কঙ্গো সংঘাতের জন্য দায়ী কে?

কঙ্গোর প্রেসিডেন্ট ফেলিক্স শিসেকেদি পূর্বাঞ্চলের বৃহত্তম শহর গোমাসহ হারানো অঞ্চল পুনরুদ্ধার করতে এবং এম২৩ বিদ্রোহীদের অগ্রসর হওয়া ঠেকাতে চান। তিনি রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট পল কাগামেকে বিদ্রোহী গোষ্ঠীটিকে সমর্থন দিয়ে কঙ্গোর খনিজ লুট ও সরকার পরিবর্তনের চেষ্টা করার জন্য দায়ী করেন।

মধ্য আফ্রিকার দেশ গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের খনিজসমৃদ্ধ পূর্বাঞ্চলের বিশাল এলাকা দখল করেছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী মার্চ ২৩ মুভমেন্ট (এম২৩)। এতে বড় মানবিক ও কূটনৈতিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে। কারণ প্রতিবেশী দেশগুলোও এতে জড়িয়ে পড়েছে। বাইরের শক্তির হস্তক্ষেপের দীর্ঘ ইতিহাস থাকা সংঘাতপূর্ণ এলাকাটিতে এরই মধ্যে আফ্রিকান সেনাবাহিনীর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। যথেষ্ট বড় দেশটি পূর্ব ও দক্ষিণ আফ্রিকার আঞ্চলিক গোষ্ঠীর সদস্য। এ গোষ্ঠীগুলো একসঙ্গে অঞ্চলটিতে সংঘাত থামানোর পদক্ষেপ নিচ্ছে। খবর বিবিসি।

কঙ্গোর প্রেসিডেন্ট ফেলিক্স শিসেকেদি পূর্বাঞ্চলের বৃহত্তম শহর গোমাসহ হারানো অঞ্চল পুনরুদ্ধার করতে এবং এম২৩ বিদ্রোহীদের অগ্রসর হওয়া ঠেকাতে চান। তিনি রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট পল কাগামেকে বিদ্রোহী গোষ্ঠীটিকে সমর্থন দিয়ে কঙ্গোর খনিজ লুট ও সরকার পরিবর্তনের চেষ্টা করার জন্য দায়ী করেন। জাতিসংঘের প্রতিবেদন এ অভিযোগ সমর্থন করলেও কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। শিসেকেদি রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সেনা অভ্যুত্থানের আশঙ্কা করছেন।

পল কাগামে এম২৩-কে সমর্থনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে তিনি রুয়ান্ডা রক্ষা করার কথা বলেছেন। তার দাবি, কঙ্গোর সেনাবাহিনী হুথি বিদ্রোহীদের সহায়তা করছে, যারা রুয়ান্ডাকে হুমকি দিচ্ছে ও কঙ্গোর টুটসিদের লক্ষ্য করছে। রুয়ান্ডা পূর্ব কঙ্গোতে প্রভাব বজায় রাখতে চায়, যেখানে খনিজ সম্পদের কারণে সংঘাত উসকে দেয়া হচ্ছে। কাগামে শিসেকেদির ওপর চাপ সৃষ্টি করে কঙ্গোকে উত্তর কিভু অঞ্চল ছাড় দিতে বাধ্য করতে চান।

রুয়ান্ডা পূর্ব কঙ্গোতে বুরুন্ডির সেনাবাহিনীকে হুমকি হিসেবে দেখছে, কারণ দেশটি এম২৩-এর বিরুদ্ধে কিনশাসাকে সমর্থন করছে। দুই দেশই পরস্পরকে সরকার উৎখাতের চেষ্টার অভিযোগ করছে। বুরুন্ডি আশঙ্কা করছে যে দক্ষিণ কিভুতে রুয়ান্ডার প্রভাব বাড়লে তাদের সরকার অস্থিতিশীল হয়ে পড়বে। যদি সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে, তবে এটি বড় ধরনের আঞ্চলিক যুদ্ধে রূপ নিতে পারে।

উগান্ডার সেনাবাহিনী পূর্ব কঙ্গোতে ইসলামী সশস্ত্র গোষ্ঠীদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। তবে তাদের বিরুদ্ধে এম২৩-কে গোপনে সহায়তা করার অভিযোগ রয়েছে, যেমন তাদের এলাকা ব্যবহার করার অনুমতি দেয়া। উগান্ডা এটি অস্বীকার করলেও প্রতিরক্ষামূলকভাবে সৈন্য মোতায়েন করেছে। রুয়ান্ডার মতো উগান্ডাও সম্পদ লুটপাটের অভিযোগের মুখে এবং কঙ্গোতে নিজেদের প্রভাব বজায় রাখতে চায়।

দক্ষিণ আফ্রিকা দক্ষিণ আফ্রিকান আঞ্চলিক বাহিনীর নেতৃত্ব দিচ্ছে, যা কঙ্গোর সেনাবাহিনীর সঙ্গে লড়াই করছে। তবে তারা বড় ধরনের ক্ষতির শিকার হয়েছে। উত্তেজনা বেড়ে যায় যখন দক্ষিণ আফ্রিকা রুয়ান্ডাকে তাদের ১৪ সেনার মৃত্যুর জন্য দায়ী করে। পাশাপাশি দেশটির প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা রুয়ান্ডার সেনাবাহিনীকে ‘মিলিশিয়া’ বলে অভিহিত করেছেন। কাগামে এটি অস্বীকার করে এবং দক্ষিণ আফ্রিকাকে কঙ্গো ছাড়ার দাবি জানান। এতে বিভাজন স্পষ্ট হয় পূর্ব আফ্রিকান দেশগুলো এম২৩-এর সঙ্গে কঙ্গোর আলোচনার পক্ষে, আর দক্ষিণ আফ্রিকান দেশগুলো রুয়ান্ডার হামলার নিন্দা জানিয়ে কঙ্গোর সার্বভৌমত্বকে সমর্থন করছে।

আরও