বৈষম্য
বাড়বে
সেবা
সুযোগেও।
একটা
ছোট্ট
উদাহরণ
দিই।
শিক্ষার
সব
পর্যায়ে
তথ্যপ্রযুক্তি
ব্যবহারের
মাধ্যমে
শিক্ষা
দান
চলবে
আগামী
দিনগুলোতে।
কিন্তু
এ
প্রযুক্তি
ধনী
গৃহস্থালিতে
যতখানি
লভ্য,
দরিদ্র
গৃহস্থালিতে
ততখানি
নয়,
নগর
অঞ্চলে
এর
প্রাপ্তি
যতখানি
সহজ,
গ্রামাঞ্চলে
ততখানি
নয়।
সুতরাং
করোনার
কারণে
শিক্ষায়
একটি
অন্তর্নিহিত
বৈষম্যের
সৃষ্টি
হবে।
পরবর্তী
পর্যায়ে
কর্মসংস্থান
ও
আয়ের
ক্ষেত্রেও
একটি
অসমতার
জন্ম
হবে।
অসমতার প্রকোপ
বেশি
করে
পড়বে
কতগুলো
বিশেষ
জনগোষ্ঠীর
ওপরে।
রাষ্ট্রের
সম্পদ
সংকোচনের
ফলে
বৃদ্ধ
ও
প্রতিবন্ধীদের
মতো
নাজুক
গোষ্ঠীগুলোকে
প্রয়োজনীয়
সাহায্য
দেয়া
যাবে
না।
ফলে
তারা
আরো
বিপাকে
পড়বে।
নারীরাও
অসমভাবে
প্রভাবিত
হচ্ছেন
করোনা
দ্বারা।
প্রথমত,
ঘরের
অভ্যন্তরে
গৃহকর্ম
ও
সেবামূলক
কাজের
চাপ
নারীদের
ওপর
বেড়ে
গেছে।
অবরুদ্ধ
অবস্থায়
ঘরের
মধ্যে
মতানৈক্য,
সংঘাত,
খিটিমিটি
স্বাভাবিকভাবেই
বেড়ে
গেছে।
এর
সঙ্গে
সঙ্গে
নারীদের
বিরুদ্ধে
গৃহাভ্যন্তরীণ
সহিংসতাও
বিস্তৃত
হয়েছে।
এ
জাতীয়
কর্মকাণ্ড
সহিংসতার
সংস্কৃতিকে
আরো
জোরদার
করতে
পারে।
দ্বিতীয়ত,
নারীদের
একটি
বড়
অংশ
কাজ
করে
পোশাক
শিল্পে
ও
অপ্রাতিষ্ঠানিক
খাতে।
সুতরাং
করোনা
সংকটের
নেতিবাচক
প্রভাব
তাদের
ওপরই
বেশি
পড়বে।
তৃতীয়ত,
করোনার
কারণে
স্বাস্থ্য
খাতের
মূল
লক্ষ্য
যখন
এ
অতিমারী,
স্বাভাবিকভাবেই
নারীদের
স্বাস্থ্যসেবার
নানান
দিক,
যেমন
নারীর
প্রজনন
স্বাস্থ্য
গুরুত্বের
দিক
থেকে
স্বাস্থ্য
অগ্রাধিকার
পাবে
না।
করোনা সংকটকালে
বাংলাদেশে
দুটো
বিষয়
মুখ্য।
একটি
হচ্ছে
দরিদ্র
জনগোষ্ঠীকে
বাঁচিয়ে
রাখা
এবং
অন্যটি
দেশের
সামগ্রিক
অর্থনীতিকে
চাঙ্গা
রাখা।
প্রায়ই
দুটো
বিষয়কে
একে
অন্যের
বিপরীতে
উপস্থাপন
করা
হচ্ছে।
সংকটের
কারণে,
অর্থনৈতিক
মন্দার
কারণে
এবং
সম্পদের
অপ্রতুলতার
কারণে
অনুমিত
হচ্ছে
যে
দুটোই
একসঙ্গে
অর্জিত
হতে
পারবে
না।
সেই
সঙ্গে
প্রচ্ছন্ন
অনুমান
হচ্ছে
যে
বিষয়
দুটো
পারস্পরিক
দ্বন্দ্বমূলক—এর
একটিকে
বেছে
নিতে
হবে
অন্যটির
বিপরীতে।
সুতরং
স্বাভাবিকভাবেই
প্রশ্ন
উঠছে
কোনটি
আমরা
করব
দরিদ্র
জনগোষ্ঠীকে
বাঁচাব,
না
অর্থনীতিকে
বাঁচাব।
আমার মনে
হয়
বিষয়টিকে
একটি
ভ্রান্তিমূলক
প্রেক্ষিত
থেকে
উপস্থাপন
করা
হচ্ছে।
বিষয়টি
‘কোনটিকে
বাদ
দিয়ে
কোনটি
করব’
নয়—দুটোই
করতে
হবে।
প্রশ্নটি
হচ্ছে
অগ্রাধিকারের—কোনটি
এ
মুহূর্তে
করতে
হবে
এবং
কোনটি
তার
পরে
করতে
হবে।
বিষয়
দুটো
পরস্পরবিরোধী
নয়,
বিষয়
দুটো
পরস্পরের
সঙ্গে
সম্পৃক্ত।
এর পরিপ্রেক্ষিতে
আগামী
বাজেটে
সবচেয়ে
অগ্রাধিকার
দিতে
হবে
‘মানুষ
বাঁচানোর’।
এ
সংকটকালে
দেশের
দরিদ্র
জনগোষ্ঠীর
অস্তিত্ব
সংকটাপন্ন।
তাদের
কোনো
কাজ
নেই,
তাদের
কোনো
আয়
নেই,
ঘরে
তাদের
খাদ্য
নিঃশেষিত।
তারা
‘দিন
এনে
দিন
খায়’।
নিজেদের
বাঁচিয়ে
রাখার
মতো
তাদের
কোনো
সঞ্চয়
নেই।
এ
মুহূর্তে
তাদের
জন্য
দুটো
জিনিস
করা
অত্যাবশ্যকীয়—তাদের
খাদ্যনিরাপত্তা
সুনিশ্চিত
করা
এবং
তাদের
নগদ
অর্থ
প্রদান।
যেমন
প্রতিটি
মানুষের
জন্য
প্রয়োজনীয়
পরিমাণ
চাল
ও
ডাল
দেয়া
যেতে
পারে।
বর্তমানে
স্থিত
নানান
কাঠামো
ব্যবহার
করে
তা
করা
যেতে
পারে।
জানি,
নানান
দুর্নীতির
কথা
সেখানে
উঠবে।
সেনাবাহিনীকে
কি
এ
ব্যাপারে
ব্যবহার
করা
যায়
না?
নগদ অর্থ
প্রদানের
ক্ষেত্রে
বিদ্যমান
ব্যবস্থাদি
ব্যবহার
করা
যেতে
পারে।
এক,
দেশে
প্রচলিত
বয়স্ক
ভাতা,
বিধবা
ভাতা
ও
অন্যান্য
ভাতার
মাধ্যমে
নগদ
অর্থায়ন
বাড়ানো
যেতে
পারে।
এখন
এসব
ভাতার
পরিমাণ
জনপ্রতি
৫০০
টাকা
থেকে
৮০০
টাকার
মধ্যে।
এসবের
পরিমাণ
৫০০০
টাকায়
উন্নীত
করা
দরকার।
এর
বাইরেও
অন্যান্য
দুস্থ
জনগোষ্ঠীকে
অর্থায়নের
জন্য
নানান
কাঠামো
ব্যবহার
করা
যায়।
এর
জন্য
একটি
অগ্রাধিকার
তহবিল
এখনই
বাস্তবায়ন
করা
দরকার।
এর
জন্য
প্রয়োজনীয়
কাঠামো
ও
প্রক্রিয়া
গড়ে
তোলা
প্রয়োজন।
সুতরাং
পুরো
নজর
দিতে
হবে—‘মানুষ
বাঁচানোর’
জন্য।
এর
আর
কোনো
বিকল্প
বর্তমান
মুহূর্তে
নেই।
এটাই
এ
সময়ে
আমাদের
ধ্যান-জ্ঞান
হওয়া
প্রয়োজন।
প্রসঙ্গত
উল্লেখ্য
যে
খাদ্যনিরাপত্তাহীন
পরিবারগুলোর
জন্য
এক
মাসের
খাদ্য
সুরক্ষার
জন্য
৬
হাজার
কোটি
লাগবে
বলে
প্রাক্কলিত
হয়েছে।
আগামী
ছয়
মাসের
জন্য
লাগবে
৩৬
হাজার
কোটি
টাকা।
অর্থনৈতির
প্রণোদনার
জন্য
বরাদ্দ
টাকা
থেকে
এর
অর্থায়ন
করা
যেতে
পারে।
আমি
মনে
করি,
এ
মুহূর্তে
ওই
অর্থের
অংশ
দিয়ে
বর্তমানের
খাদ্যনিরাপত্তাহীন
পাঁচ
কোটি
মানুষের
অন্তত
আগামী
ছয়
মাসের
খাদ্য
সুরক্ষার
ব্যবস্থা
করা
হোক।
‘মানুষ
বাঁচানোর’
সঙ্গে
সঙ্গে
দৃষ্টি
দিতে
হবে
মধ্যমেয়াদে
‘অর্থনীতিকে
বাঁচানোর’।
এর
মূল
লক্ষ্য
হবে
অর্থনৈতিক
পুনর্বাসন
ও
পুনর্গঠন।
এর
নানান
উপাংশ
থাকতে
পারে।
এক,
অতি
দ্রুত
কৃষির
নানান
উপকরণ—যেমন
সার,
বীজ,
জল—কৃষকের
কাছে
পৌঁছানো।
তাদের
জন্য
সহজ
ঋণের
জোগান।
দুই,
ক্ষুদ্র
ও
মধ্যম
শিল্পের
জন্য
প্রণোদনা
এবং
তিন,
বড়
শিল্পকে
সহায়তা
প্রদান।
এসব ক্ষেত্রে
বাজেটে
তিনটি
বিষয়ের
ওপর
জোর
দিতে
হবে।
এক.
আমাদের
রফতানিযোগ্য
সামগ্রীর
ওপরে—যেমন
পোশাক
শিল্প
বা
জনশক্তির
ওপর
বিশেষ
নজর
দিতে
হবে।
দুই.
লক্ষ
রাখতে
হবে
যাতে
কৃষি
বা
ক্ষুদ্র
শিল্পের
জন্য
বরাদ্দকৃত
অর্থ
কায়েমি
স্বার্থবাদীদের
দ্বারা
কুক্ষিগত
না
হয়
এবং
তিন.
