অভিমত

গাছ কাটা ও লাগানোর জন্য চাই পরিবেশবান্ধব নীতিমালা

গাছ কাটা ও লাগানো বিষয়ে অবিলম্বে পরিবেশবান্ধব আইন, বিধি বা নীতিমালা প্রণয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। এ-সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানির পর বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ থেকে গত ৬ মে এ রুল দেয়া হয়। পরিবেশ সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, প্রধান বন

গাছ কাটা ও লাগানো বিষয়ে অবিলম্বে পরিবেশবান্ধব আইন, বিধি বা নীতিমালা প্রণয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। এ-সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানির পর বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ থেকে গত ৬ মে এ রুল দেয়া হয়। পরিবেশ সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, প্রধান বন সংরক্ষক ও আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। 

সারা দেশের তাপপ্রবাহের তীব্রতা কমাতে গাছ কাটা ও রোপণে পরিবেশবান্ধব আইন, বিধি বা নীতিমালা প্রণয়নের পদক্ষেপ নিতে গত ২ মে বিবাদীদের আইনি নোটিস দেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ। গাছ কাটা এবং রোপণে পরিবেশবান্ধব আইন, বিধি বা নীতিমালা প্রণয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পাঠানো আইনি নোটিসে সাড়া না দেয়া কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। এদিকে দীর্ঘমেয়াদি সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি নির্ধারণ করে নিয়মিত পরিবেশ তদারকির মাধ্যমে তাপপ্রবাহের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর জন্য একটি পরিকল্পনা তৈরি করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তাও জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালতে রিটের পক্ষে তানভীর আহমেদ নিজেই শুনানিতে অংশগ্রহণ করেন এবং রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাস গুপ্ত। 

অপরিকল্পিত নগরায়ণ, শিল্পায়ন, বনভূমি ধ্বংস, অকারণে বৃক্ষ নিধন, প্রাকৃতিক জলাশয় ভরাট, ইটভাটা, কলকারখানা ও যানবাহনের জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার, এল নিনোর প্রভাব প্রভৃতি কারণে বাংলাদেশে দিন দিন বাড়ছে তাপমাত্রা। উচ্চ তাপমাত্রার কারণে সৃষ্ট হিট ট্রোকে মারা যাচ্ছে মানুষ, গৃহপালিত হাঁসমুরগি, ব্যাহত হচ্ছে মাংস ও ডিমের উৎপাদন। শুধু কি তাই! এ অস্বাভাবিক উচ্চ তাপমাত্রার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে আমাদের কৃষিতে। এতে ফসলের জমিতে পোকামাকড় ও রোগবালাইয়ের আক্রমণ বাড়ছে। প্রজনন প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে। এপ্রিলে সাধারণ বোরো ধানের প্রজনন প্রক্রিয়া শুরু হয়। ধানের প্রজনন পর্যায়ে শীষ বের হওয়ার নয়দিন আগে তাপমাত্রা ৩৫ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ফুল ফোটা ও পরাগায়ন পর্যায়ে ১-২ ঘণ্টা বাযুমণ্ডলের তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি বা তারও বেশি হলে সাদা শীষ, সাদা স্পাইকলেট ও শীষে স্পাইকলেটের সংখ্যা কমে যাওয়ায় এবং চিটা সমস্যায় ধানের ফলনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। চলতি বছর এপ্রিল-মে মাসে উচ্চ তাপমাত্রাজনিত কারণে সারা দেশে প্রায় ৪৮ হাজার হেক্টর জমির বোরো ধান হিট শকে আক্রান্ত হয়েছে। সে কারণে প্রায় ১০-১২ হাজার হেক্টর জমির ধান সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। বাকি জমির ধান বিভিন্ন মাত্রায় ১০ থেকে ৮০ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উচ্চ তাপের ফলে সৃষ্ট তীব্র খরা থেকে ফসল রক্ষার জন্য কৃষককে অতিরিক্ত সেচ দিতে হয়েছে গ্রীষ্মকালীন সবজি, কাঁচামরিচ, বোরো ধান ও আখসহ বিভিন্ন ফসলে। উচ্চ তাপের কারণে আম ও লিচুর মুকুল ও গুটি ঝরে কম ক্ষতি হয়নি কৃষকের। এ কারণে আমের ফলন এ বছর ৮ থেকে ১০ শতাংশ হ্রাস পেতে পারে। টাকার অংকে যার পরিমাণ আনুমানিক ১১৫-১৪৮ কোটি টাকা।

বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা হ্রাসে গাছ লাগানো এবং বিনা কারণে গাছ কাটা থেকে বিরত থাকার কোনো বিকল্প নেই। ঠিক এমনি এক সময়ে হাইকোর্টের এ যুগান্তকারী রুল জারি অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক এবং সময়োপযোগী। তাই আমরা রুল প্রদানের মতো যুগান্তকারী ঘটনাকে স্বাগত জানাই। 

