অভিমত

গম আবাদের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়

বিশ্বের অন্যতম দানাদার খাদ্যশস্য গমের অবস্থান বাংলাদেশে দ্বিতীয়। স্বাধীনতার পর ধানের মতো গম উৎপাদন এলাকা ক্রমান্বয়ে বাড়লেও নানা কারণে আশানুরূপ বাড়েনি। ১৯৭১-এ দেশে চাল উৎপাদন ছিল প্রায় এক কোটি টন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ৩ কোটি ৮৭ লাখ টনে। কিন্তু গম উৎপাদন ১৯৯৮-৯৯ অর্থবছরে হয়েছিল প্রায় ১৯ লাখ ৮ হাজার টন, পরবর্তী সময়ে ১২ লাখ টনের কাছাকাছি এসে

বিশ্বের অন্যতম দানাদার খাদ্যশস্য গমের অবস্থান বাংলাদেশে দ্বিতীয়। স্বাধীনতার পর ধানের মতো গম উৎপাদন এলাকা ক্রমান্বয়ে বাড়লেও নানা কারণে আশানুরূপ বাড়েনি। ১৯৭১- দেশে চাল উৎপাদন ছিল প্রায় এক কোটি টন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় কোটি ৮৭ লাখ টনে। কিন্তু গম উৎপাদন ১৯৯৮-৯৯ অর্থবছরে হয়েছিল প্রায় ১৯ লাখ হাজার টন, পরবর্তী সময়ে ১২ লাখ টনের কাছাকাছি এসে ঘুরপাক খাচ্ছে। অথচ সকালের নাশতা থেকে বিকালের হালকা খাবারের অনেক উপকরণে রয়েছে গমের ব্যবহার। দুপুরে বা রাতে, অনেকের খাবারের থালায় প্রাধান্য বজায় রাখে গমের আটার রুটি বা পরোটা। ভাতের চেয়ে রুটির খাদ্য পুষ্টিমান বেশি এবং স্বাস্থ্যের জন্যও ভালো। ইদানীং অসংক্রামক রোগ ডায়াবেটিসের বিস্তার ঠেকাতে ভাতের আদর্শ বিকল্প হিসেবে পুষ্টিবিদ ডাক্তারের পরামর্শ আটার রুটি। গমের চাহিদা আমদানি প্রতিনিয়ত বাড়ায় দেশে এর উৎপাদন বৃদ্ধি এখন সময়ের দাবি।

গম নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়ার ফসল। এটি মাঝারি তাপমাত্রা কম আর্দ্র থেকে মৃদু শুষ্ক অবস্থায় ভালো জন্মে। নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে গ্রীষ্মকালে এবং মাঝারি উষ্ণ অঞ্চলে শীতকালে এর চাষ হয়। অংকুরোদ্গম, অঙ্গজ বৃদ্ধি বিকাশের জন্য দৈনিক গড় তাপমাত্রা ১৫-২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস উত্তম, ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের অধিক তাপমাত্রা ক্ষতিকর। গম যদিও খরাসহিষ্ণু, তবে বৃদ্ধি থেকে শীষ আসার সময়ে তুলনামূলক আর্দ্রতার প্রতি সংবেদনশীল। দানার আকার গুণগত মান বৃদ্ধিতে পরিপক্বকালে শুষ্ক, রৌদ্রোজ্জ্বল দিন এবং অপেক্ষাকৃত শীতল রাত সহায়ক। বৃদ্ধিকালে মোটামুটি ৫০০ থেকে ৯০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত বা সেচ উপযোগী। দেরিতে বীজ বপনে জমির আর্দ্রতা কমে চারার সংখ্যা হ্রাস পায়।

