শুল্কায়ন জটিলতা

বেনাপোল বন্দরে পড়ে আছে সাড়ে ১০ কোটি টাকার গহনা

শুল্কায়ন জটিলতায় গত দুই মাস যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরের গুদামে সাড়ে ১০ কোটি টাকা মূল্যের প্রায় ৯৩ হাজার কেজি গহনা (ইমিটেশন জুয়েলারি) পড়ে রয়েছে।

শুল্কায়ন জটিলতায় গত দুই মাস যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরের গুদামে সাড়ে ১০ কোটি টাকা মূল্যের প্রায় ৯৩ হাজার কেজি গহনা (ইমিটেশন জুয়েলারি) পড়ে রয়েছে। এতে করে পণ্যের গুণগতমান নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে গুদামের ভাড়াসহ অন্যান্য মাশুল গুনতে হচ্ছে আমদানিকারকদের। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ঘোষণা অনুযায়ী, প্রতি কেজি সাধারণ ইমিটেশন গহনার আমদানি মূল্য ডলার এবং গোল্ড প্লেটেড (সোনার প্রলেপ দেয়া) গহনার মূল্য ডলার করে।

আমদানিকারকরা জানান, স্থলবন্দরে আটকে থাকা গহনাগুলো সাধারণ ইমিটেশনের। সেগুলোকে বেনাপোল কাস্টমসের কর্মকর্তারা গোল্ড প্লেটেড গহনা ধরে কেজিতে ডলার করে শুল্কারোপ করতে চান। কিন্তু ওই হারে শুল্ক দিতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন আমদানিকারকরা। তারা পণ্যের ল্যাব টেস্টের আবেদন জানিয়েছেন। অথচ বেনাপোল কাস্টমসের কর্মকর্তারা গত এক মাসেও পণ্যের নমুনা ল্যাবে পাঠায়নি। আমদানিকারকরা বিষয়টি এনবিআরকে জানালে সেখান থেকেও কোনো নির্দেশনা না আসায় পণ্য ছাড় করাতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা।

আমদানিকারক বেনাপোল বন্দর সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার রিপ্লেস লিমিটেড, মা এন্টারপ্রাইজ সালমান এন্টারপ্রাইজ নামে তিনটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান গত ১১-২৩ জুনের মধ্যে ভারত থেকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে তিনটি চালানে ৯২ হাজার ৭৪৩ কেজি গহনা (ইমিটেশন জুয়েলারি) আমদানি করেন। এসব পণ্যের আমদানি মূল্য প্রায় কোটি ৫২ লাখ টাকা, এর বিপরীতে ন্যূনতম শুল্ক হবে কোটি ৯২ লাখ টাকা।

আমদানিকারকরা বলছেন, তিনটি চালানের মধ্যে গোল্ড প্লেটেড কোনো পণ্য নেই। সবই সোনালি রঙের প্রলেপ দেয়া সাধারণ ইমিটেশন, যার শুল্কায়ন মূল্য হবে প্রতি কেজি ডলার হিসাবে। কিন্তু দুই মাস পেরিয়ে গেলেও চালান তিনটি ছাড়ের অনুমতি দেননি শুল্ক কর্মকর্তারা।

আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান রিপ্লেস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘পণ্যের নমুনা ল্যাব টেস্টে পাঠানোর জন্য আমরা এক মাস আগে বেনাপোল কাস্টমস কমিশনারের কাছে লিখিতভাবে আবেদন করেছিলাম। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে তিনি ল্যাব টেস্ট করাতে আগ্রহী নন। এর ফলে আমরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি।

মা ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী জাবেদ হোসেন মোস্তফা বলেন, ‘সোনামসজিদ বন্দর দিয়ে একাধিক ইমিটেশন পণ্য আমদানি করে ডলারে ছাড় করেছি। ভারতে জিএসটি জটিলতা দেখা দেয়ার কারণে ওই বন্দর বাদ দিয়ে বেনাপোল দিয়ে সাড়ে ৩২ টন পণ্য আমদানি করি। জুয়েলারি পণ্য শুল্কায়নে সোনামসজিদে ডলার আর বেনাপোলে ডলার। বৈষম্যের কারণে আমরা পণ্য খালাস নিতে অপারগতা জানিয়ে এনবিআরে আবেদন করি।

বিষয়ে বেনাপোল কাস্টম হাউজের কমিশনার আবদুল হাকিম বলেন, ‘আগে পরীক্ষা ছাড়াই প্রতি কেজি ইমিটেশন জুয়েলারি ডলারে শুল্কায়ন করা হয়েছে। এজন্য এবারো একই হারে শুল্কায়ন করা হয়। আমদানিকারকরা বিষয়ে এনবিআরের কাছে চিঠি দিয়েছে। সেখান থেকে নির্দেশনা এলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তবে অবস্থায় পণ্য ছাড় করতে চাইলে প্রতি কেজি ডলার মূল্যে শুল্কায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন বেনাপোল কাস্টম হাউজের কর্মকর্তা।

আরও