বিশ্বে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে চীন শীর্ষে অবস্থান করছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। চীনের সাফল্য থেকে শিক্ষা নিয়ে বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে দেশে ব্যবসার অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে হবে। এ খাতে চীনা বিনিয়োগ বাড়াতে বৈদেশিক মুদ্রার ঝুঁকি রোধের পাশাপাশি সরকারকে তহবিল গঠন করার পরামর্শ দিয়েছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
গুলশানের একটি হোটেলে গতকাল ‘নবায়নযোগ্য শক্তি খাতে বিদেশী বিনিয়োগ: বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগ কীভাবে আকৃষ্ট করা যায়?’ শীর্ষক ডায়ালগে এ পরামর্শ দেয় গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি। সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে বাংলাদেশের জ্বালানি রূপান্তর প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। দেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বিনিয়োগ প্রয়োজন। চীনা বিনিয়োগ এক্ষেত্রে অর্থায়নের একটি বড় উৎস হতে পারে। সরকারকে তহবিল গঠন করার পরামর্শ দিয়ে সিপিডি বলছে, যা বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে আংশিক গ্যারান্টি ও নিরাপত্তা বেষ্টনী দেবে। পাশাপাশি ভর্তুকির মাধ্যমে মুদ্রা অদল-বদল এবং দেশীয় ব্যাংক থেকে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের টাকায় ঋণ দেয়ার পরামর্শ দিয়েছে সিপিডি।
সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম জ্বালানি খাতে চীনা বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে বেশকিছু পরামর্শ দেন। তিনি বিনিয়োগকারীদের কর প্রণোদনা ও ভর্তুকি দেয়ার আহ্বান জানান। সরকারি আর্থিক সহায়তায় সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বকে এগিয়ে আসতে বলেন। পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রার ঝুঁকি মোকাবেলায় সরকারকে তহবিল গঠন ও দক্ষ কর্মী তৈরিতে বিনিয়োগের পরামর্শ দেন।
সিপিডি বলছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নতুন বিদ্যুতের জন্য উন্মুক্ত ও প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র প্রক্রিয়ায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি চীনা বিনিয়োগকারী এবং অর্থায়নকারীদের জন্য বেশ কয়েকটি সুযোগ দেবে। বেসরকারি খাতের জন্য বিপিডিবির নতুন চালু হওয়া ১০টি গ্রিড-সংযুক্ত সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ভালো বিনিয়োগকারীদের পরীক্ষা হতে পারে।
সিপিডির সুপারিশে আরো বলা হয়, নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে ‘বিপরীত নিলাম’ পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করতে পারে সরকার। সাধারণত দরপত্রে নিয়মানুযায়ী সর্বোচ্চ বা সর্বনিম্ন দরদাতা কাজ পেয়ে থাকেন। বিপরীত নিলামের ক্ষেত্রে সরকার একটি দর নির্ধারণ করে দেবেন। এরপর যারা ওই দরের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে জয়ী হবেন, তারা কাজটা পাবেন। এতে চীনা বিনিয়োগসহ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৩৭টি কেন্দ্র এ দরপত্রে অংশ নিতে পারে।