ড. এম শামসুল আলম, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রকৌশল অনুষদের অধ্যাপক ও ডিন। কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা। এর আগে গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের অধ্যাপক ও ডিন ছিলেন। অধ্যাপনা করেছেন রুয়েট ও চুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগেও। প্রকাশ হয়েছে তার অনেক গবেষণা নিবন্ধ। সম্প্রতি বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের নানা দিক নিয়ে কথা বলেছেন বণিক বার্তার সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন দিদারুল হক
শিল্প খাতে গ্যাসের দাম বাড়ানোর একটি প্রস্তাব নিয়ে সারা দেশে সমালোচনা চলছে। ব্যবসায়ীরা উদ্বেগে রয়েছেন। তাদের প্রত্যাশা দাম বাড়ানো নয়, কমানো হোক। এতে দেশের জ্বালানি খাতে অস্থিরতা আরো বাড়বে কিনা।
জ্বালানি খাতের অস্থিরতা অব্যাহত আছে। এর প্রভাব মূল্যস্ফীতিতেও বিদ্যমান। পাশাপাশি জনগণের ক্রয়ক্ষমতা ক্রমবর্ধমান হারে হ্রাস পাচ্ছে। মানুষের জীবনযাত্রার মান নেমে যাচ্ছে। জিডিপির প্রবৃদ্ধি নিম্নগামী এবং সরকার আয়বঞ্চিত হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের ঝুঁকি বাড়ছে। দেশীয় পণ্যের উৎপাদন ব্যয় বাড়ার কারণে রফতানি ও অভ্যন্তরীণ বাজার হারানোর আশঙ্কা দিন দিন বাড়ছে। দেশ গত ১৫ বছর এ অবস্থার মধ্য দিয়ে এসেছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে সে অবস্থার গতিপ্রকৃতি বদলাবে সেটি সবারই প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে যে বিগত সরকারের ধারাবাহিকতাই অনুসরণ করা হচ্ছে। জনগণের কল্যাণ করাই সরকারের দায়িত্ব ও কর্তব্য। এটিই হতে হবে সরকারের আদর্শ ও রাষ্ট্রের দর্শন। তাই সরকার কোনোভাবেই ব্যবসায়ী কিংবা মুনাফালোভী হতে পারে না। সরকারকে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে নয়, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ মুনাফাবিহীন ব্যয়ভিত্তিক সরকারি সেবা হিসেবে নিশ্চিত হতে হবে এবং সরকারের নীতি হিসেবে তা গৃহীত হতে হবে।
অথচ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০-এর আওতায় প্রতিযোগিতাবিহীন বিনিয়োগের সুযোগে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ ব্যয় বৃদ্ধি করে একদিকে লুণ্ঠনমূলক মুনাফা বৃদ্ধি করা হয়, অন্যদিকে সে বর্ধিত ব্যয় সমন্বয়ে ভর্তুকি ও মূল্যহার বৃদ্ধি অব্যাহত রাখা হয়। এর প্রতিবাদে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম কীভাবে কমিয়ে আনা যায় তার রূপরেখা আমরা সংবাদ সম্মেলনে বলেছি। পত্রপত্রিকায় লিখেছি। লুণ্ঠনমূলক ব্যয় কমিয়ে বিদ্যুৎ জ্বালানির দাম কমানো হবে—এটি বর্তমান সরকারের কাছে সবারই প্রত্যাশা। অথচ সরকার সে দিক দিয়ে গেল না। লুণ্ঠনমূলক ব্যয় যেমন ছিল তেমনই রইল। ঘাটতি তথা ভর্তুকি সমন্বয়ের জন্য ভোক্তা পর্যায়ে গ্যাস বা জ্বালানির মূল্যহার বৃদ্ধি আগের মতোই অব্যাহত থাকবে। বিদ্যুতের মূল্যহারও বৃদ্ধি হবে। যদি বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম বিগত সরকারের মতোই এ সরকারও একইভাবে বৃদ্ধি অব্যাহত রাখে এবং লুণ্ঠনকে সুরক্ষা দেয়, তাহলে শুধু জ্বালানিতে নয়, শিল্পসহ দেশের সবকিছুতেই অস্থিরতা বাড়বে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানিতে আওয়ামী লীগের রেখে যাওয়া পথে হাঁটছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ পথে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম কতটুকু কমানো সম্ভব?