স্বাধীনতার পর আমদানীকৃত গমের জাত বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) যাচাই-বাছাইয়ে উত্তীর্ণ হয়ে জাতীয় বীজ বোর্ড কর্তৃক ছাড়করণ শেষে বিএডিসির খামারে বর্ধন করে চাষী পর্যায়ে বিপণন করা হতো। মানসম্পন্ন ধান গমবীজ প্রত্যয়নের জন্য ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত বীজ অনুমোদন সংস্থা (এসসিএ) এখন বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি নামে সরকারের পক্ষে ঘোষিত ফসল ধান, পাট, কেনাফ, মেস্তা আখবীজের সঙ্গে গমবীজের মাঠ বীজমান পরীক্ষা করে সনদ প্রদানের দায়িত্বে নিয়োজিত। ২০১৭ সাল পর্যন্ত বিএআরআই (বারি) গমের নিজস্ব জাত উদ্ভাবন করেছে। সর্বশেষটি বারি গম ৩৩। তদন্তর ২০১৭ সাল থেকে গমের জাত প্রযুক্তির নিবিড় উন্নয়নে বারি থেকে জন্মলাভ করে বাংলাদেশ গম ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট। প্রতিষ্ঠান থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত উদ্ভাবিত ছাড়করণকৃত জাত যথাক্রমে ডব্লিউএমআরআই গম , ডব্লিউএমআরআই গম ডব্লিউএমআরআই গম ৩।

ফসল জমির প্রতিযোগিতা

খরিপ- মৌসুমে গ্রীষ্মকালীন মাঠ ফসল আউশ ধান পাট বিশাল এলাকা দখল করে। শরত্কালে খরিপ- মৌসুমের রোপা আমন ধান এবং বর্ষার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আগাম আলু অধিকাংশ এলাকার মাঠজুড়ে বিরাজ করে। আর কিছু এলাকায় আগাম রবি ফসলের আয়োজন চলে।

রবি মৌসুমের প্রধান তিনটি দানাদার খাদ্যশস্য বোরো ধান, গম ভুট্টা। এছাড়া অন্যতম অর্থকরী ফসলরূপে আলুর চাষাধীন জমিও ক্রমবর্ধমান। মাঠে আরো থাকে বিভিন্ন প্রকার ডাল, তৈলবীজসহ নানা ধরনের সবজি। গম ফসলকে রবি মৌসুমে বোরো ধান এবং অনেক প্রয়োজনীয় ফসলি জমির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হয়। গম বপনের উপযুক্ত সময় কার্তিকের শেষ থেকে অগ্রহায়ণের তৃতীয় (নভেম্বরের দ্বিতীয় থেকে ডিসেম্বরের প্রথম) সপ্তাহ পর্যন্ত। যেসব এলাকায় আমন ধান কেটে জমি তৈরিতে বিলম্ব হয়, সেখানে তাপসহিষ্ণু গমের জাত পৌষের প্রথম (ডিসেম্বরের তৃতীয়) সপ্তাহ পর্যন্ত সর্বশেষ বপন করা যায়। আরো বিলম্বে গম বপনে ক্রমান্বয়ে ফলন কমে আসে।

গম আবাদে চ্যালেঞ্জ

কম সেচের সুযোগসম্পন্ন দোআঁশ বেলে দোআঁশ মাটি গম চাষের উপযুক্ত। সেখানে ভূ-উপরস্থ সেচের পাশাপাশি গভীর অগভীর নলকূপের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ সেচ সুলভ হয়ে ওঠায় গমের প্রতিদ্বন্দ্বী উচ্চফলনশীল হাইব্রিড বোরো ধানের সম্প্রসারণ ঘটতে থাকে। কিছু এলাকা দখল করে নেয় আলু ভুট্টা।

বৈশ্বিক বিরূপ জলবায়ুর প্রভাবে দেশেও শীতকালের দৈর্ঘ্য তীব্রতার পরিমাণ হ্রাস গম ফসলে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। অনেক সময় অক্টোবর-নভেম্বরের অতিবৃষ্টি গম বপনের জমির জো আসার ক্ষেত্রে বিলম্ব ঘটায়। ফুল অবস্থায় ঝড়ো বাতাসে বা অত্যধিক উষ্ণতায় পরাগায়ণ বিপর্যয়ে পড়ে। দানা অপুষ্ট হয়। পরিপক্ব থেকে মাড়াইকালে গমের উষ্ণ শুষ্ক আবহাওয়ার প্রয়োজন। কখনো কখনো এমন পরিবেশ অনুপস্থিত থাকে। অকস্মাৎ কালবৈশাখীও ফলনের ক্ষতি করে।

