সাংবাদিককে ডিবি

‘‌এই হচ্ছে বড় ইনফরমার এরে গাড়িতে তোল’

গত ১ আগস্ট বেলা সোয়া ১১টার দিকে ক্যাম্পাসের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলকের সামনে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা শিক্ষার্থীদের আটক করলে শিক্ষকদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি হয়।

গত আগস্ট বেলা সোয়া ১১টার দিকে ক্যাম্পাসের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলকের সামনে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা শিক্ষার্থীদের আটক করলে শিক্ষকদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি হয়। ঘটনার ভিডিও চিত্র ধারণ করায় সমকালের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি অর্পণ ধরকে ডিবি পুলিশ মারধর করে। এছাড়া ডেইলি ক্যাম্পাসের রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি আমজাদ হোসেনের পরিচয়পত্র ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। তার ফোন ছিনিয়ে নিয়ে পিঠে একাধিক কিল-ঘুসি দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

সমকাল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি অর্পণ ধর বলেন, ‘পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজকে বেলা ১১টার সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নেটওয়ার্ক বৈষম্যবিরোধী সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের কর্মসূচি পালন করেন। সময় আমি সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে আমাকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মারধর করেন। আমার ঘাড় চেপে ধরে তুলে নেয়ার চেষ্টা করা হয়।৷ সাংবাদিক কার্ড দেখিয়ে পরিচয় দিলে আমাকে গোপন সোর্স বলে তুলে নেয়ার চেষ্টা করে সাদা পোশাকধারী একজন। এতে তার হাতের একটি অংশ কেটে গেছে। ডিবি পুলিশের একজন বলছিলেন, এই হচ্ছে বড় ইনফরমার। এরে গাড়িতে তোল।

বিষয়ে দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস রাজশাহী প্রতিনিধি মো. আমজাদ হোসেন বলেন, ‘পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজকে বেলা ১১টার সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নেটওয়ার্ক বৈষম্যবিরোধী সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের কর্মসূচি পালন করেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আটকের লাইভ চলাকালে পুলিশ ডিবি কর্মকর্তারা আমার ওপর চড়াও হয়। আমার মোবাইল কেড়ে নেয়। ওই সময় আমাকে কিল-ঘুসি মারে এবং আইডি কার্ড ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে।

এছাড়া পূর্ব শত্রুতার জেরে রাবির সাবেক শিক্ষার্থী সাংবাদিক রাশেদ রাজন ছাত্র আন্দোলনের ছবি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করায় বিস্ফোরক মামলার আসামি করে কোর্টে চালান দেয়া হয়। তিনি রাজশাহী নগরীতেও সাংবাদিকতায় সক্রিয়। রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন (আরইউজে) রাজশাহী মহানগর প্রেস ক্লাবের সদস্য। আমাদের বার্তা পত্রিকার সাংবাদিক ফাহমিদুর অভিযোগ তুলে বলেন, ‘আন্দোলনের ছবি, ভিডিও এছাড়া নিউজ করলেই জামায়াত-শিবির, বিএনপির এজেন্ট বলে হয়রানি করত। আমাদের দমিয়ে রাখা হতো এক অদৃশ্য ভয়ভীতির মাধ্যমে।

সার্বক্ষণিক নজরদারি থেকে শুরু করে সাংবাদিকদের ডিবি পরিচয়ে হুমকি দেয়ারও ঘটনা ঘটেছে বলে জানা যায়। তাছাড়া আন্দোলনের কোনো নিউজ করলেই জামায়াত-শিবির ট্যাগ বসিয়ে দেয়া হতো বলে অভিযোগ করেন কয়েকজন সাংবাদিক। তাছাড়া যমুনা টেলিভিশনের বাইরে অন্য কোনো টেলিভিশন অথবা নিউজ পোর্টাল হলে জনগণের আক্রোশের শিকার হন বলেও জানান কয়েকজন।

জাগো নিউজের রাবি প্রতিনিধি মনির হোসেন মাহিন বলেন, ‘আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী গোয়েন্দা সংস্থা সবসময়ই জেরার মুখে রাখত কেন সাংবাদিকরা ক্যাম্পাসে অবস্থান করবেন। আমাদের সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখা হয়েছে। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছেও হেনস্তার শিকার হয়েছি। তারা যমুনা টেলিভিশনের বাইরে অন্য যেকোনো মিডিয়া দেখলেই তেড়ে এসে চড়াও হতো। অনেক সময় ওভারব্রিজের ওপর উঠে গোপনে ভিডিও ধারণ করতে হয়েছে। ঢাকা পোস্টের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জুবায়ের জিসান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হলে ভাংচুরের ভিডিও করার সময় সিসিটিভি  ক্যামেরা ফুটেজে আমাদের দেখা যায়। সে অভিযোগ তুলে ডিবিতে আমাদের একটা তালিকা পাঠানো হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে ভয়ে আমরা ক্যাম্পাসে আসতে পারিনি।

আরও