বেনাপোল স্থলবন্দর

ভারতের সঙ্গে দেড় মাস পর রেলপথে বাণিজ্য শুরু

দীর্ঘ দেড় মাস বন্ধ থাকার পর বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে রেলপথে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য শুরু হয়েছে।

দীর্ঘ দেড় মাস বন্ধ থাকার পর বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে রেলপথে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য শুরু হয়েছে। গত বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টার দিকে ভারত থেকে রেলযোগে দুটি চালানে ২ হাজার ৪৬০ টন জিপসাম সার এবং ৬১টি ট্রাক্টর আমদানি করা হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই থেকে নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে রেলপথে পণ্য পরিবহন এবং যাত্রী যাতায়াত বন্ধ করে দেয় ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষ। একই সময় থেকে বাংলাদেশীদের ভিসা দেয়াও বন্ধ করে দেয় প্রতিবেশী দেশটি। তবে রাজনীতিক পটপরিবর্তনের পর দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে পুনরায় রেলপথে বাণিজ্য শুরু হয়েছে। তবে এখনো বন্ধ রয়েছে যাত্রী পারাপারের বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেনটি।

বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে। এরপর বাংলাদেশ রেলওয়ে বাণিজ্য ও যাত্রী যাতায়াত চালু করার আহ্বান জানিয়ে ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষকে গত ১২ আগস্ট একটি চিঠি দেন। কিন্তু বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে তা আটকে রাখা হয়। এতে বাংলাদেশের পাশাপাশি এ দেশে রফতানিনির্ভর ভারতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে। এভাবে টানা ৪৭ দিন বন্ধ রাখার পর ৪ সেপ্টেম্বর থেকে পুনরায় রেলপথে পণ্য পরিবহন সেবা চালু করে ভারত।

বেনাপোল স্থলবন্দরের আমদানিকারক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যবসার কাজে প্রায়ই ভারতে যেতে হয়। কিন্তু ভিসা বন্ধ থাকায় নানা অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে।’ এমন পরিস্থিতিতে দ্রুত ভিসা চালু করার দাবি জানান তিনি।

বেনাপোল বন্দরের আমদানি-রফতানিকারক সমিতির সভাপতি মহাসিন মিলন বলেন, ‘জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে বেনাপোল দিয়ে রেলপথে আমদানি বাণিজ্য বন্ধ থাকে। এতে ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়েন। পুনরায় আমদানি বাণিজ্য চালু হওয়ায় ব্যবসায়ীদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।’

তিনি জানান, বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে রেলপথে পাথর, জিপসাম ও সিমেন্ট তৈরির সামগ্রীর পাশাপাশি গার্মেন্টস, কেমিক্যাল, মোটর কারসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি হয়ে থাকে। ভারতের কলকাতা থেকে সড়ক পথে ট্রাকে পণ্য পরিবহনে পাঁচ-সাতদিন সময় লেগে যায়। সেখানে রেলপথে ৩-৪ ঘণ্টায় বেনাপোল বন্দরে পণ্য পৌঁছে যায়।

বেনাপোল আন্তর্জাতিক রেলওয়ের স্টেশনমাস্টার সাইদুজ্জামান বলেন, ‘এ বন্দর দিয়ে রেলপথে বাণিজ্য ও যাত্রী পরিবহন চালুর জন্য গত মাসের ১২ আগস্ট ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়া হয়েছিল। এরপর চলতি মাস থেকে পুনরায় রেলপথে পণ্য আমদানি চালু হয়েছে।’

বেনাপোল স্থলবন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক রেজাউল করিম জানান, দীর্ঘ দেড় মাস বন্ধ থাকার পর ভারতের সঙ্গে পুনরায় রেলপথে আমদানি বাণিজ্য শুরু হওয়ার পর দ্রুত পণ্য খালাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আরও