ধান কাটা-মাড়াই যতটা সহজ, গম অতটা নয়। গমের পাতলা বীজাবরণ সহজেই বাতাস থেকে আর্দ্রতা শোষণ করে, এতে পোকার আক্রমণে এবং রোগ-জীবাণুর সংক্রমণে সংরক্ষণ গুণ বিনষ্ট হয়। সময়ে বৃষ্টিপাত হলে ধান শুকিয়ে পূর্বাবস্থায় নেয়া যায় কিন্তু গম বীজ হিসেবে শুধু নয়, খাদ্যশস্য হিসেবেও সংরক্ষণ করা কষ্টকর। তাই গমবীজ সংরক্ষণে ধানের চেয়ে বেশি যত্ন বিশেষ পাত্রের প্রয়োজন পড়ে। কৃষক পর্যয়ে ঘন ঘন শুকাতে না পারলে বীজ শস্য হিসেবে গম বেশিদিন সংরক্ষণ দুরূহ।

গমের তুলনায় ধান, আলু ভুট্টা প্রভৃতির চাহিদা বাজার যথেষ্ট বিস্তৃত। ছোট-বড় হাটবাজারে ধান-চালের মোকাম আড়ত থাকে বিস্তর। চাষী পর্যায়ে গমের তুলনায় ধান আলু প্রক্রিয়াকরণ সহজ সহজাত। ধানের খড় জ্বালানি, গোখাদ্য, গো-বিছানা, বেড়া বা ঘরের চালাসহ বিভিন্ন গৃহস্থ্থালি কাজে ব্যবহার চলে। এর বিক্রয়মূল্যও বিদ্যমান। জ্বালানি, বেড়া ঘরের চালা ছাড়া গমের খড়ের বিকল্প ব্যবহার সীমিত। জমিতে গমের নাড়ার চেয়ে ধানের নাড়া সহজে পচে। ধানের খড় যেভাবে স্তূপাকারে পালা দিয়ে রাখা যায়, গমের খড় সেভাবে রাখা যায় না। সরকারি খাদ্য অধিদপ্তর যে হারে ধান কেনে এবং সারা বছর বেসরকারিভাবে ধানের বেচাকেনা হয়, সে হারে আটার চাহিদা থাকলেও গমের বেচাকেনা খুবই সীমাবদ্ধ। দ্রুত আর্দ্রতা শোষণক্ষমতা গমের বিপণন সংরক্ষণ ধানের চেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।

বর্ধিত জনসংখ্যার গৃহায়ণ, শিল্প-কারখানা স্থাপন, নানা উন্নয়ন মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন, নদীভাঙনসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক কারণে প্রতিনিয়ত কৃষিজমি অকৃষিতে রূপান্তর ঘটছে। রবি মৌসুমে প্রধান খাদ্যশস্য বোরো ধানের প্রতি নজর এবং অর্থ বাণিজ্যিক বিবেচনায় আলু ভুট্টাসহ অন্যান্য ফসলের প্রতি আগ্রহের তুলনায় গমের সম্ভাব্য এলাকা বৃদ্ধির হার এখনো ক্ষীণ।

