বাংলাদেশ প্রেক্ষিতে বর্তমানে অর্থনীতি বিষয়টি আলোচনা ও ঘটনাপ্রবাহের বিরাট অংশজুড়ে আছে। সে আলোচনা ও ঘটনাপ্রবাহ তুঙ্গে উঠেছে বিশ্বের ১৮৯টি দেশের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বিশাল পাল্টা শুল্ক আরোপের কারণে। শুল্ক ব্যাপারটি মানুষের মুখে মুখে ফিরছে এবং এর ফলে বাংলাদেশের রফতানি, বিশেষত পোশাক শিল্পের ওপর কতটা বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়বে তা নিয়ে ব্যাপক শঙ্কা আছে। সরকারি মহলেও জোর আলোচনা ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নিয়ে। সেই সঙ্গে সংবাদমাধ্যমে প্রচুর প্রতিবেদন বেরোচ্ছে মধ্যপ্র্যচ্য থেকে অর্থপ্রবাহ বিষয়ে, বাণিজ্য ভারসাম্য নিয়ে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা ভাণ্ডারের ঋণের কিস্তির ওপরে। আলোচনায় আছেন অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞরা। স্বল্পোন্নত দেশের কাতার থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ, দেশের আগামী বাজেটের পরিমাণ ও প্রকৃতি, পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার মতো বিষয়ে তারা তাদের সুচিন্তিত মতামত দিচ্ছেন। আমাদের উন্নয়ন সহযোগীরাও পিছিয়ে নেই। আগামী বছর আমাদের সম্ভাব্য প্রবৃদ্ধি বিষয়েও তাদের প্রাক্কলন সম্পর্কে তারা আমাদের অবহিত করছেন।
দেশের অর্থনৈতিক ঘটনাপ্রবাহও ঘটছে অতি দ্রুত। বিনিয়োগ বিষয়টি নিয়ে অনুষ্ঠান হচ্ছে, সম্ভাব্য বিদেশী বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে আসছেন। এসেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পোদ্যোক্তারা। বাংলাদেশে বিনিয়োগ নিয়ে শীর্ষ সম্মেলনও হয়ে গেল। সে অনুষ্ঠানগুলো নানা খাতজুড়ে হয়েছে—স্বাস্থ্য খাতে বিদেশী বিনিয়োগ থেকে শুরু করে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে সম্পদপ্রবাহ পর্যন্ত। তরুণ উদ্যোক্তাদের নব্য উদ্ভাব্য উদ্যোগ নিয়েও নানা অনুষ্ঠান হয়েছে। অনুষ্ঠান হচ্ছে খেলাপি ঋণ নিয়ে, ব্যাংক খাতের সংস্কারের ওপর, বেসরকারি খাতের বিষয়াবলি নিয়ে। অর্থনৈতিক ঘটনাপ্রবাহের ওপরে আলোচনা সভা হচ্ছে, বসছে গোলটেবিল বৈঠকও।
এ সবকিছুই আজকে বাংলাদেশ অর্থনীতির গতিময়তার পরিচায়ক এবং এসব উদ্যোগ অভিনন্দিত ও উদযাপিত হওয়ার মতো। বহির্বিশ্বের দেশগুলো, উন্নয়ন সহযোগী ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো আমাদের দেশের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে। এটা বোঝা যাচ্ছে যে বাংলাদেশের অর্থনীতি আস্তে আস্তে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে এবং আমাদের অর্থনীতিতে আস্থা ও প্রত্যাশার সুবাতাস বইতে শুরু করেছে। এসব দক্ষযজ্ঞের ব্যাপারস্যাপার দেখে আমার কিছু কথা মনে হয়েছে।
প্রথমত, এটা খুব স্পষ্ট যে আলোচনা ও ঘটনাপ্রবাহের যে জোয়ার আমরা প্রত্যক্ষ করছি, তা অর্থনীতির সামষ্টিক পর্যায়ে। সেখানে বৈদেশিক মুদ্রা মজুদ, বাণিজ্য ঘাটতি, বিদেশী বিনিয়োগের মতো খটোমটো বিষয় আছে, আছে সুচিহ্নিত উপাত্ত ও সংখ্যা। অর্থনীতির সামষ্টিক পর্যায়ে প্রবণতা, গতিপ্রবাহ, অর্জন এবং অন্তরায় বোঝার জন্য এগুলো নিতান্তই প্রয়োজন। এগুলো দরকার নীতিমালা প্রয়োজনের জন্য, সম্পদপ্রবাহের জন্য, নিরীক্ষণ এবং মূল্যায়নের জন্যও। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, এগুলো সব বিমূর্ত ধারণা ও সংখ্যা। সেখানে মানুষ কোথায়? মানুষের যাপিত জীবনের ওপর প্রভাবচিত্র কোথায়? দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির সামগ্রিক এসব ধারণা, উপাত্ত ও সংখ্যা দিয়ে কি অর্থনীতির ব্যষ্টিক স্তরের বাস্তবতা বোঝা যায়? যায় না। সামষ্টিক অবস্থার সঙ্গে ব্যষ্টিক অবস্থার একটি বিচ্ছিন্নতা আছে। সামষ্টিক ছবি আর ব্যষ্টিক প্রতিচ্ছবির মধ্যে ভিন্নতা আছে।
এই যেমন, সামষ্টিক বিশ্লেষণ বলছে যে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমলেও খাদ্য-বহির্ভূত মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। কিন্তু এ বিশ্লেষণ আমাকে পাঠ পর্যায়ের নানা বাস্তবতা, যা মানুষের দৈনন্দিন জীবনকে প্রভাবিত করছে, সে সম্পর্কে কিছুই বলছে না। ধানের ফলন ভালো, চাল আমদানিও হচ্ছে প্রচুর, খোলাবাজারেও চীল বিক্রি করছে সরকার, কিন্তু চালের দাম কমছে না সাধারণ মানুষের কাছে। কৃচ্ছ্রসাধন করতে হচ্ছে তার খাদ্য গ্রহণে, বিঘ্নিত হচ্ছে তার পুষ্টি। আলুর দাম এত কমেছে যে চাষী তার উৎপাদন ব্যয় মেটাতে পারছেন না। বাজার-হাট, নদীর পাড়, রাস্তার পাশ তরমুজে সয়লাব। তবু ৩০০ টাকার কমে তরমুজ কিনতে পারছেন না। তুলে রাখতে হচ্ছে তাদের ফল আস্বাদনের অভিপ্রায়। মাঠ পর্যায়ে আমরা কি জানি, কারওয়ান বাজারে কোন পণ্যটির মূল্য নির্ধারিত হয়, শেরপুর বাজার কোন সবজির মূল্য বেঁধে দেয়?
শ্রমবাজার, বেকারত্ব বিষয়ে সামষ্টিক পর্যায়ে অনেক তথ্য-উপাত্ত লভ্য। সেসব সংখ্যা থেকে আমরা বলি, বহু মানুষ কর্মহীন। অথচ গ্রামীণ অর্থনীতিতে বিরাট অভিযোগ যে খেতখামারে কাজের লোক পাওয়া যাচ্ছে না। তিন বেলা খাবার, চা-নাশতার সঙ্গে আর্থিক মজুরিসহ কৃষিকাজে শ্রম নিয়োগে খরচ পড়ে যায় ১০০০-১২০০ টাকার মতো। তবু লোক নেই। সুতরাং সামষ্টিক তথ্য-উপাত্তের সঙ্গে ব্যষ্টিক বাস্তবতার ফারাক অনেক।
সামষ্টিক অর্থনীতির আলাপ-আলোচনা, ঘটনাপ্রবাহ ব্যষ্টিক পর্যায়ের এসব তথ্য দেয় না, বাস্তবতাকে ঢেকে রাখে। ফলে সাধারণ মানুষের যাপিত জীবনের ওপরের বাস্তব প্রভাব আমরা জানতে পারি না। আমরা গণবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ি। কিন্তু চূড়ান্ত বিচারে উন্নয়ন তো মানুষেরই জন্য, মানুষই উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দু। অতএব, সামষ্টিক চালচিত্রের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে ব্যষ্টিক পর্যায়ে মানুষের জীবন-বাস্তবতাকে। সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চয়ই নিশ্চিত করতে হবে, কিন্তু তা যেন সাধারণ মানুষের জীবনকে অস্থিতিশীল না করে।
দ্বিতীয়ত, অর্থনীতি নিয়ে আলোচনা কিংবা অর্থনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ চালচিত্রে সামষ্টিক পর্যায়ে পরিমাণগত দিকটিই প্রাধান্য পাচ্ছে। বারবার উল্লেখিত হচ্ছে সামষ্টিকভাবে কত বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক বিনিয়োগ এ দেশে আসতে পারে, কিংবা স্বাস্থ্য খাতে বিদেশীরা কত কোটি টাকার সাহায্য দেবে অথবা যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক আরোপে কত বিলিয়ন বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন বাংলাদেশ হারাব। আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতিতে এসব বিষয়ের পরিমাণগত মাত্রিকতা গুরুত্বপূর্ণ সন্দেহ নেই, কিন্তু ব্যষ্টিক পর্যায়ে সেসবের গুণগত দিকের প্রতিও নজর দেয়া দরকার।
