জানুয়ারি-জুন

প্রাইভেট জেটে ভ্রমণ কমেছে ১৫ শতাংশ

২০২২ সালে প্রাইভেট জেটে ভ্রমণের প্রবণতা বেড়ে শীর্ষে পৌঁছে। ওই সময়ের তুলনায় চলতি বছরের প্রথমার্ধে (জানুয়ারি-জুন) এ ধরনের ফ্লাইট সংখ্যা ১৫ শতাংশ কমেছে।

২০২২ সালে প্রাইভেট জেটে ভ্রমণের প্রবণতা বেড়ে শীর্ষে পৌঁছে। ওই সময়ের তুলনায় চলতি বছরের প্রথমার্ধে (জানুয়ারি-জুন) ধরনের ফ্লাইট সংখ্যা ১৫ শতাংশ কমেছে। কারণ হিসেবে সিএনবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খাতে ফ্লাইটের চাহিদা কমে গেছে। এছাড়া একাধিক বিকল্পের কারণে গ্রাহক ধরতে সংশ্লিষ্টদের মাঝে প্রতিযোগিতা বেড়ে গেছে।

এভিয়েশন শিল্পের পরামর্শক সংস্থা আরগাস ইন্টারন্যাশনালের তথ্যমতে, বছরের প্রথমার্ধে লাখ ১০ হাজার প্রাইভেট জেট ফ্লাইট পরিচালিত হয়েছে। যেখানে ২০২৩ ২০২২ সালের একই সময়ে যথাক্রমে লাখ ৪৫ হাজার লাখ ১৬ হাজার ফ্লাইট পরিচালিত হয়। তবেঅলিম্পিক গেমস ২০২৪ চলাকালে জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে রেকর্ড ৭১৩টি প্রাইভেট জেট উড়ে গেছে প্যারিসে।

কভিড-১৯ মহামারীজনিত বিধিনিষেধ এভিয়েশন শিল্পে বড় ধরনের প্রভাব ফেলে। তবে পরবর্তী সময়ে প্রাইভেট জেটের ব্যবহার বেড়ে যায়, যেখানে অনেক যাত্রী বিশেষ প্রয়োজনে প্রথমবারের মতো ধরনের ভ্রমণে অংশ নেন। তখন ধারণা করা হয়, একবার যারা বিশেষায়িত ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নিয়েছেন তারা হয়তো আর সাধারণ ফ্লাইটে যাত্রা করবেন না। কিন্তু ধারণাটি ভুল প্রমাণিত হয়। বরং অনেক সম্পদশালী ব্যক্তিও ব্যয়বহুল প্রাইভেট জেট ফ্লাইটের পরিবর্তে বাণিজ্যিক ফ্লাইট ব্যবহার শুরু করেন।

এভিয়েশন কোম্পানি ব্লেড এয়ার মবিলিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) রব উইসেনথাল বলেন, ‘কভিড-১৯ মহামারী-পরবর্তী সময়ে বলা হচ্ছিল যে যারা প্রথমবার প্রাইভেট জেট উড়োজাহাজে যাত্রা করবেন তারা আর বাণিজ্যিক ফ্লাইটে ফিরবেন না। কিন্তু জানেন কি? অনেকেই ফিরেছেন এবং এখনো ফিরছেন।

২০২১ ২০২২ সালের তুলনায় প্রাইভেট জেটের ব্যবসা চলতি বছর কমে গেলেও তা প্রাক-মহামারী অর্থাৎ ২০১৯ সালের তুলনায় ভালো অবস্থান রয়েছে। তবে প্রত্যাশার তুলনায় চাহিদা কমে যাওয়ায় অনেকেই এখন বিনিয়োগে আগ্রহী নন এবং পর্যায়ক্রমে শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন।

চার্টার এয়ারলাইনস হুইলস আপ ২০২১ সালে তাদের শেয়ার বিক্রি শুরু করে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে ৯০ শতাংশ শেয়ারের পতন হয়। তখন ডেল্টা এয়ারলাইনস বিনিয়োগের মাধ্যমে ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করে। এর পরও সাম্প্রতিক আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, কোম্পানিটি কোনো প্রান্তিকে মুনাফা অর্জন করেনি। বরং চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) নিট লোকসান ছিল কোটি ৭০ লাখ ডলার।

যুক্তরাষ্ট্রের জেট ইট গত বছর কোম্পানির কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে যে চার্টার এয়ারলাইনস ভিস্তাজেট ঋণ নিয়ে উদ্বিগ্ন।

খাতটির বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে ছোট অপারেটরদের শিগগিরই কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রয়োজন হতে পারে। কারণ চাহিদা কমে যাওয়ায় ফ্লাইট বসে থাকার সংখ্যা বেড়ে গেছে।

বিমান চলাচল পরামর্শক সংস্থা প্রাইভেট জেট কার্ড কম্পারিজনসের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ডগ গোল্লান বলেন, ‘ছোট অপারেটর যাদের তিন, চার বা পাঁচটি জেট আছে, তারাই মূলত সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে রয়েছে।

২০২০ সালে কভিড-১৯ মহামারীর সময় জনজীবন যখন বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে তখন ব্যক্তিগত জেট উড়োজাহাজে ব্যয়বহুল হলেও অনেকেই ভ্রমণ করা নিরাপদ মনে করেছেন। কিন্তু পরিস্থিতি যখন স্বাভাবিক হয় তখন সম্পদশালী ব্যক্তিরাও এর থেকে সরে আসেন। তাছাড়া ওই সময় সরকারের পক্ষ থেকে প্রণোদনা দেয়া হয়, পাশাপাশি সুদহার কমানো হয়। এতে স্টক মার্কেট চাঙ্গা হতে থাকে। ফলে খাতটিতে আগ্রহ বাড়তে থাকে। কিন্তু মহামারী স্বাভাবিক হওয়ার পর থেকে ভিন্ন চিত্র দেখা দিতে শুরু করে।

আরও