একসময় ভারত থেকে আমদানীকৃত গমের আলগাঝুল রোগ দেশে বিস্তৃতি লাভ করে। স্থানীয় পরিবেশে নতুন জাতে এর প্রকোপ কমে এসেছে। পাতার মরিচা রোগ গম উৎপাদনে বিঘ্ন ঘটায়। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে যশোর, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, বরিশাল, ভোলা প্রভৃতি জেলায় প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর গমের জমিতে মারাত্মক ব্লাস্ট রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে; যা মোট আবাদি জমির প্রায় শতাংশ। রোগে ফলন ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ কমে যায় এবং ক্ষেত্রবিশেষে ফসল প্রায় সম্পূর্ণ বিনষ্ট হয়। একের পর এক নতুন রোগবালাই নিরাময় এবং বিপর্যয় উত্তরণের প্রযুক্তি না জানার শঙ্কা কৃষক মনে বিরাজমান। বপনের পর জমিতে বীজ-খাদক প্রাণীর উপদ্রবও কম নয়। এসব কারণ গম আবাদের উৎসাহকে অবদমন করে।                                           

চ্যালেঞ্জ উত্তরণে রোডম্যাপ

 আশার কথা, শুরুতে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং পরে বাংলাদেশ গম ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট সময়োপযোগী জাত প্র্রযুক্তির উদ্ভাবনে সক্ষমতার পরিচয় দিচ্ছে। পর্যন্ত ৩৬টি নিজস্ব জাতের মাধ্যমে দেশে গমবীজের সম্পূর্ণ চাহিদা পূরণ করছে। প্রাকৃতিক প্রতিবন্ধকতাসহিষ্ণু, মারাত্মক পোকামাকড় রোগ প্রতিরোধী জাত এবং নানা প্রযুক্তি উদ্ভাবনের নিরন্তর গবেষণা চলমান। তবে গবেষকদের দক্ষতার সঙ্গে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে কাজে লাগিয়ে বিরূপ জলবায়ুতে উৎপাদনশীল উচ্চফলনসম্পন্ন জাত চাহিদাবান্ধব প্রযুক্তি উদ্ভাবনের দাবি পূরণ করতে হবে।

সেচ এলাকা বাড়িয়ে দোআঁশ বেলে দোআঁশ মাটিতেও নির্বিচারে বোরো ধানের সম্প্রসারণ ঘটছে। নিরন্তর ভূ-উপরস্থ পানির পরিমাণ হ্রাস এবং ভূগর্ভস্থ সেচ দিয়ে সেচাবাদের ধারা কার্যকারিতা অব্যাহত রাখা নিয়ে বিশদ চিন্তার অবকাশ রয়েছে।                           

ওসব জমিতে বোরো ধানের চেয়ে কম সেচ, কম অথচ সুষম সার বালাইনাশক ব্যবহার করে গম আবাদ অধিক লাভজনক। বোরো ধানের এলাকা কমিয়ে সম্পূরক উৎপাদনের বিকল্প হিসেবে খরিপ- খরিপ- মৌসুমে অধিক ফলনসম্পন্ন রোপা আউশ রোপা আমন ধানের এলাকা বাড়ানো এবং নিবিড় চাষ সম্প্রসারণের প্রযুক্তি উদ্ভাবন আবশ্যক। ১৯৭১ সালে আমাদের মাথাপিছু যে খাবার সরবরাহ ছিল, তার চেয়ে এখন উৎপাদন হচ্ছে অনেক বেশি। কিন্তু খাদ্য উৎপাদনের মতো খাবার তৈরিতেও পানির প্রয়োজন। উৎপাদন থেকে খাবার প্রস্তুতিতে পানি মিতব্যয়ে ধানের চেয়ে গম অগ্রগামী।

গমের উন্নত জাত, লাগসই প্রযুক্তি উদ্ভাবন সম্প্রসারণে বিজ্ঞানী সম্প্রসারণকর্মীদের মাঝে নিবিড় সংযোগ প্রয়োজন। গত শতাব্দীর আশি-নব্বইয়ের দশকে উফশী ধানের এলাকা উৎপাদন বৃদ্ধিতে নিবিড় ধান উৎপাদন প্রকল্প, গবেষণা সম্প্রসারণবিদের সমন্বয়ে অভূতপূর্ব সাফল্য আনে। সে আলোকে গমের জন্যও সুচিন্তিত কর্মধারা প্রণয়ন সুফল বয়ে আনতে পারে।

