ইমানুয়েল মাখোঁ

কয়েক মাসের মধ্যে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে ফ্রান্স

ফ্রান্স দীর্ঘদিন ধরেই দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানকে সমর্থন করে আসছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের দ্বারা চালানো হামলার পরও ফ্রান্স এই নীতিতে অটল রয়েছে।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ জানিয়েছেন, তার দেশ আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে পারে। জাতিসংঘের উদ্যোগে অনুষ্ঠিতব্য ইসরায়েল-ফিলিস্তিন ইস্যুতে এক সম্মেলনের সময় চূড়ান্ত হতে পারে এই স্বীকৃতি। আগামী জুনে সৌদি আরবের সঙ্গে যৌথভাবে সম্মেলনটি আয়োজন করবে ফ্রান্স। খবর আল জাজিরা।

ফ্রান্স ৫ টেলিভিশনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মাখোঁ বলেন, ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতির পথে এগিয়ে যাব আমরা এবং তা আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই হবে। আমি এটা কাউকে খুশি করার জন্য করছি না। এই সিদ্ধান্তের কারণ হলো—একসময় এটা করাটাই সঠিক হবে।

মাখোঁর এই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রী ভারসেন আঘাবেকিয়ান শাহিন ফরাসি সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেন, ফ্রান্সের এই স্বীকৃতি ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার এবং দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের পক্ষে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ।

তবে ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিয়ন সার এই উদ্যোগের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, একতরফাভাবে একটি কাল্পনিক ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়া হবে সন্ত্রাসবাদের পুরস্কার এবং হামাসের জন্য উৎসাহ। তিনি আরো বলেন, এ ধরনের পদক্ষেপ মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা আনবে না—বরং তা আরো ঠেলে দেবে।

বর্তমানে জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্য দেশের মধ্যে ১৪৬টি দেশ ফিলিস্তিনকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। ২০২৩ সালে আর্মেনিয়া, স্লোভেনিয়া, আয়ারল্যান্ড, নরওয়ে, স্পেন, বাহামা, ট্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো, জ্যামাইকা ও বারবাডোস এই তালিকায় যুক্ত হয়।

তবে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া ও জার্মানি—এই চারটি বড় পশ্চিমা দেশ এখনো ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি।

মাখোঁ বলেন, এই স্বীকৃতির মাধ্যমে ফ্রান্স একইসঙ্গে ইসরায়েলের অস্তিত্বকে অস্বীকারকারীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে পারবে, বিশেষ করে ইরানের মতো রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই পদক্ষেপ মধ্যপ্রাচ্যের কিছু রাষ্ট্রকে ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়ার পথে এগিয়ে দেবে। বর্তমানে সৌদি আরব, ইরান, ইরাক, সিরিয়া ও ইয়েমেন ইসরায়েলকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি।

ফ্রান্স দীর্ঘদিন ধরেই দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানকে সমর্থন করে আসছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের দ্বারা চালানো হামলার পরও ফ্রান্স এই নীতিতে অটল রয়েছে। তবে ফিলিস্তিনকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়া হবে দেশটির পররাষ্ট্রনীতিতে একটি বড় পরিবর্তন—যা ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে।

সম্প্রতি মিসরে এক সফরের সময় প্রেসিডেন্ট মাখোঁ মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি এবং জর্ডানের রাজা আব্দুল্লাহর সঙ্গে বৈঠকে গাজা এবং দখলকৃত পশ্চিম তীরে যেকোনো ধরনের দখল বা বাস্তুচ্যুতি পরিকল্পনার বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান জানান।

আরও