ঈদ বিনোদনের সেকাল একাল

ঈদ আমাদের দেশের অন্যতম প্রধান উৎসব। বছরে দুটো ঈদ, তবে আনন্দ যেন ঈদুল ফিতরেই বেশি। সেই জায়গা থেকেই ঈদুল ফিতরে দেখা যায় সবার নানা পরিকল্পনা। কেনাকাটা থেকে শুরু করে ঘর সাজানো, বেড়াতে যাওয়া, আড্ডা, গল্প ও খাওয়া-দাওয়া। এর সঙ্গেই যুক্ত হয় আরেকটি বিষয়—বিনোদন মাধ্যম। প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে আমাদের বিনোদনের ধারা বদলে গেছে। বিনোদন মাধ্যম বলতে আজ আমরা বুঝি ওটিটি, ইউটিউব, স্ট্রিমিং প্লাটফর্ম। টেলিভিশন চ্যানেলও বুঝি পুরো হয়ে গেছে। অথচ বেশিদিন আগের কথা না, রেডিও ছিল বিনোদনের বড় মাধ্যম।

ঈদ আমাদের দেশের অন্যতম প্রধান উৎসব। বছরে দুটো ঈদ, তবে আনন্দ যেন ঈদুল ফিতরেই বেশি। সেই জায়গা থেকেই ঈদুল ফিতরে দেখা যায় সবার নানা পরিকল্পনা। কেনাকাটা থেকে শুরু করে ঘর সাজানো, বেড়াতে যাওয়া, আড্ডা, গল্প ও খাওয়া-দাওয়া। এর সঙ্গেই যুক্ত হয় আরেকটি বিষয়—বিনোদন মাধ্যম। প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে আমাদের বিনোদনের ধারা বদলে গেছে। বিনোদন মাধ্যম বলতে আজ আমরা বুঝি ওটিটি, ইউটিউব, স্ট্রিমিং প্লাটফর্ম। টেলিভিশন চ্যানেলও বুঝি পুরো হয়ে গেছে। অথচ বেশিদিন আগের কথা না, রেডিও ছিল বিনোদনের বড় মাধ্যম।

তবে এখনো প্রতিটি মাধ্যমেই কোনো না কোনো বিশেষ আয়োজন থাকে। এ সময় ওটিটি, টেলিভিশন সব মাধ্যমই ঈদ-কেন্দ্রিক অনুষ্ঠান নিয়ে আসে। তবে আগে ছিল ভিন্ন ধারার বিনোদন। বহু আগের কথাই যদি বলা হয়, তখন ঈদকে কেন্দ্র করে হতো রেডিওর অনুষ্ঠান। তারও আগে বিভিন্ন অঞ্চলে আয়োজিত হতো গানের অনুষ্ঠান, কোথাও যাত্রাপালা। তবে একটা সময় ঈদ মানেই ছিল নতুন সিনেমা।

নব্বইয়ের দশকে ছিল অন্যতম সেরা সময়। তখন সালমান খান, রুবেল, রিয়াজ, মান্না, ইলিয়াস কাঞ্চন, মৌসুমি, শাবনূরদের সিনেমা চলত দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের হলে। ঢাকার আনন্দ থেকে যশোরের মনিহার—সবখানেই ছিল রমরমা অবস্থা। সিনেমা নির্মাণ করতেন দেলোয়ার জাহান ঝন্টু, শহিদুল ইসলাম খোকন, শিবলি সাদিক, মোতালেব হোসেন, মনোয়ার খোকন, মমতাজুর রহমান আকবর, দেওয়ান নজরুল, সোহানুর রহমান সোহান, গাজী মাজহারুল আনোয়ার, আমজাদ হোসেন প্রমুখ বড় নির্মাতারা। টিকিট ব্ল্যাক হওয়াও ছিল তখনকার সাধারণ বিষয়।

বাংলাদেশের ঈদের সিনেমার ইতিহাসে অন্যতম সফল ছিল কেয়ামত থেকে কেয়ামত। ১৯৯৩ সালে মুক্তি পায় সিনেমাটি। অভিনয় করেছিলেন সালমান শাহ ও মৌসুমি। বাণিজ্যিক সিনেমার মধ্যে আরো ছিল দেনমোহর, স্বামী কেন আসামি, বিয়ের ফুল প্রভৃতি। এছাড়া ঈদে মুক্তি পেয়েছিল মোস্তফা সরয়ার ফারুকী পরিচালিত ব্যাচেলর। একটা সময় ইমপ্রেস টেলিফিল্মের সিনেমা মুক্তি পেত ঈদে। ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার হতো চ্যানেল আইয়ে।

টেলিভিশন চ্যানেল ঘরে ঘরে আসতে শুরু করে ২০০০ সালের পর থেকে। স্যাটেলাইট চ্যানেল বাড়ার পর দর্শক টিভিকেই বিনোদনের মাধ্যম করে নেয়। পুরনো সিনেমা প্রচার হতো টেলিভিশন চ্যানেলে। সঙ্গে শুরু হয় নাটকের জয়জয়কার। বিটিভিসহ প্রতিটি টেলিভিশনই ঈদের জন্য তৈরি করত নাটক। থাকত ম্যাগাজিন, প্যাকেজ ও সংগীতানুষ্ঠান। একটা দীর্ঘ সময় এভাবেই চলেছে ঈদের নাগরিক বিনোদন।

বাংলাদেশী সিনেমার বাজার পড়ে গেলে কয়েকটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সিনেমা নির্মাণ করত কেবল ঈদে। প্রিমিয়ার করা হতো টেলিভিশন চ্যানেলে। সে সময় থেকে টেলিভিশনের তিনদিনের ঈদ অনুষ্ঠান পাঁচদিনব্যাপী হতে শুরু করে। আর এখন হয় সাতদিনব্যাপী।

এখন নতুন ও পুরনো উভয় ধারাতেই চলছে ঈদের বিনোদন। একদিকে টেলিভিশন চ্যানেল প্রতি ঈদেই নিয়ে আসে সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠান। থাকে নাটক, সিনেমা, ম্যাগাজিন ও সংগীতানুষ্ঠান। সেই সঙ্গে ওটিটি জনপ্রিয় হওয়ার কারণে প্রায় সব ওটিটিই বিশেষ আয়োজন নিয়ে আসে। এদিকে ২০২০ সালের পর থেকে বাংলাদেশের সিনেমায় দেখা যাচ্ছে নতুন ধারা। সিনেমা এখন জনপ্রিয়। এবারো ঈদে মুক্তি পাচ্ছে ডজনখানেক সিনেমা। 

আরও