মৌসুমি ফ্লু বা ঠাণ্ডা-কাশিজনিত রোগ
শীতকালে খুবই সাধারণ বিষয়। তবে এ ধরনের অসুখ দীর্ঘমেয়াদে গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকির দিকে
নিয়ে যেতে পারে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
দ্য গার্ডিয়ানে এ সম্পর্কিত প্রতিবেদনে
বলা হয়, ফ্লু আক্রান্ত হয়ে যারা হাসপাতাল ভর্তি হয়েছেন তারা দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্য
ঝুঁকিতে থাকেন। তাদের অবস্থা অনেকটা লং কভিড বা দীর্ঘমেয়াদি কভিড আক্রান্তদের মতো।
এ গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন মিসৌরির
ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিকাল এপিডেমিওলজিস্ট ডা. জিয়াদ আল-আলী।
গবেষণায় বলা হয়, দীর্ঘমেয়াদি ফ্লুর
লক্ষণগুলো কভিডের তুলনায় ফুসফুসকে বেশি আক্রান্ত করে। উভয় ক্ষেত্রেই প্রথম ৩০ দিনের
তুলনায় সংক্রমণের পরের মাসগুলোতে স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে যায়। ওই সময়ে মৃত্যু ও শারিরীক
দুর্বলতার ঝুঁকি বেশি থাকে। তখন দীর্ঘ ফ্লুর লক্ষণগুলো ফুসফুসে কেন্দ্রীভূত হওয়ার
আশঙ্কা বেশি থাকে। এর মধ্যে রয়েছে কভিড রোগীদের তুলনায় বেশি শ্বাসকষ্ট বা কাশি। এছাড়া
ক্লান্তি, কার্ডিওভাসকুলার, গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ও স্নায়বিক সমস্যার লক্ষণ দেখা
দিতে পারে। পরবর্তী মাসগুলোতে যা অন্যান্য অঙ্গে প্রভাব ফেলে।
ডা. জিয়াদ বলেন, এটি সুস্পষ্ট যে সাধারণ
ফ্লুর চেয়ে দীর্ঘমেয়াদি ফ্লু খারাপ। আর কভিডের চেয়ে খারাপ দীর্ঘমেয়াদি কভিড।
কভিড থেকে সুস্থ হওয়া ব্যক্তিদের দীর্ঘমেয়াদি
অসুস্থতার হার পর্যবেক্ষণ করে গবেষণাটি পরিচালিত হয়। গবেষণার জন্য ডা. জিয়াদ ও তার
সহকর্মীরা কভিড নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন এমন ৮১ হাজার ২৮০ জন রোগীর মেডিকেল রিপোর্ট
বিশ্লেষণ করেন। এছাড়া মৌসুমি ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নেয়া ১০ হাজার ৯৮৫
জনের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করেন তারা। সেখানে ভিন্ন ভিন্ন অঙ্গ সংস্থানের ৯৪টি স্বাস্থ্য
সমস্যার তথ্য পাওয়া যায়। আর গবেষণার মেয়াদ ছিল প্রায় ১৮ মাস।
ল্যানসেটের সংক্রামক রোগ বিষয়ক সাময়িকীতে
প্রকাশিত এ গবেষণায় দেখা যায়, কভিড রোগীরা পরবর্তী ১৮ মাসে মৃত্যু বা হাসপাতালে ভর্তি
হওয়ার ঝুঁকির মুখোমুখি হলেও উভয় সংক্রমণই শারীরিক অক্ষমতা ও রোগের উল্লেখযোগ্য ঝুঁকি
বহন করে।
জিয়াদ আল-আলী বলেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ
বিষয় হলো হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার মতো ঝুঁকি কমানোর চেষ্টা করা। এটি টিকা দেয়ার মাধ্যমে
হতে পারে। এছাড়া কভিডের ক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা রাখে অ্যান্টিভাইরাল ঔষধ।