বিশ্ববাজারে বুকিং বৃদ্ধি ও অভ্যন্তরীণ সংকটে দেশের বাজারে পাম অয়েলের দাম অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছে। ট্রেডিং ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, ২০২১-২২ সালের পর সর্বোচ্চে পৌঁছেছে পণ্যটির দাম। মিলগুলোর সরবরাহ সংকটে দুই মাসের ব্যবধানে পাম অয়েলের দাম বেড়েছে মণপ্রতি প্রায় ১ হাজার টাকা।
দেশের বাজারে জুলাই ও আগস্টে প্রতি মণ (৩৭ দশমিক ৩২ কেজি) পাম অয়েলের দাম ছিল ৪ হাজার ৭৫০ থেকে ৪ হাজার ৮০০ টাকা। সর্বশেষ মঙ্গলবার তা বেড়ে প্রতি মণ পাম অয়েল এসও (সাপ্লাই অর্ডার) পর্যায়ে দাম উঠেছে ৫ হাজার ৭০০ টাকায়। একই মানের পাম অয়েল মিলগেট থেকে ভোক্তা পর্যায়ে সরবরাহে দাম পড়ছে প্রায় ৫ হাজার ৯০০ টাকা।
এদিকে পাইকারিতে চলতি সপ্তাহের শুরুতে পাম অয়েলের দাম ছিল মণপ্রতি ৫ হাজার ৫০০ টাকা। মঙ্গলবার তা বেড়ে সর্বোচ্চ ৫ হাজার ৭০০ টাকায় বেচাকেনা হয়েছে।
পাম অয়েলের দাম বৃদ্ধির প্রভাব সয়াবিনের বাজারেও পড়েছে। পণ্যটির দাম মণপ্রতি প্রায় ২০০ টাকা বেড়ে ৬ হাজার ৫০ থেকে ৬ হাজার ১০০ টাকার মধ্যে লেনদেন হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বর্তমানে দেশের বেশকিছু ব্যাংকে লেনদেন ও এলসি (ঋণপত্র) খুলতে বিড়ম্বনার মধ্যে রয়েছেন তারা। এছাড়া ভোজ্যতেল আমদানির সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠান ও তাদের মালিকানায় থাকা ব্যাংকগুলোর দুরবস্থার প্রভাব পড়েছে পাইকারি বাজারে। নগদে পণ্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে মিল থেকে সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পাইকারিতে প্রতিদিনই বাড়ছে পাম অয়েলের দাম।
খাতুনগঞ্জের ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ওমর ফারুক বণিক বার্তাকে বলেন, ‘মালয়েশিয়া থেকে পাম অয়েল আমদানিতে খরচ কিছুটা বাড়লেও বর্তমান বৈশ্বিক দামের সঙ্গে অভ্যন্তরীণ দামের পার্থক্য অনেক বেশি।’
কিছু ব্যবসায়ীর অভিযোগ, প্রায় ছয় মাস আগে ভোজ্যতেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করা হলেও এখনো নতুন দাম নির্ধারণ কিংবা দাম কমাতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অথবা ট্যারিফ কমিশনের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। যার সুযোগ নিচ্ছে ট্রেডিং প্রতিষ্ঠানগুলো।
প্রসঙ্গত, দেশে বিক্রি হওয়া ভোজ্যতেলের ৯০ শতাংশই আমদানিনির্ভর। আমদানি হওয়া ভোজ্যতেলের মধ্যে ৭৫ শতাংশই পাম অয়েল। বাকি ২০-২২ শতাংশ সয়াবিন বোতলজাত ও খোলা পর্যায়ে বিক্রি হয়। তাছাড়া দেশে খাদ্য উৎপাদনে প্রায় শতভাগই পাম অয়েল ব্যবহার হয়।