মোটেও সম্ভব নয়। আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী, ভর্তুকি প্রত্যাহারের জন্য আর্থিক ঘাটতি সমন্বয়ে বিগত সরকার বিদ্যুৎ ও প্রাথমিক জ্বালানির দাম বা মূল্যহার দফায় দফায় বেশি বেশি বৃদ্ধি অব্যাহত রাখে। মূল্যহার বৃদ্ধি কিংবা ভর্তুকি ব্যতীত অন্যায় ও অযৌক্তিক তথা লুণ্ঠনমূলক ব্যয় বৃদ্ধি রোধ করে অংশীজনদের পক্ষ থেকে ঘাটতি সমন্বয়ের জন্য প্রদত্ত বিকল্প প্রস্তাব বিগত সরকার গ্রহণ করেনি। বর্তমান সরকারও গ্রহণ করেনি। জ্বালানি নিরাপত্তাও নিশ্চিত হয়নি। ঋণদানকারী বিদেশী প্রতিষ্ঠানগুলোর পরামর্শে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোয় ক্রসবর্ডার এনার্জি ট্রেডিং পলিসির আওতায় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত উন্নয়ন চলছে। তাতে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির মূল্যহার এমনভাবে দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে, যেন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি আমদানিকারক দেশে পরিণত হওয়ার দৌড়ে এখন শীর্ষে। ফলে দাম কমিয়ে সে দৌড়ে পিছিয়ে পড়ার মতো কোনো ইচ্ছা বিগত সরকারের ছিল না; বর্তমান সরকারেরও নেই। সবসময় সরকারের নীতি ও কৌশলে জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অপেক্ষা জ্বালানি আমদানিকারক দেশে পরিণত হওয়ার দিকে ঝোঁক বেশি দেখা যায়। তাই কমানো নয়, কত দ্রুত ও কত বেশি মূল্যহার বৃদ্ধি অব্যাহত থাকে, সেটিই দেখার ও ভাবার বিষয়।
চুরি-দুর্নীতি লুটপাট দেশকে জ্বালানি সংকটে ফেলেছে। এগুলো রোধ করার বিষয়ে আপনার পরামর্শ কী?
ক্যাব-এর পক্ষ থেকে এরই মধ্যে বর্তমান সরকারের নিকট একাধিকবার বিদ্যুৎ ও প্রাথমিক জ্বালানি খাতে বিদ্যমান জ্বালানি অপরাধ রোধ ও প্রতিকারের দাবি জানানো হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি প্রদানের জন্য জেলা পর্যায়ের ক্যাবের কমিটি থেকে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ চলছে। অচিরেই স্মারকলিপিটি প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে জমা হবে। স্মারকলিপিতে জ্বালানি খাতের ঘুস-দুর্নীতি ও লুণ্ঠনে যারা জড়িত ছিল এবং জড়িত আছে, তাদের জ্বালানি অপরাধী হিসেবে অভিযুক্ত করে সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত ট্রাইব্যুনাল দ্বারা বিচারের দাবি করা হয়েছে। স্মারকলিপিতে চারজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে জ্বালানি অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। অপরাধীদের বিচার অবশ্যই এ সরকারের আমলেই হতে হবে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত থেকে যে অর্থ লুণ্ঠন করা হয়েছে, দেশে-বিদেশে পাচার করা হয়েছে এবং দেশে সে সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলা হয়েছে, সেসব অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে অবিলম্বে ফিরিয়ে আনতে হবে। পাশাপাশি তাদের স্থাবর-অস্থাবর সব সম্পত্তি রাষ্ট্রের অধীনে বাজেয়াপ্ত হতে হবে। তাহলেই মানুষ সান্ত্বনা ও সুবিচার পাবে।
ভোক্তার খরচ বিদ্যুৎ-জ্বালানিতে বাড়ছে। ক্যাবের পক্ষ থেকে আপনারা সরকারকে বহু পরামর্শ দিয়েছেন। সেগুলো সরকার কতটুকু আমলে নিয়েছে?
