চট্টগ্রামে চড়া মসলার বাজার

কেজিতে বেড়েছে ২০-৪০০ টাকা

বর্ষা মৌসুমের শেষার্ধে গরমমসলার বাজার ছিল কিছুটা নিম্নমুখী। তবে শীতের বাড়তি চাহিদা ও ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে অব্যাহত বাড়ছে গরমমসলার বাজার।

বর্ষা মৌসুমের শেষার্ধে গরমমসলার বাজার ছিল কিছুটা নিম্নমুখী। তবে শীতের বাড়তি চাহিদা ও ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে অব্যাহত বাড়ছে গরমমসলার বাজার। এক মাসের ব্যবধানে বিভিন্ন মসলা পণ্যের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ২০ থেকে সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা পর্যন্ত।

বাজার সূত্র বলছে, বর্ষায় তুলনামূলক কম সামাজিক অনুষ্ঠান ও মানুষের মৌসুমি খাদ্যাভ্যাসের কারণে মসলার চাহিদা কিছুটা কম থাকে। শীতে সামাজিক, পারিবারিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান বেড়ে যাওয়ায় চাহিদা বাড়ে মসলাপণ্যের। দেশে শীতের আগমন ঘটতে শুরু করায় ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠেছে মসলার বাজার। প্রায় প্রতি সপ্তাহেই মসলাপণ্যের দাম বাড়ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। 

দেশে ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক মাস আগেও কেজিপ্রতি এলাচ বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকার মধ্যে। এখন একই মানের এলাচের দাম উঠেছে ২ হাজার ১০০ টাকা পর্যন্ত। গোলমরিচের দাম কেজিপ্রতি ২০-৩০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬৩০ টাকায়, লবঙ্গের দাম ১০-২০ টাকা বেড়ে ১ হাজার ৫০০ টাকায়, দারচিনির (সাধারণ) দাম ১০-১৫ টাকা বেড়ে ৩৮৫ টাকায়, স্টিক দারচিনির দাম ২০-৩০ টাকা বেড়ে ৪১০ টাকায়, জায়ফলের দাম ২০-৩০ টাকা বেড়ে ৬৭০ টাকায় ও মিষ্টি জিরার দাম কেজিপ্রতি ১০-১৫ টাকা বেড়ে উঠেছে ২৭০ টাকায়।

এছাড়া প্রতি কেজি দেশীয় মরিচের দাম ১০-২০ টাকা বেড়ে ২৯০, ভারতীয় শুকনা মরিচ ১৫-২০ টাকা বেড়ে ২৮০, ভারতীয় হলুদের দাম ২০-২৫ টাকা বেড়ে ২০০, দেশীয় হলুদের দাম একই পরিমাণ বেড়ে ২০০, কালিজিরার দাম ১০-১৫ টাকা বেড়ে ২৪০, মেথির দাম ১০-১৫ টাকা বেড়ে ১২৫, ধনিয়ার দাম ২০-২৫ টাকা বেড়ে ১৮৫, রাঁধুনির দাম ৫০-৬০ টাকা বেড়ে ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

এদিকে অধিকাংশ মসলাপণ্যের দাম বাড়লেও বর্তমানে জিরা, জয়ত্রি ও তেজপাতার দাম নিম্নমুখী। কয়েক মাস ধরে এ তিন মসলার দাম টানা বাড়লেও বর্তমানে কমতে শুরু করেছে। গতকাল বাজারে কেজিপ্রতি জিরার দাম ৪০-৫০ টাকা কমে ৯৮০, জয়ত্রির দাম কেজিপ্রতি ১০০ টাকা কমে ২ হাজার ৪৫০ ও তেজপাতার দাম ২০-৩০ টাকা কমে কেজিপ্রতি ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মসলাবিক্রেতা মেসার্স নাজিম অ্যান্ড ব্রাদার্সের ব্যবস্থাপক কাওসার আলম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘‌বিশ্ববাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ায় ও দেশে ডলার সংকটের কারণে গত এক বছর ধরে গরমমসলার বাজার অস্থির। মাস দু-এক আগে বাজার কিছুটা নিম্নমুখী হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে মসলার চাহিদা বৃদ্ধিসহ ডলারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ও শুল্ক খরচ বাড়ার কারণে দাম বাড়তে শুরু করেছে। সামনে শীত মৌসুমে চাহিদা আরো বাড়লে দামও বাড়তে পারে।’

খাতসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মসলার বাজারের বৃহৎ অংশই মূলত আমদানিনির্ভর। দেশের বাজারে সবচেয়ে বেশি মসলা আসে ভারত ও চীন থেকে। এছাড়া ইন্দোনেশিয়া, মাদাগাস্কার, গুয়েতেমালা, শ্রীলংকাসহ বিভিন্ন দেশ থেকে মসলা আমদানি করে বাংলাদেশ। অভ্যন্তরীণভাবে শুধু ধনিয়া, মিষ্টি জিরা, মরিচ, হলুদ, তেজপাতা, কালিজিরাসহ হাতেগোনা কয়েকটি মসলা উৎপাদন হয়। তবে চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল হওয়ায় এসব পণ্যেরও একটি উল্লেখযোগ্য অংশ আমদানি করতে হয়।

আরও