বড় পরিবার বা বাণিজ্যিকভাবে গাড়ি ব্যবহারের জন্য গ্রাহকরা দিন দিন
সেভেন সিটার কার সেগমেন্টের দিকে বেশি ঝুঁকছেন। বাড়তি কেবিন স্পেসের জন্য বেশি মানুষ
স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে গাড়িতে বসতে পারছে। অন্যদিকে অধিক বুট স্পেস থাকায় অধিক পরিমাণে
নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী বা ভারী মালামাল বহন করা আরো সহজ হচ্ছে। একই গাড়ি একাধিক কাজে
ব্যবহারের ফলে জ্বালানি খরচ, রক্ষণাবেক্ষণ খরচ, ভালো মাইলেজ পাওয়া, এয়ারব্যাগ সিক্যুরিটি,
স্টেবিলিটি কন্ট্রোল, উন্নত ব্রেকিং সিস্টেমের মতো নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য পাওয়ার ফলে
এমপিভি সেগমেন্ট বা সেভেন-সিটার গাড়িগুলো গ্রাহকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলছে এবং জনপ্রিয়
হয়ে উঠছে।
বাংলাদেশে ব্র্যান্ড নিউ সেভেন-সিটার সেগমেন্টে মার্কেট লিডার এবং
গ্রাহকদের পছন্দের তালিকার শীর্ষে যে গাড়িটি অবস্থান করছে সেটি হলো মিতসুবিশি এক্সপ্যান্ডার।
২০১৭ সালে এক্সপ্যান্ডারের প্রথম মডেলটি বাংলাদেশে আসে।
সম্প্রতি এক্সপ্যান্ডার ২০২৩ মডেলটি দেশীয় বাজারে এনেছে মিতসুবিশি
বাংলাদেশ। এরইমধ্য নতুন মডেলটি গ্রাহকদের থেকে ইতিবাচক সাড়া পেয়েছে। আগের মডেলটি
থেকে নতুন মডেলটি অনেক ক্ষেত্রেই অ্যাডভান্সড। এতে সর্বাধুনিক বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার
এবং একইসঙ্গে আরামদায়ক অভিজ্ঞতার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।
এক্সপ্যান্ডার ২০১৭ মডেলে ১ দশমিক ৫ মাইভেক (১০৫ এইচপি) ইঞ্জিন ব্যবহৃত
হয়েছিল। এক্সপ্যান্ডার ২০২৩ মডেলে পরিবর্তন করে আগের চেয়েও অত্যাধুনিক মাইভেক ডিওএইচসি
১৬-ভাল্ভ ৪-সিলিন্ডার ইঞ্জিন দেয়া হয়েছে। এটি গাড়িতে বাড়তি শক্তির সঞ্চার ও দক্ষতার
সঙ্গে কাজ করবে। উন্নত ইঞ্জিন সংযোজনের ফলে এখন ব্যবহারকারীরা আগের তুলনায় আরো স্মুথ
ড্রাইভিং অভিজ্ঞতা পাবেন।
২০১৭ মডেলের গাড়ির ওজন ছিল এক হাজার ৭৮০ কেজি। নতুন গাড়িটির ওজন মাত্র
১ হাজার ২৭০ কেজি। গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স আগের মডেলে ছিল ২০০ মিলিমিটার, যা নতুন মডেলে
২২৫ মিলিমিটার। গাড়ি আগের তুলনায় হালকা হওয়ায় যেমন গাড়ির জ্বালানি সঞ্চয় হবে, গাড়ির
নিরাপত্তা ও পারফর্ম্যান্স উন্নত হবে। গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স বেশি হওয়ায় উঁচুনিচু ভাঙা রাস্তা কিংবা স্পিড-ব্রেকারে গাড়ি ঘষা খাওয়ার ঝুঁকি কমবে।