আমাদের দেশে গাছ কাটা এবং লাগানো নিয়ে কোনো নীতিমালা নেই। অথচ ফিনল্যান্ডে দেখা যায়, একটি গাছ কেউ কাটলে সেখানে তার পরিবর্তে তিনটি গাছ লাগাতে হয়। নীতিমালা না থাকার কারণে অনেকে বড় গাছের নিচে ছোট গাছের চারা লাগান। বৈদ্যুতিক তারের নিচে গাছ রোপণ করেন। দেয়ালঘেঁষে গাছ রোপণ করেন। নগরের সড়ক দ্বীপে বট গাছ লাগান। পানির স্পর্শে মারা যায় এমন গাছও লাগানো হয় খাল-বিল ও নদ-নদীর ধারের বন্যাপ্রবণ এলাকায়। আবার জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে—এ ধরনের গাছ লাগানো হয় উঁচু পাহাড়ি টিলায়। 

দেশে প্রতি বছর লাখ লাখ গাছ রোপণ করা হয় মহাধুমধামে। কিন্তু নীতিমালা না থাকার কারণে সেভাবে রোপিত গাছের পরিচর্যা করা হয় না। হয় না গাছের চারদিকে বেড়া দেয়া, গাছের গোড়ার আগাছা দমন করা। হয় না সময়মতো পানি দেয়া, উপরি সার প্রয়োগ ও খুঁটি দেয়া। অযত্নে অবহেলায় রোপণের কিছুদিনের মধ্যেই গরু-ছাগলের উৎকৃষ্ট খাদ্যে পরিণত হয় চারাগাছগুলো।

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার একটি প্রশস্ত পাকা রাস্তা আছে। রাস্তার দুধারে রোপণ করা হয় কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া, পলাশ প্রভৃতি সুদৃশ্য ফুলের গাছ। একদিন ওই রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় দেখা গেল—পলাশ ফুল গাছের পাতাগুলো বিছাপোকায় খেয়ে ফেলছে। সঙ্গে সঙ্গে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারকে বিষয়টি অবহিত করে পোকা দমনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে অনুরোধ জানালে তিনি জানান, গাছের পরিচর্যা ও পোকামাকড় দমনের জন্য কোনো বাজেট নেই। নেই কোনো লোকবল। তাই কিছু করা সম্ভব নয়। এমন চিত্র শুধু জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়েরই নয়, দেশের সব সরকারি, আধা সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের। বৃক্ষরোপণের বাজেট থাকবে কিন্তু পরিচর্যা, পোকা ও রোগ দমনের বাজেট থাকবে না। এ কেমন কর্মসূচি? এ ধরনের কর্মসূচি কোনো দিনই সফলতার মুখ দেখতে পারে না। এতে শুধু জনগণের অর্থের অপচয় হয় মাত্র। 

বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে চারা রোপণের পর কমপক্ষে ১০ বছর পরিচর্যা, পোকামাকড়, রোগবালাই দমনসহ অন্যান্য পরিচর্যার জন্য সুনির্দিষ্ট বাজেট থাকতে হবে। ওই বাজেটের সঠিক ব্যবহার হতে হবে। প্রতিটি সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে এমনকি এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রোপণকৃত বৃক্ষের বিবরণ একটি রেজিস্ট্রারে সংরক্ষণ করতে হবে। তাতে থাকবে গাছের নাম, রোপণকাল এবং পরিচর্যা সংক্রান্ত সব কর্মকাণ্ড। শুধু তা-ই নয়; প্রতি বছর জরিপ করে জীবিত বৃক্ষের একটি প্রতিবেদন তৈরি করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দাখিল করতে হবে। রোপণকৃত কোনো গাছ মারা গেলে সঙ্গে সঙ্গে ওই একই জাতের চারা দিয়ে শূন্যস্থান পূরণ করতে হবে। এজন্যও বাজেট বরাদ্দ থাকতে হবে। 

গ্লোবাল ক্লাইমেট ইনডেক্স রিপোর্ট-২০১০ অনুসারে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে শীর্ষ ১০টি ক্ষতিগ্রস্ত দেশের মধ্যে প্রথমেই অবস্থান করছে বাংলাদেশ। ফলে বাংলাদেশকে প্রতি বছর বিভিন্ন দুর্যোগের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। সিডর, আইলা, মহাসেন ও সম্প্রতি সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে চরম ক্ষতির শিকার হচ্ছে উপকূলের লাখ লাখ মানুষ। নদীভাঙনের কারণে হাজার হাজার মানুষ বাপ-দাদার চিরপরিচিত বসতবাড়ি হারিয়ে শহরের বস্তিতে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে বাড়ছে লবণাক্ততা। ফলে সুপেয় পানির অভাবে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে পেটের পীড়াসহ নানা রোগে। মারা যাচ্ছে গাছপালা। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষি। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোয় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত ৫০ বছরে দেশের তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ। তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আর্দ্রতা বাড়িয়ে দিচ্ছে। ফলে তাপমাত্রার তুলনায় বেশি গরম অনুভূত হচ্ছে। অধিক তাপমাত্রা জনজীবনে দুর্ভোগ বয়ে আনছে। এ বছর ৩০ এপ্রিল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় যশোরে। এটি গত ৩৫ বছরের মধ্যে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ১৭ এপ্রিল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় পাবনার ঈশ্বরদীতে। অন্যদিকে ১৯৭২ সালে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল রাজশাহীতে ৪৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত ২৮ এপ্রিল হিটস্ট্রোকে সারা দেশে শিক্ষক, জনপ্রতিনিধি, আওয়ামী লীগের নেতা, ব্যবসায়ী ও কৃষকসহ ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাবে দেশের ইতিহাসে এর আগে হিটস্ট্রোকে এত মানুষের মৃত্যুর রেকর্ড নেই।