এখন পর্যন্ত কোনো কিছুই আমলে নেয়নি। দুটো জিনিস সরকার আমলে নিয়েছে আমরা বলতে পারি বা পারতাম, সেখানেও বিপত্তি রয়ে গেছে। দেখা যাচ্ছে, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির মূল্যহার নির্ধারণের ক্ষমতা বিগত সরকার ২০২৩ সালে বাংলাদেশ এনার্জি লেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) আইন, ২০০৩ পরিবর্তন করে নিজের তথা বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের হাতে নিয়ে আসে। কিন্তু অন্য একটি ধারা সংযোজন করে সেখানে বলা হয়, প্রবিধান প্রণয়ন না হওয়া পর্যন্ত এনার্জির মূল্যহার নির্ধারণের ক্ষমতা সরকারের হাতেই থাকবে। প্রবিধান না থাকায় জ্বালানি তেলের মূল্যহার সরকার তথা জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ নির্ধারণ করে আসছে। যখন ক্যাব এটি চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করল তখন মামলা মোকাবেলার জন্য বিইআরসি আইনে এ পরিবর্তন আনা হলো। অথচ ২০১২ সাল থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় তিনটি প্রবিধান আটকে রেখেছে। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ নিজেরাই জ্বালানি সুবিচার থেকে ভোক্তাদের বঞ্চিত করে নির্বাহী আদেশে কর্তৃত্ববহির্ভূতভাবে জ্বালানির মূল্যহার নির্ধারণ বর্তমান সরকারের আমলেও অব্যাহত রেখেছে। আইনি বাধা মোকাবেলা না করতে পেরে ২০২৩ সালে তারা আইনটি পরিবর্তন করে। ২০২৪ সালে বর্তমান সরকার যখন আইনের ৩৪ক ধারা বাতিল করল, তখন প্রবিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত মূল্যহার নির্ধারণের ক্ষমতা আলাদাভাবে আইনে লিখে নিয়েছিল, সেটি বাতিল করা হয়নি। তাহলে কেউ কি বলতে পারে, সরকার প্রকৃত অর্থে বিগত সরকার জ্বালানি খাতে যে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল তা পরিবর্তন করেছে এবং পরিবর্তন করে জনস্বার্থসম্মত ব্যবস্থা নিয়েছে? বরং সরকার জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে এ কথা বলা যায়। অন্যদিকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ আইন, ২০১০ রহিতকরণ অধ্যাদেশ দ্বারা রহিত করা হলো। কিন্তু রহিতকরণ অধ্যাদেশের ২ এর (২)(ক) ও (খ) ধারায় বলা হলো, রহিত আইনের আওতায় কৃত সকল কার্যক্রম বহাল থাকবে। অর্থাৎ সুরক্ষা তথা আবারো দায়মুক্তি দেয়া হলো। তাহলে ওই আইনের আওতায় কৃত সব অপরাধ, অনিয়ম ও লুণ্ঠনকে বর্তমান সরকার অধ্যাদেশ জারি করে সুরক্ষা দিল, এমনটি মনে না করার কোনো কারণ নেই। তাই বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত উন্নয়নে গৃহীত বিগত সরকারের লুণ্ঠনমূলক ব্যবস্থাদি যথাযথভাবে সুরক্ষা দিয়ে বর্তমান সরকার জ্বালানি জ্বালানি অপরাধীদের সুরক্ষা দিচ্ছে—এমন বক্তব্য ও মন্তব্য আসছে এবং সরকার প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। আশঙ্কার বিষয় সরকার দ্রুত অপ্রিয় হচ্ছে।
বিগত সরকারের রেখে যাওয়া আমলাদের দ্বারাই গ্যাস-বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তেলের ফর্মুলা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এগুলো থেকে সরকার কেন বের হতে পারছে না। সমস্যাটা কোথায়?
