হুথিদের বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণ আরো কঠোর পদক্ষেপের সতর্কবার্তা বাইডেনের

ইয়েমেনের বিভিন্ন অংশে ইরান সমর্থিত হুথিদের লক্ষ্য করে পাল্টা আক্রমণ শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সেনাবাহিনী।

ইয়েমেনের বিভিন্ন অংশে ইরান সমর্থিত হুথিদের লক্ষ্য করে পাল্টা আক্রমণ শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সেনাবাহিনী। সম্প্রতি দেয়া এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের অধিবাসীদের সুরক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। খবর এপি।

প্রতিশোধমূলক আক্রমণের অংশ হিসেবে যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণ করা টমাহক মিসাইল ও ফাইটার জেটের মাধ্যমে আক্রমণ পরিচালনা করছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সেনাবাহিনী। সম্প্রতি মার্কিন সেনা কর্মকর্তা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। 

এক বিবৃতিতে বাইডেন জানান, লোহিত সাগরে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পণ্য বহনকারী জাহাজগুলোয় হুথিরা আক্রমণ চালিয়ে আসছে। এর সরাসরি প্রতিক্রিয়া হিসেবে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো জাহাজবিরোধী ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারসহ পাল্টা হামলা চালানো হচ্ছে। তিনি আরো জানান, হুথিদের আক্রমণের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মী ও বেসামরিক নাবিকদের জীবন বিপন্ন হয়েছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বাণিজ্যেও বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। তিনি আরো জানান, অধিবাসীদের সুরক্ষা নিশ্চিতের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাণিজ্য প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রাখতে যুক্তরাষ্ট্র ভবিষ্যতে যেকোনো প্রকার পদক্ষেপ গ্রহণে পিছপা হবে না।

ইউএস এয়ার ফোর্সের মিডইস্ট কমান্ড জানায়, ইয়েমেনের ১৬ স্থানের ৬০টি অংশকে লক্ষ্যবস্তু করে হামলা চালানো হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে কমান্ড-অ্যান্ড-কন্ট্রোল নোড, যুদ্ধাস্ত্র ডিপো, লঞ্চিং সিস্টেম, উৎপাদন কেন্দ্র ও উড়োজাহাজের প্রতিরক্ষায় ব্যবহৃত রাডার সিস্টেম। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ‘এ হামলার উদ্দেশ্য ছিল এটা দেখানো যে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা লোহিত সাগরে জঙ্গি গোষ্ঠীর আক্রমণকে সহ্য করবে না।’ তিনি জানান, কূটনৈতিকসহ সতর্কতার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালানোর পরই এ আক্রমণ করা হয়েছে।

অন্যদিকে হোদিদার দুই বাসিন্দা জানান, তারা শহরের পশ্চিম বন্দর এলাকায় পাঁচটি শক্তিশালী বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। অঞ্চলটি লোহিত সাগরের তীরবর্তী ও হুথিদের নিয়ন্ত্রণে থাকা সবচেয়ে বড় বন্দর শহর। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তারা সানার দক্ষিণে তাইজ ও ধামার শহরগুলোয়ও হামলা হতে দেখেছেন। ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরুর পর থেকে বাণিজ্যিক জাহাজে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ক্রমাগত প্রচারণার একটি অংশ এ আক্রমণ। এছাড়া হামলা বন্ধে হুথিদের সবশেষ সতর্কবার্তা জানানোর পর হোয়াইট হাউজ ও সহযোগীরা পাল্টা আক্রমণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

অন্যদিকে গত সপ্তাহে হুথি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে যাতায়াত করা বিভিন্ন জাহাজকে লক্ষ্য করে বৃহত্তম ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে বলে জানা গেছে। মার্কিন ও ব্রিটিশ জাহাজ এবং আমেরিকান ফাইটার জেট পাল্টা আক্রমণের মাধ্যমে ১৮টি ড্রোন, দুটি ক্রুজ মিসাইল ও একটি অ্যান্টি-শিপ মিসাইল ধ্বংস করে দিয়েছে বলে সূত্রে জানা গেছে। গত সপ্তাহের শেষ দিকে হুথিরা এডেন উপসাগরে একটি অ্যান্টি-শিপ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল। একটি বাণিজ্যিক জাহাজ মিসাইলটি দেখলেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।

পৃথক এক বিবৃতিতে, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক জানান, হুথিদের ব্যবহৃত সামরিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে রয়্যাল এয়ার ফোর্স। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, সাইপ্রাসভিত্তিক চারটি যুদ্ধবিমান এ হামলায় অংশ নিয়েছে।

আরও