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় বৃক্ষরোপণ, পরিচর্যা ও সংরক্ষণের বিকল্প নেই। বিকল্প নেই এ ব্যাপারে একটি জাতীয় নীতিমালা প্রণয়নের। গাছের উপকারের কথা বলে কি শেষ করা যাবে? গাছ আমাদের অন্ন, বস্ত্র ও ওষুধের উপকরণ জোগায়। বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা হ্রাস করে পরিবেশকে ঠাণ্ডা রাখে। গাছ বন্যপ্রাণীদের খাদ্য ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে সহায়তা করে। গাছ বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে। গাছ ভূমিক্ষয় ও নদীভাঙন রোধ করে। জানা যায়, বছরে একটি পূর্ণবয়স্ক বড় গাছ বাতাস থেকে ২৭ কেজির অধিক ক্ষতিকর কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করে এবং ১০টি শীততাপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের কাজ করে। একটি পূর্ণবয়স্ক বৃক্ষ ১০ জন মানুষের বার্ষিক অক্সিজেনের চাহিদা পূরণ করে। শত শত টন কার্বন শোষণের মাধ্যমে গাছপালা বায়ুদূষণ রোধ করে। বৃক্ষরাজি শব্দ দূষণ রোধ করে। এক হেক্টর পরিমাণ মাঝারি বন ১০ ডেসিবল শব্দ হ্রাস করতে পারে। 

বজ্রপাত নিরোধে তাল গাছ রোপণ করে এরই মধ্যে সুফল পেয়েছে থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম। আর এজন্যই বজ্রপাতের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে দেশব্যাপী তালগাছ রোপণের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ সুগার ক্রপ রিচার্স ইনস্টিটিউট। তাল গাছ শুধু বজ্রপাতই রোধ করে না। তাল গাছের রস থেকে তালমিছরি ও গুড় তৈরি হয়। 

গাছ কাটা ও লাগানোর জন্য জাতীয় নীতিমালা প্রণয়নের জন্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীকে সভাপতি করে দেশের প্রখ্যাত উদ্ভিদবিজ্ঞানী, উদ্যানতত্ত্ববিদ, বৃক্ষরোপণবিদ, বন গবেষক, মৃত্তিকাবিজ্ঞানী, নগর পরিকল্পনাবিদ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বন বিভাগ এবং স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে জাতীয় পর্যায়ে একটি কমিটি গঠন করা যেতে পারে। কোন স্থানে কী গাছ লাগাতে হবে? কীভাবে লাগাতে হবে? গাছ থেকে গাছের দূরত্ব, গর্ত তৈরি, গর্তে সার প্রয়োগ, গাছের চারদিকে বেড়া দেয়া, রোপিত গাছের পরিচর্যা ও সংরক্ষণ, মৃত গাছের সংখ্যা ও শূন্যস্থান পূরণ, প্রতি বছর গাছের সংখ্যা জরিপ এবং গাছ কাটার নিয়ম-কানুন নীতিমালায় সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকতে হবে।

নদীর মতো বৃক্ষকে জীবন্ত সত্তা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে। এ কারণে কেউ বৃক্ষ নিধন করলে অথবা বৃক্ষের ক্ষতি সাধন করলে তাকে বিচারের সম্মুখীন হতে হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় আইনও প্রণয়ন করতে হবে। যেহেতু বৃক্ষের প্রাণ আছে, তাই কেউ বৃক্ষের গায়ে পেরেক ঢুকিয়ে সাইনবোর্ড, বিলবোর্ড লাগাতে পারবে না। কেউ এ কাজ করলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে এবং এর জন্য শাস্তির ব্যবস্থা থাকতে হবে। গাছ কাটা, রোপণ, গাছের পরিচর্যা ও সংরক্ষণ বিষয়ে নীতিমালা বাস্তবায়নে এবং বৃক্ষরোপণ কাজে মানুষকে উদ্বুদ্ধকরণের জন্য জাতীয় পর্যায়ের কমিটির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জেলা, উপজেলা, মহানগর, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে অনুরূপ কমিটি গঠন করতে করা যেতে পারে।

নিতাই চন্দ্র রায়: পরিচালক, কৃষি প্রযুক্তি কেন্দ্র, ত্রিশাল, ময়মনসিংহ

আরও