পশ্চিম তীরে অবৈধ ইসরায়েলি বসতির বিজ্ঞাপন দিয়ে লাভ করছে মেটা

এই বিজ্ঞাপনগুলোর মধ্যে ফিলিস্তিনি বাড়িঘর, স্কুল ও খেলার মাঠ ধ্বংস এবং গাজায় মোতায়েন ইসরায়েলি সামরিক ইউনিটের জন্য তহবিল সংগ্রহের আহ্বানও ছিল।

ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের অবৈধ ইসরায়েলি বসতি এবং চরমপন্থী বসতি স্থাপনকারীদের কর্মকাণ্ড সংক্রান্ত ১০০টিরও বেশি পেইড বিজ্ঞাপন প্রচার করেছে ফেসবুক। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। আল জাজিরার এক তদন্তে এ তথ্য উঠে এসেছে।

এই বিজ্ঞাপনগুলোর মধ্যে ফিলিস্তিনি বাড়িঘর, স্কুল ও খেলার মাঠ ধ্বংস এবং গাজায় মোতায়েন ইসরায়েলি সামরিক ইউনিটের জন্য তহবিল সংগ্রহের আহ্বানও ছিল।

ফেসবুকের মূল কোম্পানি মেটা জানিয়েছে, তারা সব বিজ্ঞাপন পর্যালোচনা করে থাকে। কিছু বিজ্ঞাপন তাদের নীতিমালার লঙ্ঘনের কারণে সরানো হলেও মেটা স্পষ্ট করেনি যে, অবৈধ বসতির প্রচার তাদের নীতির লঙ্ঘন কি না।

ব্রিটিশ সংসদ সদস্য ব্রায়ান লেইশম্যান এই অনুসন্ধানে প্রাপ্ত তথ্যকে ‘অত্যন্ত উদ্বেগজনক’ বলে উল্লেখ করেছেন। আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বিজ্ঞাপনগুলো অনুমোদন ও প্রচার করে মেটা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনে সহযোগিতা করছে।

৫২টি বিজ্ঞাপনে পশ্চিম তীরের বিভিন্ন অবৈধ বসতিতে সম্পত্তি বিক্রির প্রচারণা ছিল। এর মধ্যে অন্তত চারটি বিজ্ঞাপন ছিল দখলকৃত পশ্চিম তীরের গ্রিন লাইনের ২০ কিলোমিটার (১২ মাইল) পূর্বে অবস্থিত অবৈধ ইসরায়েলি বসতি আরিয়েলে সম্পত্তি বিক্রির জন্য, যেখানে ‘উন্নত জীবনযাত্রার’ প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে।

এছাড়া, গাবাই রিয়েল এস্টেট নামের একটি প্রতিষ্ঠান মালে আদুমিম এবং এফরাত বসতির জন্য ৪৮টি বিজ্ঞাপন প্রকাশ করেছে। ২০২৪ সালের মার্চে ইসরায়েলের উগ্র ডানপন্থী অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোটরিচের অনুমোদনে শুরু হয় এই বসতি সম্প্রসারণ।

আল জাজিরা ৫০টি বিজ্ঞাপন চিহ্নিত করেছে, যা পরিচালনা করেছে উগ্রপন্থী বসতি স্থাপনকারী সংগঠন রেগাভিম। এসব বিজ্ঞাপনে ফিলিস্তিনি স্কুল ও পার্ক ধ্বংসের দাবি জানানো হয়েছে। একটি বিজ্ঞাপন গর্ব করে বলেছে— আমাদের আবেদনের পর অবৈধ ফিলিস্তিনি স্কুলটি গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে।

আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মেটা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে লাভবান হচ্ছে। অধ্যাপক নেভ গর্ডন বলেন, ফেসবুক এইসব বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডকে বৈধতা দিচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও রোম নীতি অনুসারে গুরুতর অপরাধ।

ব্রিটিশ সংসদ সদস্য লেইশম্যান বলেন, সোশ্যাল মিডিয়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের প্ল্যাটফর্মে কী প্রচারের অনুমতি দিচ্ছে, সে সম্পর্কে আরো সচেতন হতে হবে। তাদের উচিত আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অংশ না হওয়া।

আরও