ঋণ আদায়ে সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেডের সম্পদ নিলামে তুলছে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি)। সম্প্রতি সংবাদপত্রে এমন সংবাদ প্রকাশিত হলে কোম্পানিটির কাছে চিঠি দিয়ে ব্যাখ্যা জানতে চায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। চিঠির জবাবে সাইফ পাওয়ারটেক জানিয়েছে, বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে ইউসিবির সঙ্গে আলোচনা চলছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
তথ্যানুসারে, গত ২০ মার্চ একটি দৈনিক পত্রিকায়"‘ঋণের ৫১৮ কোটি টাকা আদায়ে সাইফ পাওয়ারটেকের সম্পদ নিলামে তুলছে ইউসিবি’, এ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ প্রসঙ্গে, কোম্পানিটি ডিএসইকে জানিয়েছে, ‘আমরা ইউসিবির মহাখালী শাখায় বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য আলোচনা করছি। আমাদের কোম্পানির ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দ্রুত সমাধানে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করছে। আমরা আশাবাদী, এ ঋণ জটিলতা আমাদের কোম্পানির ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না।’
গত ২০ মার্চ ইউসিবি তাদের ওয়েবসাইটে সাইফ পাওয়ারটেকের সম্পদ নিলামের বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছিল, ব্যাংকটি মোট ৫১৭ কোটি ৭৪ লাখ টাকা ঋণ আদায়ের জন্য সাইফ পাওয়ারটেকের নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামে অবস্থিত ৫৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ বন্ধককৃত জমি নিলামে বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে সম্ভাব্য ক্রেতাদের ২৪ এপ্রিলের মধ্যে মূল্য উদ্ধৃতি জমা দেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২৩-২৪ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে সাইফ পাওয়ারটেকের পর্ষদ। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সমন্বিত আয় (ইপিএস) হয়েছে ৭০ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৭৬ পয়সা। ৩০ জুন শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সমন্বিত নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৭ টাকা ১ পয়সায়।
সমাপ্ত ২০২২-২৩ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের কোনো লভ্যাংশ দেয়নি সাইফ পাওয়ারটেক। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৭৬ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ১ টাকা ৩২ পয়সা। ৩০ জুন ২০২৩ শেষে কোম্পাটির এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ১৬ টাকা ৩১ পয়সায়।
সমাপ্ত ২০২১-২২ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে সাইফ পাওয়ারটেক। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ৩২ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ১ টাকা ৬৫ পয়সা। ৩০ জুন ২০২২ শেষে কোম্পাটির শেয়ারপ্রতি এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ১৭ টাকা ৯১ পয়সায়।
সর্বশেষ ঋণমান অনুসারে, কোম্পানিটির সার্ভিলেন্স এনটিটি রেটিং দীর্ঘমেয়াদে ‘এ টু’ ও স্বল্পমেয়াদে ‘এসটি-থ্রি’। ৩০ জুন ২০২৩ পর্যন্ত অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন, ব্যাংক ঋণের অবস্থান ও রেটিং প্রকাশের দিন পর্যন্ত কোম্পানিটির প্রাসঙ্গিক অন্যান্য গুণগত তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রত্যায়ন করেছে ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (সিআরএবি)।
২০১৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া সাইফ পাওয়ারটেকের অনুমোদিত মূলধন ৫০০ কোটি ও পরিশোধিত মূলধন ৩৭৯ কোটি ৩৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ১৬৮ কোটি ১৪ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ৩৭ কোটি ৯৩ লাখ ৩৮ হাজার ৬৪৭। এর মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে ৪০ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ১৮ দশমিক ৬৪ ও বাকি ৪১ দশমিক ৩০ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে।