খামারের মাটিতে কার্বন ধরে রাখতে সাহায্য করে গরু

বায়ুমণ্ডলে প্রচুর পরিমাণে মিথেন গ্যাস নিঃসরণ করে গরু, যা বৈশ্বিক উষ্ণায়নে ভূমিকা রাখছে। বিষয়টি আমলে নিয়ে গরুর খামারের ওপর অতিরিক্ত কর আরোপের ঘটনাও ঘটেছে।

বায়ুমণ্ডলে প্রচুর পরিমাণে মিথেন গ্যাস নিঃসরণ করে গরু, যা বৈশ্বিক উষ্ণায়নে ভূমিকা রাখছে। বিষয়টি আমলে নিয়ে গরুর খামারের ওপর অতিরিক্ত কর আরোপের ঘটনাও ঘটেছে। তবে নতুন এক গবেষণা দেখাচ্ছে যে কৃষি খামারের মাটি নতুন করে তৈরি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে গবাদিপশু। বিশেষ করে মাটিতে বেশি পরিমাণ কার্বন ধরে থাকতে সাহায্য করে গরু। খবর দ্য গার্ডিয়ান।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক সয়েল অ্যাসোসিয়েশন এক্সচেঞ্জের (এসএই) গবেষণা অনুসারে, যে খামারে আবাদযোগ্য ফসল ও গবাদিপশু থাকে, সেখানকার মাটিতে শুধু ফসল চাষ হয় এমন খামারের মাটির তুলনায় প্রায় এক-তৃতীয়াংশ বেশি কার্বন সংরক্ষিত থাকে। এ কার্বন আসে গবাদিপশুর বর্জ্য থেকে। 

জীববৈচিত্র্যের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত এ কার্বন বিশেষ ভূমিকা রাখে। ফসল ও গবাদিপশুর মিশ্র খামারের প্রতি মাঠে প্রায় ২৮টি তৃণভূমির উদ্ভিদ প্রজাতি পাওয়া যায়, যেখানে ফসলের খামারে ২৫টি ও শুধু দুগ্ধ খামারে ২২ প্রজাতি দেখা গেছে বলে জানানো হয় গবেষণায়।

তবে ‘মানবসৃষ্ট কার্বন নিঃসরণের প্রায় ১৪ শতাংশের জন্য দায়ী পৃথিবীজুড়ে থাকা খামারের গবাদিপশু’ উল্লেখ করে এসএইর প্রধান নির্বাহী জোসেফ গ্রিডলি জানান, গরু বায়ুমণ্ডলে যে পরিমাণ মিথেন নিঃসরণ করে তার তুলনায় মাটিতে কার্বন ধারণ করার পরিমাণ কম, যার কারণে মিথেন ও কার্বনের ক্ষতি ও উপকারিতার মধ্যে ভারসাম্য তৈরি হয় না। 

তিনি আরো বলেন, ‘তথ্যানুযায়ী এটি বেশ সুস্পষ্ট যে আপনার খামারে গবাদি পশু থাকা মানে পাঁচ-ছয় গুণ বেশি কার্বন নিঃসরণ করছেন। কিন্তু আপনি যদি গবাদিপশুকে এমন একটি সিস্টেমে নিয়ে যান যেখানে ফসল চাষ হয়, তাহলে মাটির স্বাস্থ্যের উল্লেখযোগ্য উন্নতি ঘটে এবং তা জীববৈচিত্র্যের জন্য অত্যন্ত অনুকূল।’

বিশ্বে দিনে দিনে আবাদযোগ্য ভূমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে। তবে কতটা কমেছে, তা স্পষ্ট নয়। ২০১৫ সালে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা এফএও দাবি করেছিল, পৃথিবীতে মাত্র ৬০ মৌসুমের ফসলি জমি অবশিষ্ট রয়েছে। তবে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও আওয়ার ওয়ার্ল্ড ইন ডাটার গবেষকরা ২০২১ সালে জানান, হিসাবটা একটু জটিল। ১৬ শতাংশ ফসলি জমির জীবনকাল ১০০ বছরের কম বলে ধারণা করা হলেও, এর এক-তৃতীয়াংশ মাটি কমপক্ষে পাঁচ হাজার বছর টিকে থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।

মিথেন নিঃসরণ হ্রাসের উপায় খুঁজতে গবেষণা করছে যুক্তরাজ্যের পরিবেশ, খাদ্য ও গ্রামীণবিষয়ক বিভাগ। গবাদিপশুর খাবারে প্রয়োজনীয় তেল, প্রবায়োটিকস, এমনকি সামুদ্রিক শৈবালের মতো পদার্থ যোগ করে মিথেন নিঃসরণ কমানোর চেষ্টা হয়েছে বলে জানিয়েছে সরকারি এ দপ্তর।

আরও