করাচি বিমানবন্দরের কাছে বিস্ফোরণে দুই চীনা নাগরিক নিহত

পাকিস্তানে অবস্থিত চীনা দূতাবাস এই ঘটনাকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ বলে অভিহিত করেছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনা নাগরিকদের ওপর হামলা চালানো বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। আজ সোমবার (৭ অক্টোবর) প্রকাশিত এক বিবৃতিতে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি জানিয়েছে যে, করাচি বিমানবন্দর থেকে আসা চীনা প্রকৌশলী এবং বিনিয়োগকারীদের একটি উচ্চ-পর্যায়ের কনভয়কে লক্ষ্যবস্তু করেছিল তারা।

পাকিস্তানের করাচির জিন্নাহ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে এক বিস্ফোরণে দুই চীনা নাগরিক নিহত এবং কমপক্ষে দশজন আহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় গতকাল রোববার (৬ অক্টোবর) রাত ১১টায় এ বিস্ফোরণ ঘটে। খবর বিবিসি।

পাকিস্তানে অবস্থিত চীনা দূতাবাস এই ঘটনাকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ বলে অভিহিত করে জানিয়েছে যে, এই ঘটনায় কিছু স্থানীয় হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। দূতাবাস আরো জানিয়েছে যে, বিস্ফোরণটি সিন্ধু প্রদেশে একটি বিদ্যুৎ প্রকল্পে কর্মরত চীনা প্রকৌশলীদের একটি কনভয়কে লক্ষ্য করে ঘটানো হয়েছিল।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনা নাগরিকদের ওপর হামলা চালানো বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। আজ সোমবার (৭ অক্টোবর) প্রকাশিত এক বিবৃতিতে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি জানিয়েছে যে, করাচি বিমানবন্দর থেকে আসা চীনা প্রকৌশলী এবং বিনিয়োগকারীদের একটি উচ্চ-পর্যায়ের কনভয়কে লক্ষ্যবস্তু করেছিল তারা।

গোষ্ঠীটি পরে আরো জানিয়েছে যে, এটি ছিল একটি আত্মঘাতী হামলা এবং হামলাকারীর নাম শাহ ফাহাদ, যিনি বিএলএর মজিদ ব্রিগেডের একজন আত্মঘাতী স্কোয়াড সদস্য। বিএলএর বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, গাড়িতে বহন করা ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) ব্যবহার করে হামলাটি করা হয়েছিল।

চীনা দূতাবাস জানিয়েছে, প্রকৌশলীরা চীনের অর্থায়নে পরিচালিত পোর্ট কাসিম পাওয়ার জেনারেশন কোং লিমিটেড-এর কর্মী, যারা করাচির কাছে পোর্ট কাসিমে দুটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের কাজ করছেন। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডরের (সিপিইসি) অংশ, যা পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে কয়েকটি অবকাঠামো ও জ্বালানি প্রকল্পের জন্য অর্থায়ন করছে।

চীনা দূতাবাস তাদের নাগরিক এবং চীনা কোম্পানিগুলোকে সতর্ক থাকতে এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোরভাবে পালনের তাগিদ দিয়েছে। দূতাবাস আরো জানিয়েছে যে, তারা হামলাটির বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত করবে এবং হত্যাকারীকে কঠোর শাস্তি প্রদান করবে।

পাকিস্তান বর্তমানে সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) নেতৃবৃন্দের শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তার মাঝেই এই বিস্ফোরণে নিরাপত্তা আরো বাড়ানো হয়েছে।

বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে শহরের বিভিন্ন এলাকায়। স্থানীয় গণমাধ্যমের ফুটেজে ঘন ধোঁয়া ও আগুনে পুড়ে যাওয়া গাড়ি দেখা গেছে। সিন্ধুর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জিয়াউল হাসান লাঞ্জার বলেছেন যে, বিস্ফোরণটি সম্ভবত একটি সন্দেহজনক আইইডি দ্বারা ঘটানো হয়েছে।

অনলাইনে প্রকাশিত ছবিতে নিরাপত্তা কর্মী এবং অগ্নিনির্বাপণকর্মীরা বিস্ফোরণস্থল পরীক্ষা করতে দেখা গেছে, যেখানে বেশ কয়েকটি যানবাহন বিস্ফোরণে পুড়ে গেছে।

জিন্নাহ পোস্টগ্র্যাজুয়েট মেডিকেল কলেজের পুলিশ সার্জন ড. সুমাইয়া পাকিস্তানের গণমাধ্যম ডনকে জানান, আহত দশজনকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। এর মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর। তিনি আরো জানান, আহতদের মধ্যে একজন পুলিশ কনস্টেবল এবং একজন নারী রয়েছেন।

এই হামলার পর জিন্নাহ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দিকে যাওয়া সড়কগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। তবে বিমানবন্দরটি আজ স্বাভাবিকভাবে চালু রয়েছে।

আরও