মিয়ানমারের জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন আঞ্চলিক মিলিশিয়াগুলোর প্রতিরোধ ক্রমে জোরদার হয়ে উঠছে। সম্প্রতি সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোয় কাচিন ইনডিপেনডেন্স আর্মি (কেআইএ), কারেন ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (কেএনএলএ) ও ম্যান্ডালেভিত্তিক পিপলস ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ) একযোগে জান্তা ঘাঁটিগুলোয় আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে প্রায়ই বিভিন্ন কৌশলগত এলাকার নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে সেনাবাহিনী।
বৃহস্পতিবার চীন সীমান্তের কাছাকাছি কানপিকেটি এলাকায় জান্তা সমর্থিত বাহিনীর ওপর হামলা চালায় কেআইএ। ওই হামলায় দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিএফের একটি ব্যাটালিয়নের সদর দপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট এলাকা দখল করে নেয় তারা। এলাকাটি চীনের সঙ্গে বাণিজ্য রুট হওয়ায় কৌশলগতভাবেও গুরুত্বপূর্ণ। দখলে নেয়ার পর রুটটি পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে কেআইএ।
কেআইএ মুখপাত্র কর্নেল নও বু স্থানীয় সংবাদমাধ্যম দি ইরাওয়াদ্দিকে বলেন, ‘কেআইএর এ আক্রমণ কাচিন স্টেট স্পেশাল রিজিয়নে তাদের নিয়ন্ত্রণ জোরদার করেছে। তবে যুদ্ধের অগ্রগতি বিষয়ে আমার কাছে এ মুহূর্তে দেয়ার মতো কোনো তথ্য নেই।’
এদিকে বৃহস্পতিবার থাইল্যান্ড সীমান্তের কাছে মিয়াওয়াড্ডি টাউনশিপ এলাকার একটি কৌশলগত জান্তা ঘাঁটি দখল করেছে কারেন রাজ্যভিত্তিক মিলিশিয়া কেএনএলএ। তাদের হামলায় এলাকাটি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে জান্তা সেনারা। থাই সীমান্তবর্তী এ বাণিজ্যকেন্দ্রিক এলাকাও কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
এছাড়া মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর ম্যান্ডালেতেও জান্তা বাহিনীর সঙ্গে স্থানীয় মিলিশিয়া পিডিএফের ব্যাপক সংঘর্ষ চলছে। চলতি বছরের জুলাই থেকেই মাদায়া টাউনশিপের অন্তত ৩৫টি জান্তা ঘাঁটি দখলে নিয়েছে পিডিএফ। এর মধ্যে এয়ার ডিফেন্স ব্যাটালিয়নসহ গুরুত্বপূর্ণ সেনাঘাঁটিও রয়েছে। অবশ্য পিডিএফের মুখপাত্র কো অসমন্ড বরেন, ‘জান্তা সরকার বিপুল সৈন্য ও বিমান নিয়ে এলাকাগুলো পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছে। তারা একযোগে আর্টিলারি, স্থল ও বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে, তবে এখনো জায়গাগুলো আমাদের দখলেই রয়েছে।’
এলাকাগুলো পুনরুদ্ধারের জন্য জান্তাদের চালানো হামলায় অসংখ্য বেসামরিক মানুষ হতাহত হয়েছে। এছাড়া প্রায় ১০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে বিভিন্ন ক্যাম্পে।
কাচিন, কারেন ও ম্যান্ডালে এলাকায় মিলিশিয়াগুলোর সম্মিলিত আক্রমণ জান্তা সরকারের নিয়ন্ত্রণকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। একের পর এক কৌশলগত ঘাঁটি দখল করে নিয়ন্ত্রণে রাখছে তারা। ফলে এলাকাগুলো পুনরুদ্ধার করতে গিয়ে ব্যাপক প্রতিরোধের সম্মুখীন হতে হচ্ছে জান্তা সরকারকে।