প্রথমত, নীতি ও আদর্শগতভাবে সরকার যে ধারণাগুলো গ্রহণ করে এবং যে জায়গাগুলো বিবেচনায় নেয়, তারই ভিত্তিতে জ্বালানি খাতের সংস্কার বা পরিবর্তন হয়। সরকার তার নীতি ও আদর্শ বাস্তবায়ন উপযোগী লোক জোগাড় করে। বিগত সরকারের কর্মকর্তাদের স্থলে তারা প্রতিস্থাপিত হবে। জ্বালানি খাত উন্নয়নে সরকারের ভিন্ন কোনো আদর্শ বা দর্শন নেই। কারণ বর্তমান সরকার বিগত সরকারের আদর্শ ও দর্শনের উত্তরসূরি। ফলে আগের লোকজন যদি থেকেই থাকে, তাহলে তো কোনো ক্ষতি নেই। বরং তারা অভিজ্ঞ। সরকারের আগের দর্শনচর্চা ও আদর্শ অনুযায়ী বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত পরিচালনার ক্ষেত্রে তারা তাদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে পারছে এবং যথাযথভাবে সরকারের কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। সেটাই সরকার মনে করছে বা মনে করাই স্বাভাবিক। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে তারা এসব কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট আছে এবং তাদের সংশ্লিষ্ট রাখা হয়েছে।
এ সরকার কীভাবে ভোক্তাবান্ধব হয়ে জ্বালানি সুবিচার নিশ্চিত করতে পারে?
আমাদের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, দলীয় সরকার যখন ক্ষমতায় থাকে বা আসে, তখন বিশেষ বিশেষ বিষয় গুরুত্ব পায়। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য, দলীয় বিবেচনায় বা দলীয় স্বার্থে ভোক্তাস্বার্থবিরোধী এবং জ্বালানি খাতে জ্বালানি অপরাধ সম্পর্কিত কার্যক্রম ও জ্বালানি সুবিচার থেকে ভোক্তাদের বঞ্চিত হতে হয় এমন সব কার্যক্রম দলীয় স্বার্থে এবং দলীয় বিবেচনায় তারা করে থাকে। কিন্তু বর্তমান সরকারের এমন কোনো দলীয় পরিচয় নেই যে একজন উপদেষ্টা আরেকজন উপদেষ্টার সঙ্গে তেমন কোনো পরিচয়ে পরিচিত বা স্বার্থসংঘাতযুক্ত। সুতরাং দলীয় সরকারের মতো তারা কোনো সীমাবদ্ধতায় আবদ্ধ নন। তাদের ভোক্তাবান্ধব হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক। অসাধু ব্যবসাবান্ধব হওয়া বা ব্যবসায়ী হয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের স্বার্থ সংরক্ষণের দায় তাদের নেই। সুতরা তাদের পক্ষেই সম্ভব, ভোক্তাস্বার্থ সংরক্ষণ করা এবং জ্বালানি সুবিচার নিশ্চিত করে ভোক্তাদের জ্বালানি অধিকার সংরক্ষণ নিশ্চিত করা। আমরা মনে করি, এ সরকার জনসাধারণের প্রত্যাশা পূরণের জন্য দেরিতে হলেও জনস্বার্থসম্মত ব্যবস্থা গ্রহণে এগিয়ে আসবে। যদি জনগণ সেই জায়গা থেকে সোচ্চার হয় এবং তাদের চাপে রাখে, তাহলে দ্রুতই তাদের অবস্থানের পরিবর্তন হবে এবং বাণিজ্যিক নয়, লুণ্ঠনমুক্ত সেবাধর্মী জ্বালানি রূপান্তর ঘটবে।