যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে সরাসরি আলোচনা হচ্ছে: ট্রাম্প

২০১৫ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ইরানের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছিলেন, যার আওতায় ইরান তার পারমাণবিক কার্যক্রম সীমিত করবে এবং আন্তর্জাতিক পরিদর্শকদের অনুমতি দেবে, যাতে নিশ্চিত করা যায় যে এসব সুবিধা কেবল বেসামরিক কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে, অস্ত্র তৈরিতে নয়।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান একটি সম্ভাব্য পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে ‘সরাসরি আলোচনা’ করবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী শনিবার (১২ এপ্রিল) বৈঠকটি হবে। এ বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচিও। তিনি বলেন, আলোচনা একজন মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে পরোক্ষভাবে হবে। তবে এটিকে একইসঙ্গে একটি সুযোগ এবং একটি পরীক্ষা বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। খবর বিবিসি।

ট্রাম্প বলেন, ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে আলোচনা হবে 'খুব উচ্চ পর্যায়ে' এবং কোনো চুক্তি না হলে এটি ইরানের জন্য খুব খারাপ হবে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, আলোচনা শনিবার থেকে শুরু হবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, তেহরান পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি চালাতে পারবে না।

গত মাসে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি প্রকাশ্যে সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার পর ট্রাম্প ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেয়ার সম্ভাবনার কথা তুলেছিলেন।ওভাল অফিসে বক্তব্যে ট্রাম্প বলেন, আমরা তাদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করছি এবং সম্ভবত একটি চুক্তি হবে। তিনি বলেন, চুক্তি করা অবশ্যই স্পষ্ট বিকল্প গ্রহণের চেয়ে ভালো।

তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়, যদি আলোচনায় সমঝোতা না হয় তবে ইরানের বিরুদ্ধে তিনি সামরিক পদক্ষেপ নিবেন কি না? ট্রাম্প জবাব দেন, আলোচনা সফল না হলে ইরান বিপদের মধ্যে পড়বে। এ আলোচনার অগ্রগতি বা এতে কারা অংশ নিচ্ছেন, সে বিষয়ে ট্রাম্প আর কোনও বিস্তারিত জানাননি।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশ্চিত করেছেন যে ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে আলোচনাটি ১২ এপ্রিল ওমানে অনুষ্ঠিত হবে। আব্বাস আরাকচি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, এটি যেমন একটি সুযোগ, তেমনি একটি পরীক্ষা। বল এখন আমেরিকার কোর্টে।

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ইরানের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছিলেন, যার আওতায় ইরান তার পারমাণবিক কার্যক্রম সীমিত করবে এবং আন্তর্জাতিক পরিদর্শকদের অনুমতি দেবে, যাতে নিশ্চিত করা যায় যে এসব সুবিধা কেবল বেসামরিক কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে, অস্ত্র তৈরিতে নয়। এর বিনিময়ে ইরানকে নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি দেয়ার কথা ছিল, যেগুলো তাদের অর্থনীতিকে ভেঙে দিয়েছে। এ চুক্তিতে সহ-স্বাক্ষরকারী ছিল চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া ও যুক্তরাজ্য। তবে ২০১৬ সালে ট্রাম্প একতরফাভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে ওই চুক্তি থেকে সরিয়ে নেন। তিনি তার প্রথম নির্বাচনী প্রচারণার সময় থেকেই এই চুক্তির কঠোর সমালোচক ছিলেন।

আরও