ভালো কথা, বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক বিনিয়োগ আসবে। কিন্তু সেসব বিনিয়োজিত উদ্যোগ কি পরিবেশের ক্ষতি করবে? যেখানে কৃষকের ক্ষতি হবে, নানা গোষ্ঠী স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়বে, প্লাবনের সম্ভাবনায় মানুষের জানমালের ক্ষতি হবে কিংবা প্রান্তিক মানুষের জীবনযাত্রার উপকরণ ব্যাহত হবে। সেসব বিনিয়োজিত উদ্যোগে কি স্বয়ংক্রিয়করণ এমন হবে, যাতে সাধারণ কর্মনিয়োজন হ্রাস পাবে? বিদেশী রাষ্ট্র যখন স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ সহায়তা দেবে তা কি গ্রামাঞ্চলে প্রাথমিক মা-শিশু সেবা কেন্দ্রের জন্য ব্যয়িত হবে, নাকি নগর অঞ্চলের উচ্চতর সেবায় নজর দেবে? বিপুল পরিমাণ অর্থ এসব বিনিয়োগে নারীর সুযোগ-সুবিধা, যেমন কর্মনিয়োজন, সেবাপ্রাপ্তিতে নারীর অভিগম্যতা কতখানি থাকবে? ব্যষ্টিক পর্যায়ে বিনিয়োগের গুণগত দিক নিশ্চিত করতে বিনিয়োগ সিদ্ধান্তে জনগণের অংশগ্রহণ কতখানি থাকবে, তাদের কণ্ঠস্বরের প্রতি কতখানি মর্যাদা দেয়া হবে, তারা সেসব ব্যাপারে কি অংশীদারত্ব অনুভব করবে?
সামষ্টিক অর্থনীতির পরিমাণগত দিকের সঙ্গে ব্যষ্টিক গুণগত বিষয়গুলো নিশ্চিত করা অত্যাবশ্যকীয়। তা না হলে অতীতের মতো মানবকুশলশূন্য ভৌত বিষয়ের পরিমাণগত বিস্তারকেই উন্নয়ন বলা হবে, ভ্রান্ত স্থানে বা বিষয়ে গুরুত্ব এবং অগ্রাধিকার দেয়া হবে, যেকোনো অগ্রগতিই আখ্যায়িত হবে উন্নয়ন বলে। বিনিয়োগ সিদ্ধান্তে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণকে গুরুত্ব দিতে হবে, বিনিয়োজিত উদ্যোগের কর্মকাণ্ডের দৃশ্যমানতা, দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে তাদের কণ্ঠস্বরের অন্তর্ভুক্তি প্রয়োজন। সেসব বিনিয়োগের পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়নে তাদের মতামত অতীব গুরুত্বপূর্ণ।
সামষ্টিক পর্যায়ে পরিমাণগত অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে ব্যষ্টিক পর্যায়ে একটি বিশেষ গুণগত বিষয়ের দিকে দৃষ্টি দেয়া দরকার। সেটি হচ্ছে সাম্য ও সমতা। কোন কোন বিষয়ে সমতা অনুসৃত হতে হবে, যেমন রাষ্ট্রের নাগরিক অধিকারের ক্ষেত্রে সমতা, আইনের চোখে সমতা; কোন কোন ক্ষেত্রে সাম্যের কথা বেশি উঠে আসবে যেমন সেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সাম্য, কর প্রদানের ক্ষেত্রে সাম্য। কোনো রকমের বৈষম্যই গ্রহণযোগ্য নয়। বৈষম্য হতে পারবে না নারী-পুরুষে, অঞ্চলে-অঞ্চলে, বিভিন্ন আর্থসামাজিক গোষ্ঠীর মধ্যে।
সামষ্টিক পর্যায়ে শুধু পরিমাণগত প্রসারেই মনঃসংযোগ করলে পরিমাণগত অগ্রগতি হয়তো হয়, কিন্তু ব্যষ্টিক স্তরে উন্নয়ন হয় না। কারণ অগ্রগতি হলো কোনো ইতিবাচক বিষয়ের প্রসার, যেমন জাতীয় আয়ের বৃদ্ধি; কিংবা নেতিবাচক কোনো বিষয়ের হ্রাস, যেমন শিশুমৃত্যু হারের হ্রাস। উন্নয়ন হচ্ছে সামষ্টিক পরিমাণগত অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে ব্যষ্টিক পর্যায়ে গুণগত পরিবর্তন। জাতীয় আয়ের বৃদ্ধি অগ্রগতি, তার সুষম বণ্টন হলে সেটা উন্নয়ন কারণ, সেখানে একটি গুণগত পরিবর্তন হয়েছে।