২০১৭ এক্সপ্যান্ডার গাড়ির দৈর্ঘ্য ছিল ৪ হাজার ৪৭৫ মিলিমিটার, প্রস্থ
ছিল ১ হাজার ৭৫০ মিলিমিটার এবং উচ্চতা ছিল ১ হাজার ৬৯৫ মিলিমিটার অপরদিকে ২০২৩ এক্সপ্যান্ডার
গাড়ির দৈর্ঘ্য ৪ হাজার ৫৯৫ মিলিমিটার, প্রস্থ ১ হাজার ৭৯০ মিলিমিটার এবং উচ্চতা ১ হাজার
৭৫০ মিলিমিটার। এতে করে আগের তুলনায় সার্বিকভাবে নতুন মডেলে কেবিন ও বুটস্পেস বেশি
পাওয়া যাবে, যা মূলত সেভেন-সিটার গাড়ির অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য।
আগের তুলনায় নতুন মডেলের ডিজাইনে এসে নতুনত্ব ও ব্যাপক আধুনিকতার
ছোঁয়া। নতুন মডেলে আগের তুলনায় আরো স্টাইলিশ ও স্পোর্টি লুক দেয়া হয়েছে। যাত্রীদের
স্বাচ্ছন্দ্যে বসার জন্যে গাড়ির ভেতরেও রয়েছে প্রচুর জায়গা। এতে করে আগের তুলনায় গাড়িটি
ভেতর-বাহির উভয় দিক থেকে আরো বিলাসবহুল দেখাবে এবং আরামদায়ক ব্যবহার নিশ্চিত করবে।
আগের মডেলে শুধুমাত্র এবিএস ব্রেকিং সিস্টেম ছিল, যেখানে নতুন মডেলে
এবিএসের পাশাপাশি ইবিডি ব্রেকিং সিস্টেম যুক্ত করা হয়েছে। নতুন মডেলের হেডলাইটেও এসেছে
ভিন্নধর্মী পরিবর্তন। এর সামনের অংশে ইংরেজি ‘টি’ অক্ষরের আকৃতির
এলইডি হেডল্যাম্প ও ডে-লাইট রানিং লাইট (ডিআরএল) দেয়া হয়েছে। নতুন মডেলটি আগের তুলনায়
বাড়তি সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এবং রাত্রিকালীন যাত্রা আরো সহজ করে তুলবে।
উভয় মডেলের জ্বালানি ধারণক্ষমতাই ৪৫ লিটার। তবে গ্রাহকদের অভিজ্ঞতা
ও মতামতের ভিত্তিতে ২০১৭ এক্সপ্যান্ডার মডেলের চেয়ে ২০২৩ এক্সপ্যান্ডার মডেল গাড়িটি
চালিয়ে সার্বিকভাবে তারা বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেছেন। নতুন মডেলটি ওজনে হালকা হওয়ায়
আগের তুলনায় জ্বালানি সঞ্চয় বেশি করে এবং গতিশীলতা বৃদ্ধি করে। পাশাপাশি উন্নত ব্রেকিং
সিস্টেম থাকায় গাড়ির গতি তুলনামূলক বেশি থাকলেও নির্ভরযোগ্যতা বৃদ্ধি পাবে।
মিতসুবিশি এক্সপ্যান্ডার ২০২৩ ডিপ ব্রোঞ্জ মেটালিক, গ্রাফাইট গ্রে
মেটালিক, কোয়ার্টজ হোয়াইট পার্ল, রেড মেটালিক, ব্লেড সিলভার মেটালিক, জেড ব্ল্যাক মিকা
এবং গ্রিন ব্রোঞ্জ মেটালিক সাতটি ভিন্ন রঙে বাজারে এসেছে। অত্যাধুনিক জাপানিজ প্রযুক্তিসহ
৭ আসন বিশিষ্ট ২০২৩ এক্সপ্যান্ডার মডেলটি এমপিভি ক্যাটাগরির সেরা গাড়ি হিসেবে বিবেচিত
হচ্ছে। সামনে পেছনে স্টাইলিশ লুকের পাশাপাশি গাড়িটির স্মার্ট ফিচারগুলো দিন দিন এর
জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করে চলেছে।