দুর্নীতি
রোধ
করতে
হবে।
এ
ব্যাপারে
এখনই
মনোযোগ
দিয়ে
এসব
প্রতিহত
করার
জন্য
মোর্চা
গঠন
করতে
হবে।
তবে
শঙ্কা
রয়েছে
দীর্ঘ।
আমাদের
দেশেও
ভবিষ্যৎ
খাদ্য
সংকট
এড়ানোর
চিন্তাভাবনা
এখনই
হওয়া
দরকার।
আমাদের
কৃষি
ব্যবস্থা
আমাদের
খাদ্য
চাহিদা
মেটানোর
ক্ষমতা
রাখে।
যথাযোগ্য
প্রণোদনার
মাধ্যমে
সেই
সম্ভাবনার
সর্বোচ্চকরণ
দরকার।
বাংলাদেশের মাননীয়
প্রধানমন্ত্রী
করোনা
সংকটের
পরিপ্রেক্ষিতে
দেশের
অর্থনীতিকে
চাঙ্গা
রাখার
উদ্দেশ্যে
বিরাট
অঙ্কের
একটি
প্রণোদনা
তহবিল
ঘোষণা
করেছেন।
এ
কাঠামোর
মূল
অংশে
রয়েছে
৬৭,৭৫০
টাকার
অর্থায়ন।
এর
সঙ্গে
রফতানিমুখী
খাতের
জন্য
ক’দিন
আগের
ঘোষিত
৫০০০
কোটি
টাকার
অর্থায়ন
যোগ
করলে
সামগ্রিক
বরাদ্দের
পরিমাণ
দাঁড়াবে
৭২,৭৫০
হাজার
কোটি
টাকা
(প্রায় ৯
বিলিয়ন
ডলার)।
এ
বরাদ্দের
মধ্যে
শিল্প
ও
সেবা
খাতকে
সহায়তা,
ক্ষুদ্র
ও
কুটির
শিল্পকে
সাহায্য,
রফতানি
বাণিজ্যে
প্রণোদনা
ইত্যাদি
রয়েছে।
ক’দিন
আগেই
মাননীয়
প্রধানমন্ত্রী
এ
সংকটের
ফলে
উদ্ভূত
সাধারণ
মানুষের
দুঃখ-কষ্ট
লাঘবের
জন্য
একটি
তহবিলের
কথা
বলেছিলেন,
যার
মধ্যে
ছিল
বিনা
খরচে
খাদ্য
বিতরণ,
১০
টাকায়
চাল
বিক্রি,
নগদ
অর্থ
বিতরণ
এবং
বয়স্ক
ভাতা,
বিধবা
ভাতা
ও
নির্যাতিত
নারীদের
ভাতা।
অবশ্য
এ
কাঠামোর
জন্য
কোনো
অর্থায়নের
পরিমাণ
নির্দিষ্ট
করা
হয়নি।
এ দুটো
মহতী
উদ্যোগের
জন্যই
মাননীয়
প্রধানমন্ত্রী
ধন্যবাদার্হ।
এমন
তহবিলের
প্রয়োজন
ও
গুরুত্ব
প্রশ্নাতীত।
এ
জাতীয়
দূরদৃষ্টিমূলক
ব্যবস্থার
জন্য
মাননীয়
প্রধানমন্ত্রীকে
অভিনন্দন
জানাই।
তবে
তহবিলদ্বয়ের
অগ্রাধিকার,
সময়োপযোগিতা
ও
প্রাসঙ্গিকতার
ব্যাপারে
চিন্তাভাবনা
করার
সুযোগ
আছে।
আগামী বাজেটে
সবচেয়ে
বেশি
প্রয়োজন,
প্রাসঙ্গিক
ও
সময়োপযোগী
হবে
সামাজিক
সুরক্ষার
ওপর
গুরুত্ব।
এর
পরিপ্রেক্ষিতে
এ
সময়ে
অগ্রাধিকার
দিতে
হবে—বিনা
খরচে
খাদ্য
বিতরণ,
১০
টাকায়
চাল
বিক্রি,
নগদ
অর্থ
বিতরণ
এবং
বয়স্ক
ভাতা,
বিধবা
ভাতা
ও
নির্যাতিত
নারীদের
ভাতা।
বর্তমানে
বয়স্ক
ভাতা,
বিধবা
ভাতা
ও
অন্যান্য
ভাতার
পরিমাণ
জনপ্রতি
৫০০
টাকা
থেকে
৮০০
টাকার
মধ্যে।
এ
অংক
লজ্জাজনক।
সব
ভাতার
পরিমাণ
ন্যূনতম
১০০০
টাকা
করা
দরকার।
তিন.
এ
তহবিলকে
এখনই
অগ্রাধিকার
ভিত্তিতে
বাস্তবায়ন
করা
দরকার।
এর
জন্য
প্রয়োজনীয়
কাঠামো
ও
প্রক্রিয়া
গড়ে
তোলা
প্রয়োজন।
নগদ
অর্থ
সাহায্যের
মাধ্যমে
দরিদ্র
কৃষক,
গ্রামীণ
শ্রমিক,
বিধবা
ও
অন্যদের
সাহায্য
করতে
হবে।
আগামী দিনগুলোতে
কোনো
এক
সময়ে
করোনা
সংক্রমণ
ও
মৃত্যু
শেষে
অর্থনীতির
পুনর্বাসন
ও
পুনর্গঠন
সবচেয়ে
গুরুত্বপূর্ণ
হয়ে
উঠবে।
অর্থনৈতিক
প্রণোদনার
ক্ষেত্রে
লক্ষ
রাখতে হবে
যে
ক্ষুদ্র
ব্যবসায়ীদের
অংশটুকু
যেন
বৃহৎ
ব্যবসা
গিলে
না
ফেলে।
সেই
সঙ্গে
ব্যাংকসহ
বৃহৎ
শিল্পকে
উদ্ধার
করা
ও
বাঁচিয়ে
রাখার
জন্যই
এ
প্রণোদনা
যেন
ব্যবহূত
না
হয়।
এ
রকম
বরাদ্দের
ক্ষেত্রে
দুর্নীতির
সুযোগও
বেশি।
দৃশ্যমানতা
ও
দায়বদ্ধতা
ভিন্ন
এ
তহবিল
তার
অভীষ্ট
লক্ষ্য
অর্জন
করতে
পারবে
না।
সম্পদ
নষ্টের
বিরুদ্ধে
কি
জাতীয়
কাঠামো
কার্যকর
হবে,
তা
নিয়ে
চিন্তাভাবনার
প্রয়োজন
আছে।
এ
তহবিল
থেকে
যারা
অর্থ
নেবেন,
তাদের
ঋণ
পরিশোধের
ব্যবস্থা
নিশ্চিত
করতে
হবে।
সেই
জন্য
ঋণ
বীমার
কথা
চিন্তা
করা
যেতে
পারে।
করোনার কারণে
ব্যক্তি
পর্যায়ে
অনেক
ইতিবাচক
কাজ
আমরা
করছি।
যেমন
আমরা
সবাই
সবার
হাল-হকিকতের
খোঁজ
নিচ্ছি।
কে
কেমন
আছি,
কারো
কিছু
লাগবে
কিনা
সব
জানতে
চাচ্ছি
এবং
কোনোভাবে
সাহায্য
করতে
পারি
কিনা,
তাও
জিজ্ঞেস
করছি।
খবর
ও
তথ্যের
আদান-প্রদান
করছি
এবং
নানা
বিষয়ে
নানান
মানুষকে
সাবধানও
করে
দিচ্ছি।
এমন
সৌহার্দ্য,
হূদ্যতা,
সংবেদনশীলতা
ক’দিন
আগেও
ছিল
না।
বলা
চলে,
করোনা
সংকট
ও
আতঙ্ক
আমাদের
সামাজিক
একাত্মতাকে
বাড়িয়ে
দিয়েছে।
দ্বিতীয়ত, পারিবারিক
বন্ধনও
আরো
দৃঢ়
হয়েছে
করোনার
কারণে।
সবাই
আটকা
পড়ে
আছি
বাড়ির
মধ্যে।
করোনার
পরিপ্রেক্ষিতে
মা-বাবার
ভঙ্গুরতার
কারণে
তাদের
প্রতি
অনেক
বেশি
যত্নবান
হচ্ছি,
ভাই-বোনদের
নতুন
করে
চিনতে
পারছি,
শিশুদের
দেখছি
বড়
মায়াময়
চোখে।
অদ্যাবধি
যাপিত
জীবনের
ব্যস্ততাকে
বিরতি
দিয়ে
পারিবারিক
জীবনকে
যেন
নতুন
চোখে
দেখছি—শিশুদের
সঙ্গে
খেলছি,
গল্প
করছি
পরিবারের
নানা
সদস্যের
সঙ্গে,
ঘর-বাড়ির
আশপাশটাও
নতুন
করে
দেখছি।
বড়
টান
বোধ
করছি
প্রিয়জনদের
প্রতি।
তৃতীয়ত, ঘরের
মধ্যে
আটকা
পড়ে
অন্তত
তিনটি
ব্যাপারে
আমাদের
নতুন
করে
নানান
উপলব্ধি
হচ্ছে।
এক.
