার্টির নীরবতায় হতাশা প্রকাশ করে বলেন, সমগ্র ইউরোপ প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে, অথচ গণতন্ত্রের জন্মভূমি ইংল্যান্ড ও আমাদের বন্ধু দল লেবার পার্টি নিশ্চুপ! আমরা সত্যিই ব্যথিত।
তিনি আরো বলেন, ইমামোগলুকে মুক্তি দেয়া না হলে সিএইচপির যেকোনো সদস্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হবে এবং ৬৫ থেকে ৭০ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়লাভ করবে।