তৃতীয়ত, আমরা সামষ্টিক অর্থনীতির পরিমাণগত আর্থিক দিকেই বেশি নজর দিচ্ছি। কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর দিকে নয়। সামষ্টিক পর্যায়ের পরিমাণগত অর্থ বা সম্পদকে যদি ব্যষ্টিক পর্যায়ে মানুষের জীবনকুশলতা বৃদ্ধিতে অবদান রাখতে হয়, তাহলে অর্থের সঙ্গে সঙ্গে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোকেও গুরুত্ব দিতে হবে। মানব উন্নয়নের জন্য রাষ্ট্রের নানা প্রতিষ্ঠানের কাঠামোকে হতে হবে দক্ষ, সমতামুখী ও কার্যকর। ব্যষ্টিক পর্যায়ে মানুষের জীবনকুশলমুখী সেবা দিতে হলে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর দক্ষতা অপরিহার্য। অদক্ষ প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোয় লক্ষ্যের বিচ্যুতি ঘটে, দুর্নীতি বিস্তার লাভ করে এবং কায়েমি স্বার্থ গেড়ে বসে। তখন সামষ্টিক স্তর থেকে পরিমাণগত অর্থ যতই ব্যষ্টিক পর্যায়ে আসুক না কেন, তা কখনো জনহিতে ব্যয়িত হয় না।
ব্যষ্টিক পর্যায়ে জনকল্যাণে কাজ করতে হলে রাষ্ট্রীয় প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোগুলোকে কিছু সুনির্দিষ্ট নীতিমালা এবং মূল্যবোধ ধারণ ও অনুসরণ করতেই হবে। যেমন মানুষের সমান অধিকারে বিশ্বাস, সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সাম্য, আইনের শাসন নিশ্চিতকরণ। এগুলো ব্যতীত বজায়যোগ্য মানবকেন্দ্রিক উন্নয়ন হয় না। সেই সঙ্গে প্রয়োজন হবে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত ও যূথবদ্ধ অঙ্গীকার, নিঃস্বার্থবোধ ও দৃষ্টিভঙ্গি এবং মানসিকতা পরিবর্তনের। কষ্টকর প্রক্রিয়া সন্দেহ নেই, কিন্তু অসম্ভব নয়।
রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে কার্যকর করতে হলে একটি দৃশ্যমানতা ও দায়বদ্ধতার কাঠামোকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। এ দৃশ্যমানতার একটি বিরাট স্তম্ভ হবে দৃশ্যমান এবং বিশ্বাসযোগ্য তথ্য-উপাত্ত। এসব তথ্য-উপাত্তকে বিবেচনা করতে হবে জনগণের সম্পদ হিসেবে। দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতা একটি কার্যকর প্রতিষ্ঠানের অন্যতম মাত্রিকতা। দায়বদ্ধতার মানে হচ্ছে প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি প্রাতিষ্ঠানিক বিধিবদ্ধ নিয়ম, শৃঙ্খলা এবং অনুশাসন মেনে তার কর্তব্য পালন করবেন। তার প্রতিটি কাজের জন্য তিনি দায়ী থাকবেন ও তিনি জবাবদিহি করবেন। দৃশ্যমানতা ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিতকরণের একটি অন্যতম পন্থা হচ্ছে প্রাতিষ্ঠানিক পরিবীক্ষণ, নিরীক্ষণ ও মূল্যায়ন।
বাংলাদেশ আজ এক নতুন সমাজ বিনির্মাণে প্রয়াসী, যার কেন্দ্রে রয়েছে মানবাধিকার, মানবিক মর্যাদা, সহনশীলতা এবং সাম্য ও সমতা। এ বিনির্মাণ শুধু অর্থনৈতিক নয়, সামষ্টিক অর্থনৈতিক তো নয়ই। এ বিনির্মাণ শুধু পরিমাণগত নয়। এ বিনির্মাণ সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক। এ বিনির্মাণ শুধু পরিমাণগত নয়, গুণগতও, শুধু অর্থের নয়, প্রতিষ্ঠানেরও। সংস্কারের কথা তাই বড় প্রাসঙ্গিক।
সেলিম জাহান: ভূতপূর্ব পরিচালক, মানব উন্নয়ন প্রতিবেদন দপ্তর এবং দারিদ্র্য দূরীকরণ বিভাগ, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি, নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র