শিকার অভিযান যেভাবে বদলে দিয়েছিল চকলেটের স্বাদ

চকলেটের জন্য সুইজারল্যান্ডের খ্যাতি বিশ্বজুড়ে। পরিসংখ্যান বলছে, সুইজারল্যান্ডের মানুষ বছরে গড়ে সাড়ে ১০ কেজির মতো চকলেট খান। বর্তমানে মুখরোচক যে আঠালো চকলেট বিশ্বজুড়ে আধিপত্য দেখিয়ে আসছে, তার উদ্ভবও ইউরোপের এ দেশেই। আর উদ্ভাবনের গল্পটাও বেশ মজাদার।

চকলেটের জন্য সুইজারল্যান্ডের খ্যাতি বিশ্বজুড়ে। পরিসংখ্যান বলছে, সুইজারল্যান্ডের মানুষ বছরে গড়ে সাড়ে ১০ কেজির মতো চকলেট খান। বর্তমানে মুখরোচক যে আঠালো চকলেট বিশ্বজুড়ে আধিপত্য দেখিয়ে আসছে, তার উদ্ভবও ইউরোপের এ দেশেই। আর উদ্ভাবনের গল্পটাও বেশ মজাদার।

আঠার শতাব্দীর সত্তরের দশকে উদ্যোক্তা রডলফ লিন্ড দুধমিশ্রিত চকলেটের স্বাদ বাড়াতে একটি রোলার মেশিন উদ্ভাবন করেন। একদিন যন্ত্রটি পরীক্ষা করার সময় তার ওষুধ প্রস্তুতকারক ভাই একটা উপদেশ দেন। তার উপদেশটি ছিল এরকম রোলারটি গরম কর, মিশ্রণে আরো কোকোয়া মাখন দাও এবং মেশিনটি দীর্ঘ সময় ধরে চালাও।’

ভাইয়ের উপদেশ অনুযায়ী লিন্ড যন্ত্রটি চালু করে শিকারে চলে যান। এটি তিন দিন তিন রাত টানা চলতে থাকে। যখন তিনি ফিরে আসেন, ততক্ষণে মুখরোচক এক চকলেটের নতুন ইতিহাস লেখা হয়ে গেছে। তিনি দেখতে পান রোলারের মিশ্রণটি গাঢ়, কোমল, মসৃণ ও চকচকে লাগছে।

লিন্ড এ চকলেটের নাম দেন ‘চকলেট ফনড্যান্ট বা ‘কোমল চকলেট। রোলারের নাম দেয়া হয় ‘কোচ। চকলেট বানানোর এ পদ্ধতি সুইজারল্যান্ডের উপত্যকাগুলোয় লিন্ড দীর্ঘদিন গোপন রাখেন। তিনি ২০ বছর কোচ প্রক্রিয়ার রহস্য কাউকে জানতে দেননি। ১৮৯৯ সালে তিনি আরেকজন চকলেট উৎপাদক জোহান রুডলফ স্প্রুংলি-স্কিফারলির কাছে এটি বিক্রি করে দেন।

নতুন এ প্রক্রিয়া চকলেট শিল্পে বিপ্লব ঘটায় এবং সুইজারল্যান্ডকে বিশ্বের সর্ববৃহৎ চকলেট রফতানিকারক দেশে পরিণত করে। ১৯৫২ সালের এক হিসাবে দেখা যায়, বিশ্বব্যাপী চকলেট রফতানি বাজারে সুইজারল্যান্ডের আধিপত্য ৫৫ শতাংশ।

শত বছরের বেশি সময় ধরে চকলেটের প্রতি সুইজারল্যান্ডের এ ভালোবাসা আজও বিদ্যমান। দেশটি বিশ্ব বাজারে চকলেট রফতানিতে বড় ভূমিকা রেখে চলেছে। এমনকি সুইজারল্যান্ডে রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় চকলেট জাদুঘর। এর নাম ‘দ্য লিন্ডথ হোম অব চকলেট’। জুরিখে অবস্থিত এ জাদুঘরে গেলে চকলেটের ইতিহাস খুব ভালোভাবে জানা যায়।

আরও