জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে হুমকির মুখে সেরেনগেটি-মাসাই মারা ইকোসিস্টেম

সেরেনগেটি-মাসাই মারা ইকোসিস্টেম পূর্ব আফ্রিকার একটি বিশাল প্রাকৃতিক এলাকা, যা তানজানিয়ার সেরেনগেটি ন্যাশনাল পার্ক এবং কেনিয়ার মাসাই মারা ন্যাশনাল রিজার্ভের সমন্বয়ে সৃষ্ট। এই ইকোসিস্টেমটি পৃথিবীর অন্যতম সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্যপূর্ণ এলাকা হিসেবে পরিচিত। এ এলাকায় রয়েছে জেব্রা, গজেল, ওয়াইল্ডবিস্টসহ বিশাল বিশাল সব তৃণভোজী প্রাণী। তবে সম্প্রতি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে এই বিশেষ ইকোসিস্টেমটি।

এই পরিবর্তন শুধুমাত্র জীববৈচিত্র্যকেই প্রভাবিত করছে, তা নয়। বরং ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে পর্যটন শিল্পও, যা স্থানীয় অর্থনীতির ওপর বড় প্রভাব ফেলছে। নতুন একটি গবেষণার বরাতে আফ্রিকা ডট কমের প্রতিবেদন বলছে, গত ৬০ বছরে সেরেনগেটি-মাসাই মারা অঞ্চলে তাপমাত্রা ৪ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বেড়ে গেছে। এর পাশাপাশি খরা ও বন্যাসহ অনিয়মিত আবহাওয়া পরিস্থিতিও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বৈশ্বিক উষ্ণায়ন এবং এল নিনো ও ভারত মহাসাগরের ডিপোলের মতো জলবায়ু পরিস্থিতি এই পরিবর্তনের জন্য দায়ী।

এ পরিবর্তনের ফলে উল্লিখিত বাস্তুতন্ত্রে বন্যপ্রাণীর সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে, প্রাণী অভিবাসন প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটছে এবং মানুষের সঙ্গে বন্যপ্রাণীর সংঘর্ষের ঘটনা বেড়ে যাচ্ছে।

খরার কারণে প্রাণীরা ক্ষুধা, পানির সংকট ইত্যাদির মুখোমুখি হচ্ছে। অন্যদিকে বন্যা প্রাণীর বাসস্থান ধ্বংস করে অসংখ্য মৃত্যু ঘটাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে ইকোসিস্টেমের ভেতরে বন্যপ্রাণীর সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে, যা দীর্ঘমেয়াদে জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জে রূপ নিতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

এছাড়া, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এই ইকোসিস্টেমের ওপর নির্ভরশীল স্থানীয় জনগোষ্ঠী এবং পর্যটন শিল্পও ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। বন্যপ্রাণী সংখ্যা হ্রাস এবং পরিবেশগত বিপর্যয় প্রভাব ফেলছে পর্যটকদের আগমনেও, যা স্থানীয় অর্থনীতির জন্য উদ্বেগজনক।

জলবায়ু পরিবর্তনের এসব প্রভাব মোকাবেলায় দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া জরুরি বলছেন প্রকৃতি প্রেমীরা। তারা বলছেন, সেরেনগেটি-মাসাই মারা ইকোসিস্টেম এবং এর জীববৈচিত্র্য সুরক্ষিত রাখতে এর বিকল্প নেই।

আরও