বাংলাদেশ পরিস্থিতি

আসামের সীমান্তবর্তী ৪ জেলায় বিশেষ সামরিক আইনের মেয়াদ বাড়ল

ভারতের সেনাবাহিনীর আসাম কমান্ডের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘প্রতিবেশী বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের কারণে আসামের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোয় অনুপ্রবেশকারীদের অধিক হারে প্রবেশের আশঙ্কা এবং এর জেরে রাজ্যজুড়ে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী আসামের চার জেলায় একটি বিশেষ সামরিক আইনের মেয়াদ আরো ছয় মাস বাড়ানো হয়েছে। ‘আর্মড ফোর্সেস (স্পেশাল পাওয়ারস) অ্যাক্ট’ বা এএফএসপিএ নামের ওই আইনের মেয়াদ বাড়িয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনীর আসাম কমান্ড। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আমলে নিয়ে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে। এ জেলাগুলো হলো তিনসুকিয়া, ডিব্রুগড়, চড়াইদেও ও শিবসাগর।

এ আইন জারির ফলে ভারতের সামরিক ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা এ চার জেলার যেকোনো জায়গায় অভিযান চালিয়ে যেকোনো ব্যক্তিকে গ্রেফতার করতে পারবেন। এক্ষেত্রে কোনো আদেশ বা গ্রেফতারি পরোয়ানার দরকার হবে না তাদের।

ভারতের সেনাবাহিনীর আসাম কমান্ডের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘প্রতিবেশী বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের কারণে আসামের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোয় অনুপ্রবেশকারীদের অধিক হারে প্রবেশের আশঙ্কা এবং এর জেরে রাজ্যজুড়ে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তাই সার্বিক দিক বিবেচনা করে চার সীমান্তবর্তী জেলা তিনসুকিয়া, ডিব্রুগড়, চড়াইদেও ও শিবসাগরে এএফএসপিএ আরো ছয় মাস কার্যকর রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আসাম কমান্ড।’ ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের ভিত্তিতে এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিচ্ছিন্নতাবাদীদের তৎপরতা বন্ধে ১৯৯০ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে আসামে এএফএসপিএ জারি করা হয়েছে। ছয় মাস পরপর এ নির্দেশনা পুনর্বিবেচনা করা হয়। সর্বশেষ গত বছর অক্টোবরে আসামের জোরহাট, গোলাঘাট, করবি আঙলং, দিমা হাসাও, তিনসুকিয়া, ডিব্রুগড়, চড়াইদেও ও শিবসাগরে জারি করা হয়েছিল এ বিশেষ সামরিক আইনটি। সম্প্রতি জোরহাট, গোলাঘাট, করবি আঙলং এবং দিমা হাসাও থেকে আইনটি তুলে নেয়া হয়েছে। তবে ১ অক্টোবর থেকে বাকি চার জেলায় বিশেষ আইন বহাল রাখা হয়েছে।

উল্লেখ্য, সুশীল সমাজ ও মানবাধিকার কর্মীরা বরাবরই আইনটির বিরোধিতা করে আসছেন। এটিকে কঠোর"আইন বলে চিহ্নিত করা হচ্ছে। এ অঞ্চলে সশস্ত্র বাহিনীর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য এ আইনের দিকে ইঙ্গিত করা হয়। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে নাগাল্যান্ডের মন জেলায় একটি মর্মান্তিক ঘটনার পর এ আইন প্রত্যাহারের দাবি আরো তীব্র হয়েছিল। ওই সময় একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযানের সময় ১৪ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়। এ নিয়ে ব্যাপক বিক্ষোভ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটে।

আরও