ওপেন ফ্র্যাকচার ইনফেকশন

ক্ষতের গভীরতার ওপর নির্ভর করে ইনফেকশনের ঝুঁকি

শরীরে ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করলে সাধারণত ইনফেকশন হয়। ফ্র্যাকচার থাকা অবস্থায় ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে ফ্র্যাকচার ইনফেকশন হয়।

শরীরে ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করলে সাধারণত ইনফেকশন হয়। ফ্র্যাকচার থাকা অবস্থায় ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে ফ্র্যাকচার ইনফেকশন হয়। অনেক ক্ষেত্রে শরীরের ভাঙা হাড় প্রতিস্থাপনকালে অস্ত্রোপচারের সময় ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করতে পারে।

সাধারণভাবে ফ্র্যাকচার হওয়া স্থানের আশপাশের ত্বক, পেশি, ধমনি ও শিরাগুলো যত বেশি ক্ষতি হয়, সংক্রমণের ঝুঁকি তত বেশি।

দীর্ঘস্থায়ী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়, যা ফ্র্যাকচারের পর সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়। এ উদাহরণগুলোর মধ্যে রয়েছে:

• ডায়াবেটিস

• এইচআইভি

দৈনন্দিন জীবনাচরণের ওপর এ ঝুঁকি অনেকটা নির্ভর করে। যেমন ধূমপান, মদ্যপান করা ইত্যাদি। অন্য কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে মোটা হওয়া, শরীরে পুষ্টির অভাব থাকা ও আনহাইজেনিক অবস্থা।

ওপেন ফ্র্যাকচার হলো এমন একটি অবস্থা যার কারণে হাড়ের পাশাপাশি আশপাশের ত্বকও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। হাড়ের টুকরাটি বাইরের ত্বকের সংস্পর্শে আসে। ত্বক ছিঁড়ে তা বেরিয়ে যেতে পারে। ব্যাকটেরিয়া ছাড়াও বাইরের অন্য দূষিত পদার্থগুলো ত্বকের ক্ষতিসাধন করে। অন্যদিকে ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত থাকলে সহজে ইনফেকশন হয়। এর কারণে অস্ত্রোপচারের আগে রোগীদের ইনফেকশন প্রতিরোধমূলক অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া হয়।

ফ্র্যাকচার হলে অস্ত্রোপচারের সময় ভাঙা হাড় পর্যন্ত পৌঁছানোর জন্য ত্বক ও নরম টিস্যু কাটা হয়। সেক্ষেত্রে সংক্রমণ হওয়ার ঝুঁকি বেশ কম থাকে, সাধারণত সুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে ১ শতাংশের কম মানুষের সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে। অস্ত্রোপচারের আগে রোগীদের প্রতিরোধমূলক অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া হয় এবং অপারেশন থিয়েটারে সাবধানতা সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়তা করে।

ফ্র্যাকচারের পর সংক্রমণ সাধারণত উষ্ণতা, লাল ভাব, ব্যথা বৃদ্ধি এবং আক্রান্ত স্থানের চারপাশে ফোলা ও প্রদাহ সৃষ্টি করে। যদি সংক্রমণ জয়েন্টের কাছাকাছি থাকে, যেমন আপনার হাঁটু বা কাঁধ, জয়েন্টটি নড়াচড়া করতে অসুবিধা হয়।

ওপেন ফ্র্যাকচারে অস্ত্রোপচার জরুরি হয়ে পড়ে। তাই ওপেন ফ্র্যাকচার চিকিৎসা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শুরু করা উচিত। সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণের পরবর্তী পদক্ষেপগুলোর মধ্যে রয়েছে ক্ষত পরিষ্কার করা এবং ত্বক, নরম টিস্যু ও হাড় থেকে ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ যাতে না ঘটে সে ব্যবস্থা নেয়া। পদ্ধতিটিকে ডেব্রিডমেন্ট বলা হয়। শরীরের আঘাতের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে রোগীর বিভিন্ন ডেব্রিডমেন্ট পদ্ধতি ব্যবহার হতে পারে।

সংক্রমণের ঝুঁকি থাকলে প্রাথমিকভাবে চিকিৎসকরা অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা করতে পারেন। সংক্রমণের গভীরতার ওপর নির্ভর করে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হবে কিনা। সংক্রমণ ঠিক করার জন্য বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ছয়-আট সপ্তাহের অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োজন হতে পারে।

হাড়ের সংক্রমণ দূর করা কঠিন হতে পারে। এটি দীর্ঘমেয়াদি অ্যান্টিবায়োটিক চিকিৎসার পাশাপাশি বিভিন্ন অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে। কিছু গুরুতর ক্ষেত্রে সার্জন সংক্রমণ বন্ধ করার জন্য সংক্রমিত অঙ্গ কেটে ফেলেন।

ওপেন ফ্র্যাকচার দ্রুত ও সঠিকভাবে চিকিৎসা করা প্রয়োজন। আঘাতের ৬-১২ ঘণ্টার মধ্যে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়। চিকিৎসা করতে দেরি হলে দ্রুত অ্যান্টিবায়োটিক শুরু করা জরুরি।

ওপেন ফ্র্যাকচার ঠিক হতে কত সময় লাগবে তা আঘাতের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে। সাধারণত ওপেন ফ্র্যাকচার অন্যান্য ফ্র্যাকচারের তুলনায় ঠিক করতে বেশি সময় নেয়। 

ওপেন ফ্র্যাকচারের পর জটিলতা বেশি দেখা যায়। কখনো কখনো হাড় পুরোপুরি ঠিক হয় না। জটিলতা প্রতিরোধের সর্বোত্তম উপায় হলো জরুরি চিকিৎসা নেয়া এবং অস্ত্রোপচারের পর চিকিৎসকের ফলোআপে থাকা।

আরও