বাড়ির
মেয়েরা
কী
পরিমাণ
কাজ
করে—ঘরে-বাইরে।
দুই.
ঘরের
কাজে
যারা
আমাদের
সাহায্যকারী,
আমাদের
যাপিত
জীবনের
চাকা
সচল
রাখতে
তাদের
ভূমিকা
যে
কত
বড়।
তিন.
বহু
বই
বাড়িতে
রয়ে
গেছে
বহুদিন,
পড়া
হয়নি;
বহু
কথা
মনে
জমে
আছে
বহুদিন,
বলা
হয়নি;
বহু
কাজ
সামনে
জমে
আছে
বহুদিন,
করা
হয়নি।
এখনই
হয়তো
সময়
সেগুলো
সম্পন্ন
করার।
চতুর্থত, থমকে
যাওয়া
পৃথিবী,
জীবন
ও
মানুষের
কারণে
কমে
গেছে
বায়ু
ও
শব্দদূষণ।
আকাশের
দিকে
তাকালে
কি
আর
একটু
ঝকঝকে
মনে
হয়
না,
রাতে
কি
তারাদের
আর
একটু
উজ্জ্বল
দেখা
যায়
না,
বাতাসটুকুকে
কি
আর
একটু
নির্মল
বোধ
হয়
না?
মনে
কি
হয়
না
যে
নিস্তব্ধতারও
একটি
শব্দ
আছে,
যা
বহুকাল
শুনিনি?
পঞ্চমত, করোনা
সংকটে
মানবজাতি
নতুন
করে
তিনটি
সত্যি
হূদয়ঙ্গম
করতে
পারল—এক.
মাতা
ধরিত্রীর
তুলনায়
মানুষ
খুবই
ক্ষুদ্র;
দুই.
প্রকৃতির
রোষের
কাছে
সে
বড়
অসহায়;
তিন.
প্রকৃতির
কু
এবং
অপব্যবহার
করলে
সে
কোনো
না
কোনোভাবে
এর
বদলা
নেবেই।
বর্তমান সময়ের
সংকট,
ব্যাপ্তি,
সময়রেখা
দেখে
আমার
মনে
হচ্ছে,
বিশ্বে
এক
‘নতুন
স্বাভাবিকতা’
আবির্ভূত
হচ্ছে,
অন্তত
মধ্যমেয়াদে।
এ
নতুন
স্বাভাবিকতা
প্রভাব
ফেলবে
ব্যক্তি
জীবনে,
সমাজ
জীবনে
এবং
রাষ্ট্রীয়
জীবনেও।
ফলে
মানুষের
মানসিকতা,
দৃষ্টিভঙ্গি,
ব্যবহার
যেমন
বদলাবে,
তেমনি
বদলাবে
মানুষের
চারপাশ,
পারিপার্শ্বিকতা।
এখন রাস্তায়
বেরুলে
তিনটি
বিষয়
বড়
চোখে
পড়ে।
এক.
সামাজিক
জনদূরত্ব
বজায়ের
জন্য
শারীরিক
দূরত্ব
নিশ্চিত
করা,
দুই.
হাতে
দস্তানা
ও
মুখে
মুখাবরণী
পরিধান
এবং
তিন.
ন্যূনতম
সময়ে
অপরিহার্য
কাজগুলো
শেষ
করা।
এসব
মিলিয়ে
আগামীতে
হয়তো
নিম্নোক্ত
বিষয়গুলোই
মানুষের
কাছে
নতুনভাবে
স্বাভাবিক
হয়ে
যাবে।
বহু প্রাতিষ্ঠানিক
ও
সামাজিক
আচার-অনুষ্ঠানের
জন্যও
আমরা
মানুষের
শারীরিক
উপস্থিতি
এড়িয়ে
চলব।
সেগুলো
হয়তে
সম্পন্ন
করা
হবে
সামাজিক
মাধ্যমগুলো
ব্যবহার
করে।
এই
যেমন,
জন্মদিন
পালন,
বিবাহ,
বিভিন্ন
দিন
উদযাপন।
লোক
উপস্থিতির
পরিবর্তে
যন্ত্র
ব্যবহারের
মাধ্যমে
এগুলো
সম্পন্ন
করতে
অনেক
বেশি
স্বাচ্ছন্দ্য
ও
স্বস্তি
বোধ
করবে
লোকজন।
প্রাতিষ্ঠানিক
কর্মকাণ্ডের
ব্যাপারেও
সেই
একই
কথা।
বাজার
হাট
বলে
বহু
স্থানগত
প্রতিষ্ঠান
হয়তো
বিলুপ্ত
হয়ে
যাবে।
তার
জায়গায়
আরো
বেশি
করে
স্থান
করে
নেবে
সামাজিক
মাধ্যম-নির্ভর
ক্রয়-বিক্রয়।
উপর্যুক্ত একটি
চালচিত্র
কি
সত্যিই
হতে
পারে,
নাকি
তা
আমার
উর্বর
চিন্তার
ফসল?
৯/১১-এর
পরে
বিমানবন্দরের
সব
রকমের
কঠোর
নিরাপত্তা
তল্লাশি
এখন
আমাদের
জন্য
স্বাভাবিক
হয়ে
গেছে।
আমরা
স্বাভাবিকভাবে
জুতো
জোড়া
খুলে
ফেলি,
সেলফোন
বের
করে
নিই,
প্রক্ষালন
ও
রূপচর্চার
নির্দিষ্ট
আকারের
জিনিসপত্র
ছোট
থলেতে
ভরে
নিই।
২০০১-এর
আগে
এগুলোর
কিছুই
ছিল।
কিন্তু
এখন
এটাই
স্বাভাবিক
এবং
আমরা
তা
মেনে
নিয়েছি।
মাঝে মাঝে
মনে
হয়,
মানুষের
সঙ্গে
মানুষের
প্রীতির,
প্রেমের
আদরের,
সোহাগের
যেসব
প্রক্রিয়া
আমরা
অহরহ
ব্যবহার
করি,
তা
কি
ধীরে
ধীরে
বিলীন
হয়ে
যাবে?
আমরা
কি
আর
করমর্দন
করব
না
সুহূদের
সঙ্গে,
বুকে
জড়িয়ে
ধরব
না
প্রিয়জনকে?
বয়োজ্যেষ্ঠ
কি
আর
স্নেহের
হাত
রাখবে
না
বয়োকনিষ্ঠের
মাথায়?
প্রেমিক-প্রেমিকা
আর
চুম্বনে
আবদ্ধ
হবেন
না?
হয়তো
এসবই
একদিন
গল্প-গাথায়
পরিণত
হবে।
হয়তো
এ
প্রজন্ম
কোনো
একদিন
গল্প
করবে
ভবিষ্যৎ
প্রজন্মের
কাছে,
‘জানো,
আমরা
না...’?
হয়তো!
বহু মৃত্যু,
বহু
ক্ষতি,
বহু
দুঃস্বপ্নের
স্মৃতি
পেরিয়ে
কোনো
একদিন
এ
সংকট
কেটে
যাবে।
সুন্দর
দিন
আবার
ফিরে
আসবে।
কিন্তু
তখন
আমরা
যেন
এ
সময়
ভুলে
না
যাই,
বিস্মৃত
না
হই,
বর্তমান
সংকটের
শিক্ষা
না
ভুলে
যাই।
কিন্তু
এ
মুহূর্তে
শুধু
বলি,
মানুষ,
নম্র
হও,
নত
হও
প্রকৃতির
কাছে,
নমিত
হও
মাতা
ধরিত্রীর
কাছে।
[শেষ]
সেলিম জাহান: ভূতপূর্ব পরিচালক, মানব উন্নয়ন প্রতিবেদন দপ্তর এবং দারিদ্র্য দূরীকরণ বিভাগ, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি, নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র