উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির প্রভাব পড়বে কোরবানির পশুর দামে

কোরবানির ঈদ সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয়েছে পশু কেনাবেচা। দেশে এখন কোরবানিযোগ্য পশু আছে চাহিদার চেয়ে ২১ লাখেরও বেশি। এর পরও এবার পশুর দাম বাড়তির দিকে থাকবে বলে জানিয়েছেন খামারিরা। এ বিষয়ে তাদের বক্তব্য হলো পশুখাদ্যের উপকরণের মূল্যবৃদ্ধি ও সার্বিক লালন-পালনের খরচ বাড়ার কারণেই এবার দাম বাড়তির দিকে থাকতে পারে।

কোরবানির ঈদ সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয়েছে পশু কেনাবেচা। দেশে এখন কোরবানিযোগ্য পশু আছে চাহিদার চেয়ে ২১ লাখেরও বেশি। এর পরও এবার পশুর দাম বাড়তির দিকে থাকবে বলে জানিয়েছেন খামারিরা। এ বিষয়ে তাদের বক্তব্য হলো পশুখাদ্যের উপকরণের মূল্যবৃদ্ধি ও সার্বিক লালন-পালনের খরচ বাড়ার কারণেই এবার দাম বাড়তির দিকে থাকতে পারে। 

যদিও এবার বাজারে কোরবানির পশুর তেমন একটা চাহিদা সেভাবে দেখা যাচ্ছে না। খামারিরাও জানিয়েছেন, ক্রেতাদের কাছ থেকে এবার পশুর চাহিদা মিলছে কম। এর পরও দাম বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে পশুপালন খাতসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, করোনার অভিঘাত ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে গত দেড় বছরে পশুখাদ্যের কিছু উপকরণের দাম বেড়ে এখন দ্বিগুণের বেশিতে। আবার ওষুধ, বিদ্যুৎ, কর্মচারীদের বেতনসহ সার্বিক উৎপাদন ব্যয় বাড়াতে হয়েছে খামারিদের। এর ধারাবাহিকতায় এবার গত বছরের তুলনায় কোরবানির পশুর দাম বাড়তে পারে অন্তত ১০-১৫ শতাংশ। 

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশে এ বছর কোরবানির পশুর সম্ভাব্য চাহিদা ১ কোটি ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৭৩৯টি। এর বিপরীতে কোরবানিযোগ্য পশু আছে ১ কোটি ২৫ লাখ ৩৬ হাজার ৩৩৩টি। সে হিসেবে উদ্বৃত্ত পশুর সংখ্যা ২১ লাখ ৪১ হাজার ৫৯৪। এর মধ্যে ৪৮ লাখ ৪৩ হাজার ৭৫২টি গরু-মহিষ, ৭৬ লাখ ৯০ হাজার ছাগল-ভেড়া ও ২ হাজার ৫৮১টি অন্যান্য গবাদিপশু। 

এ বছর সবচেয়ে বেশি কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে রাজশাহী বিভাগে। বিভাগটির আট জেলায় ৪৫ লাখ ১১ হাজার ৬১৪টি কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে, যা দেশের প্রায় ৩৬ শতাংশ। বিভাগটিতে খামারি রয়েছেন প্রায় ১ লাখ ৬৭ হাজার। 

গোখাদ্যের মূল্য বৃদ্ধিকেই এবার পশুর দাম বাড়ার প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করছেন রাজশাহীর সওদাগর এগ্রোর স্বত্বাধিকারী আরাফাত রুবেল। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘গত বছর প্রতি কেজি গরুর মাংসের দাম ছিল ৬০০-৬৫০ টাকা। এবার তা ৭০০-৭৫০ টাকা। গোখাদ্যের দাম বাড়ায় কোরবানির পশুর দাম বাড়তে পারে। তাছাড়া এবার বাজারে প্রায় সবই দেশী গরু। দুই বছরের একটি হৃষ্টপুষ্ট দেশী ষাঁড়ের ওজন হচ্ছে প্রায় চার মণ, যার দাম পড়ছে প্রায় ১ লাখ টাকা। এর নিচে এবার কোরবানির গরু মিলছে না।’

দেশে প্রচলিত পশুখাদ্যের উপাদানগুলোর মধ্যে রয়েছে সয়াবিন খৈল, গমের ভুসি, রাইস পলিশ, মসুর ভুসি, সরিষার খৈল, ভুট্টা, মুগ ভুসি ও মটর ভুসি। খামারিরা জানিয়েছেন, বাজারে এখন প্রতি কেজি সয়াবিন খৈল ৬৮ টাকা, গমের ভুসি ৫৬, রাইস পলিশ ৩৩, মসুর ভুসি ৫৮, সরিষার খৈল ৫৫, ভুট্টা ভাঙা ৪০, মুগ ভুসি ৫৮ ও মটর ভুসি ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

