মস্তিষ্কের স্নায়ুতন্ত্রের
উত্তেজনা নিয়ে
ইদানীংকালের গবেষণার
ফলাফলের ওপর
ভিত্তি করে
মানুষের অর্থনৈতিক
আচরণের বিষয়ে
কিছু নতুন
ধারণা পাওয়া
যাচ্ছে। এর
ওপর ভিত্তি
করে নিউরোইকোনমিকস
বলে অর্থনীতির
একটা নতুন
ধারার গবেষণার
ক্ষেত্র তৈরি
হয়েছে।
দেখা গেছে
মানুষের ভাবাবেগ,
যা মস্তিষ্কের
সামনের অংশের
স্নায়ুতন্ত্রকে উত্তেজিত
করে, তা
অনেক সময়েই
পেছনের যুক্তিনির্ভর
অংশের সঙ্গে
যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন
করে দেয়।
ফলে অর্থনীতির
পাঠ্যপুস্তকে মানুষের
অর্থনৈতিক আচরণকে
যুক্তিভিত্তিক বলে
যে অনুমান
করা হয়,
বাস্তবে আবেগতাড়িত
হয়ে মানুষ
অনেক সময়ই
তেমন আচরণ
করে না।
যেমন অতিরিক্ত
আর্থিক লোভ
কী করে
অযৌক্তিক ঝুঁকি
নিতে মানুষকে
প্রলোভিত করে,
তা দিয়ে
বিশ্ব অর্থনীতির
আর্থিক খাত
ও শেয়ারবাজারের
বড় বড়
ধসের ঘটনার
ব্যাখ্যা করা
যায়।
তবে যে
কারণে প্রসঙ্গটির
অবতারণা, তা
হলো নিউরোসায়েন্সের
গবেষণার একটা
চমকপ্রদ নতুন
ফলাফল। অপ্রত্যাশিত
নতুন নতুন
অর্থপ্রাপ্তি স্নায়ুতন্ত্রের
যে বিশেষ
অংশকে উত্তেজিত
করে, মাদক
আসক্তিও সেই
অংশের সঙ্গে
সম্পৃক্ত। ধারণা
করা হচ্ছে,
এ ধরনের
অর্থপ্রাপ্তির লোভ
এমনকি কোকেইন
বা এ
ধরনের মাদক
সেবনের নেশার
মতো মারাত্মক
হয়ে যেতে
পারে। নেশাগ্রস্ত
মানুষকে আইনকানুন
দিয়ে বা
উপদেশ-পরামর্শ
দিয়ে সংশোধন
করা যায়
না, প্রয়োজন
তাদের পুনর্বাসনের
ব্যবস্থা। তাছাড়া
নেশাগ্রস্ত মানুষ
অন্যদেরও প্ররোচিত
করতে পারে
(সূত্র: Your
Money and Your Brain: How the New Science of Neuroeconomics Can Help Make You
Rich,’ author
Jason Zweig)।
আমাদের ব্যাংকিং
খাতের ইচ্ছাকৃত
ঋণখেলাপিরা কেন
বারবার একই
কাজ করেন
বা এ
খাতের অন্যান্য
লুটপাটের সঙ্গে
জড়িতদের কেন
নিবৃত্ত করা
কঠিন, তার
অন্তত একটা
আংশিক উত্তর
উপরোক্ত গবেষণা
থেকে মিলতে
পারে। তার
অর্থ, এরই
মধ্যে এভাবে
আসক্ত হয়ে
যাওয়া ব্যক্তিদের
পুনর্বাসন ছাড়া
শুধু আর্থিক
খাতের সংস্কার
দিয়ে সমস্যার
পুরো সমাধান
মিলবে না।
তবে বৈধ
পথে মুনাফা
অর্জনের নেশা
সফল উদ্যোক্তা
তৈরির মাধ্যমে
অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি
অর্জনে বড়
ভূমিকা রাখতে
পারে। পুঁজিবাদী
অর্থ ব্যবস্থায়
বড় বড়
শিল্পপতি অগাধ
ধনসম্পদের মালিক
হয়েও যে
আরো মুনাফা
অর্জনের নেশায়
সর্বক্ষণ তাড়িত
হন, বিগত
শতাব্দীর বিখ্যাত
অর্থনীতিবিদ জোসেফ
সুম্পুটার একে
এক ধরনের
জৈবিক তাড়না
বা অ্যানিমেল
স্পিরিট বলে
অভিহিত করেছিলেন।
আধুনিক নিউরোসায়েন্সের
গবেষণা থেকে
এখন এর
আরো বিজ্ঞানসম্মত
ব্যাখ্যা পাওয়া
গেল।
ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ: অর্থনীতিবিদ