ওপেন ফ্র্যাকচার

সংক্রমণ এড়াতে করণীয়

ওপেন ফ্র্যাকচার বা কম্পাউন্ড ফ্র্যাকচারে হাড় ভেঙে ত্বকে ক্ষত সৃষ্টি হয়। তখন হাড়ের সঙ্গে কাদা-মাটি, ধুলোবালি মিশে যায়।

ওপেন ফ্র্যাকচার বা কম্পাউন্ড ফ্র্যাকচারে হাড় ভেঙে ত্বকে ক্ষত সৃষ্টি হয়। তখন হাড়ের সঙ্গে কাদা-মাটি, ধুলোবালি মিশে যায়। অনেক সময় এসব ময়লা ভেতরে ঢুকে যায়। ফলে পরবর্তীকালে সংক্রমণের ঝুঁকি তৈরি হয়। ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ এড়াতে চিকিৎসক অ্যান্টিবায়োটিক টিটেনাস টিকার মাধ্যমে চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। চিকিৎসা কার্যক্রম দ্রুত শুরু করতে হয়। কারণ সংক্রমণ দেখা দিলে নিরাময় বিলম্বিত হতে পারে।

কখন বাড়ে সংক্রমণের ঝুঁকি?

ব্যাকটেরিয়ার সংস্পর্শ: হাড় ভেঙে ক্ষত সৃষ্টি হওয়ার কারণে ওই স্থানে ব্যাকটেরিয়া খুব সহজে প্রবেশ করতে পারে। ভাঙা হাড় ত্বকের সংস্পর্শে আসার কারণে ত্বক থেকে ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করতে পারে। পরিবেশ বা যে বস্তুর আঘাতে হাড় ভেঙেছে, তাতে লেগে থাকা ব্যাকটেরিয়াও ক্ষতস্থানে সংক্রমণ ঘটাতে পারে।

আঘাতের তীব্রতা: আঘাতের তীব্রতা ক্ষতের পরিমাণ যত বেশি থাকে, ভাঙা হাড়ে সংক্রমণের ঝুঁকিও তত বেড়ে যায়।

বিলম্বিত চিকিৎসা: ওপেন ফ্র্যাকচারে দ্রুত চিকিৎসা বা অস্ত্রোপচার শুরু করতে হয়। চিকিৎসা কার্যক্রম বিলম্বিত হলে সংক্রমণের ঝুঁকিও বাড়তে থাকে।

এছাড়া যাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম, পুষ্টিহীনতা ডায়াবেটিসে ভুগছেন, তারা কিছুটা বেশিই ঝুঁকিতে থাকেন।

কীভাবে বুঝবেন?

• ক্ষতস্থানের চারপাশে লালচে ভাব ফুলে উঠতে পারে

 ক্ষতস্থানে প্রদাহ হয়। স্থানটি তখন উষ্ণ অনুভূত হতে পারে

 ক্ষতস্থান থেকে পুঁজ বের হতে পারে

 শরীরে তীব্র জ্বর দেখা দিতে পারে

 জ্বরের পাশাপাশি শরীরে ঘাম হতে পারে। আবার কখনো খুব শীতল অনুভূত হতে পারে

 ব্যথার তীব্রতা আগের চেয়ে ক্রমাগত বাড়তেই থাকে

প্রতিরোধে করণীয়

হাড় ভাঙার পর জীবাণুর সংক্রমণ এড়াতে সর্বদা সচেতন থাকুন। মনে রাখতে হবে ওপেন ফ্র্যাকচারের ক্ষেত্রে ক্ষতস্থানে জীবাণু-সংক্রমণের ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে। সংক্রমিত হলে চিকিৎসা দীর্ঘ হয় বা নিরাময় বিলম্বিত হয়। তাই ঝুঁকি এড়াতে সময় কিছু বিষয় মেনে চলুন। যেমন 

দুর্ঘটনার পর তাড়াতাড়ি আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে চলুন। যত দ্রুত চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করা যায়, সংক্রমণের ঝুঁকিও ততটাই কমে আসে।

পেশাদার স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী ব্যক্তির দ্বারা ক্ষতস্থানের ময়লা, জীবাণু মৃত কোষগুলো ভালোভাবে পরিষ্কার করিয়ে নিন। এতে সংক্রমণের জন্য দায়ী জীবাণু দূর হয়ে যাবে।

চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করুন। দুর্ঘটনার পর পরই চিকিৎসকের শরণাপন্ন এবং ওষুধ সেবন করলে অনাকাঙ্ক্ষিত ঝুঁকি কমে যায়।

টিটেনাস সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া মাটিসহ পরিবেশে উপস্থিত থাকে। ওপেন ফ্র্যাকচার হলে জীবাণু ক্ষতস্থান দিয়ে শরীরে প্রবেশ করতে পারে। ফলে টিটেনাস বা গ্যাংগ্রিন রোগ দেখা দিতে পারে। তাই ঝুঁকি এড়াতে চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনে উল্লেখিত টিকাগুলো গ্রহণ করুন।

খেয়াল রাখবেন ওষুধের নির্ধারিত ডোজ পূরণ হওয়ার আগেই ওষুধ খাওয়া বাদ দেবেন না।

বাসায় ক্ষতস্থানটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলুন।

চিকিৎসা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে নিয়মিত বিরতিতে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন।

লেখক: পেডিয়াট্রিক অর্থোপেডিক সার্জারি বিশেষজ্ঞ

ল্যাবএইড কার্ডিয়াক হাসপাতাল

আরও