গম উৎপাদন অঞ্চল চিহ্নিত করে নিবিড় গম চাষ অঞ্চল গড়ে তোলা অপরিহার্য। সেখানে উদ্ভাবিত প্রযুক্তি বিষয়ে কৃষক প্রশিক্ষণসহ গম চাষ, কর্তন মাড়াইয়ের লাগসই কৃষি যন্ত্রপাতি এবং বীজ সংরক্ষণ পাত্র সহজলভ্যকরণসহ গমচাষীদের প্রণোদনামূলক মূল্যে উন্নত বীজ, সার উপকরণ প্রযুক্তির প্যাকেজ সরবরাহ করা যেতে পারে। গম উৎপাদন এলাকায় বিএডিসি বেসরকারি বীজ ডিলারের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় গমবীজ বিপণন সহজলভ্য করা চাই। উৎপাদিত গমবীজ সংরক্ষণে সহায়তা এবং খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক সরাসরি ক্রয়ে বর্ধিত অনুপ্রেরণামূলক বিশেষ বিবেচনায় গুরুত্ব প্রদান, গম উৎপাদনে কৃষকের উৎসাহ বৃদ্ধিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারে; যা ভোগ্যবস্তুর বহুমুখীকরণে অধিক সেচ, অধিক রাসায়নিক সার অধিক বালাইনাশক ব্যবহূত ধান উৎপাদনের ওপর থেকে চাপ কমানোয় সহায়ক। গম কর্তনের পর শস্য পর্যায়ে সে জমিতে গভীর শিকড়-সমৃদ্ধ খরিপ ভুট্টা, সূর্যমুখী বা অন্য ফসল আবাদে লাগসই প্রযুক্তি উদ্ভাবন সম্প্রসারণ করা যেতে পারে।

গম উৎপাদন অঞ্চলে মূল্য সংযোজনের জন্য আটা প্রস্তুত প্রক্রিয়াকরণ কলকারখানা স্থাপনের বিশেষ উদ্যোগ প্রয়োজন। সংশ্লিষ্ট কুটির শিল্প বড় শিল্প-কারখানা স্থাপনে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তায় উদ্যোক্তা তৈরিতে সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলো বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।

উৎপাদন থেকে বিপণন পর্যন্ত নিবিড় সাপ্লাই চেইন গড়ে তোলাসহ জাতীয় পর্যায় থেকে সময়ে সময়ে উদ্ভূত চ্যালেঞ্জগুলো সঠিক মুহূর্তে সমাধান দিকনির্দেশনা দিতে পারলে অদূরভবিষ্যতে গম এলাকা সম্প্রসারণ, উৎপাদন কার্যক্রম ছড়াতে পারে সাফল্যের বর্ণময় আলোকছটা। যা হতে পারে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট কৃষিবান্ধব সরকারের রূপকল্প ২০৪০-এর আলোকে বাংলাদেশ প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-৪১ বাস্তবে রূপায়ণ ঘটানোর সক্রিয় অনুঘটক।

দেশের খাদ্যনিরাপত্তা, ভোগ্যবস্তু বহুমুখীকরণ গ্রামীণ দারিদ্র্য নিরসনে গম চমকপ্রদ অবদান রাখতে পারে। একসময়ের হতাশ হওয়া পদ্মা সেতুর স্বপ্নের সফল বাস্তবায়ন আমাদের পক্ষে সম্ভব। চাষ এলাকা উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে তলাবিহীন ঝুড়ির বিদ্রূপকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ধান আর আলুর মতো সোনালি গম উৎপাদনে স্বনির্ভর হয়ে উঠবে সোনার বাংলাসেই প্রত্যাশা দেশের মাটি মানুষের কাছে করা যেতেই পারে।

 

আবু হেনা ইকবাল আহমেদ: কৃষিবিদ, পরিচালক (অব.), বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি, কৃষি মন্ত্রণালয়

আরও