ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা

জেলেনস্কির দাবি, যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরুর আগেই পুতিন কঠিন ও অগ্রহণযোগ্য শর্ত জুড়ে দিচ্ছেন, যা কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ করতে পারে। অন্যদিকে বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে পুতিন যুদ্ধবিরতির পক্ষে মত প্রকাশ করলেও একাধিক শর্ত ও শঙ্কার কথা তুলে ধরেন।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতির কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ করার অভিযোগ এনেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে রাশিয়ার ওপর চাপ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে মার্কিন শক্তিই এ যুদ্ধের অবসান ঘটাতে পারে বলে মন্তব্য করেন। এতে যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা এখনো অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। খবর বিবিসি।

জেলেনস্কির দাবি, যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরুর আগেই পুতিন কঠিন ও অগ্রহণযোগ্য শর্ত জুড়ে দিচ্ছেন, যা কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ করতে পারে। অন্যদিকে বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে পুতিন যুদ্ধবিরতির পক্ষে মত প্রকাশ করলেও একাধিক শর্ত ও শঙ্কার কথা তুলে ধরেন।

ছয় মাস আগে রাশিয়ার কুর্স্ক অঞ্চল দখল করে ইউক্রেন। বর্তমানে রুশ বাহিনী অঞ্চলটি পুনরুদ্ধার করছে। সংবাদ সম্মেলনে কুর্স্ক অঞ্চল সম্পর্কে কথা বলেন পুতিন। তিনি ইউক্রেনীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ আনেন। যদিও কিয়েভ তা অস্বীকার করেছে। যারা অপরাধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তাদের শাস্তি দেয়া হবে নাকি তারা মুক্ত থাকবে সে বিষয়ে প্রশ্ন করেন। পাশাপাশি যুদ্ধবিরতির সুযোগ নিয়ে ইউক্রেন তাদের সামরিক শক্তি বাড়াবে কিনা তা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

রুশ প্রেসিডেন্ট আরো প্রশ্ন করেন, দুই হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ ফ্রন্টলাইনে যুদ্ধবিরতি কীভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে? কে এর লঙ্ঘনের জন্য দায়ী থাকবে? অন্যদিকে জেলেনস্কি বলেন, ‘‌ইউক্রেন আকাশ ও সমুদ্রপথে যুদ্ধবিরতির যথার্থতা নিশ্চিত করতে সক্ষম। তবে ফ্রন্টলাইন পর্যবেক্ষণের জন্য মার্কিন ও ইউরোপীয় গোয়েন্দা নজরদারি প্রয়োজন।’

জেলেনস্কি বিশ্বাস করেন, কারিগরি দিক থেকে যুদ্ধবিরতির সমস্যাগুলো সমাধানযোগ্য হলেও প্রধান সমস্যা পুতিনের মৌলিক আপত্তি। যেকোনো চুক্তি দীর্ঘস্থায়ী শান্তির ভিত্তিতে হতে হবে। এ সংকটের মূল কারণগুলো দূর করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে ন্যাটো সম্প্রসারণ ও ইউক্রেনের স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে অস্তিত্বের ক্ষেত্রে বিরোধিতা।

কানাডায় অনুষ্ঠিত জি৭ দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা রক্ষার বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে। জেলেনস্কি বলেন, ‘রাশিয়াই একমাত্র পক্ষ যে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে ও কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ করতে চায়।’

এ অবস্থায় বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এখন পরবর্তী সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের হাতে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প রাশিয়ার ওপর আরো নিষেধাজ্ঞা ও সামরিক সহায়তা বাড়াতে পারেন। আবার দেশটির সঙ্গে চুক্তির জন্য কিছু ছাড় দিতে পারেন। তবে তা করলে ইউক্রেনের জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে। এখন পর্যন্ত মার্কিন-রাশিয়ার বেশির ভাগ যোগাযোগ গোপনে হয়েছে, যেখানে ইউক্রেনের ওপর প্রকাশ্যে কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে।

যদিও যুক্তরাষ্ট্র এক্ষেত্রে ‘সাবধানী আশাবাদ’ প্রকাশ করছে। ট্রাম্প দ্রুত যুদ্ধের অবসান চান, আর পুতিন দীর্ঘ আলোচনার পক্ষে। বিশেষজ্ঞদের অভিমত, শক্তিশালী এ দুই নেতার অবস্থানের ফলে যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎ এখনো অনিশ্চিত।

আরও