অথচ বছর দেড়েক আগেও বাজারে প্রতি কেজি সয়াবিন খৈল ৪৪ টাকা, গমের ভুসি ২৬, রাইস পলিশ ১৬, মসুর ভুসি ২১, সরিষার খৈল ৩০, ভুট্টা ভাঙা ১৯, মুগ ভুসি ২০ ও মটর ভুসি প্রতি কেজি ৩০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল। অর্থাৎ মাত্র দেড় বছরের ব্যবধানে বিভিন্ন খাদ্য উপকরণের দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। 

এর মধ্যে আবার দেশে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে দফায় দফায়। টিকতে না পেরে দেশের ১৫-২০ শতাংশ খামার বন্ধ হয়ে গেছে বলে দাবি করছে বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশন (বিডিএফএ)। সংগঠনটির হিসাব অনুযায়ী, সারা দেশে ছোট-বড় ১০ লাখের বেশি ডেইরি ও ফ্যাটেনিং খামার রয়েছে। মহামারীর প্রাদুর্ভাবের পর থেকেই এসব খামার লোকসানে রয়েছে। অনেকগুলো বন্ধও হয়ে গেছে।

উত্তরাঞ্চলের অন্যতম বৃহৎ হাট বসে বগুড়ার মহাস্থানগড়ে। এছাড়া জেলার ঘোড়াধাপ, সুলতানগঞ্জ হাট, শেরপুর হাট, সাবগ্রাম হাট, পেরী হাট, নামুজাসহ শতাধিক স্থানে হাট বসে। এসব হাট থেকে স্থানীয় পর্যায়ে বিক্রির পাশাপাশি রাজধানীসহ অন্যান্য জেলায়ও গরু পাঠানো হয়। বিভিন্ন জেলার অনেক ব্যবসায়ী এসব হাট থেকে পশু কিনে নিয়ে যান।

দেশের কোরবানির পশু সরবরাহকারী বৃহৎ এ জেলায় এবার পশুর জোগান আছে চাহিদার চেয়ে অনেক বেশি। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. সাজেদুল ইসলাম জানিয়েছেন, বগুড়ায় এবার কোরবানির পশু প্রস্তুত আছে চাহিদার চেয়ে অনেক বেশি। ফলে কোরবানির পশুর কোনো সংকট হবে না। বাড়তি পশুগুলো ঢাকা, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, সিলেটসহ বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হবে। 

বাড়তি সরবরাহ থাকলেও বাজারে এবার কোরবানির পশুর দাম কিছুটা বাড়তির দিকে থাকবে বলে জানালেন বগুড়ার খামারিরা। বগুড়ার ভাণ্ডার এগ্রো ফার্মের স্বত্বাধিকারী তৌহিদ পারভেজ বিপ্লব বণিক বার্তাকে বলেন, ‘এ বছর গরুর দাম অনেকটাই বেশি। ৬০০ কেজির একটি গরুর দাম গত বছর ছিল ৩ লাখ টাকা। এবার তা ৪ লাখ টাকায় বিক্রি করতে হবে। আবার ছোট গরু কেজি হিসেবে ওজন করে বিক্রি করি। গত বছর প্রতি কেজির দাম ধরেছিলাম ৪৫০ টাকা। এবার আমরা ৫০০ টাকায় বিক্রি করছি। কারণ হলো গত বছর একটি গরুর জন্য মাসে খরচ হতো ৬ হাজার ৭০০ টাকা। এবার তা বেড়ে হয়েছে প্রায় ১২ হাজার টাকা। গোখাদ্য ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি এবং কর্মচারীদের বেতন বাড়ায় উৎপাদন খরচ বেড়ে এখন প্রায় দ্বিগুণে। এবার অর্ডারও পাচ্ছি বিগত বছরগুলোর তুলনায় কম। মনে হচ্ছে মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ। গতবার কোরবানির আগে এমন সময় খামারের প্রায় সব গরু বিক্রি হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এবার এখনো প্রায় ৩০-৩৫ শতাংশ গরু অবশিষ্ট রয়েছে।’

রাজশাহীর বাইরে এবার ঢাকা বিভাগে ৮ লাখ ৯৫ হাজার ৪৫৪টি, চট্টগ্রামে ২০ লাখ ৫৩ হাজার ১২৮, খুলনায় ১৫ লাখ ১১ হাজার ৭০৮, বরিশালে ৪ লাখ ৯৩ হাজার ২০৬, সিলেটে ৪ লাখ ১০ হাজার ২২৫, রংপুরে ১৯ লাখ ৬২ হাজার ৯৫১ ও ময়মনসিংহ বিভাগে ৬ লাখ ৯৮ হাজার ৪৭টি কোরবানিযোগ্য গবাদিপশু রয়েছে।

চট্টগ্রামেও কোরবানির পশুর ঘাটতি হবে না জানিয়ে জেলাটির প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, ‘চট্টগ্রামে কোরবানির পশুর চাহিদা ও স্থানীয় উৎপাদন প্রায় কাছাকাছি। বাকিগুলো সরবরাহ হবে অন্যান্য জেলা থেকে।’ 

স্থানীয় খামারিরা জানান, যে গরু খামারে গতবার মণপ্রতি ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে, তা এবার ৩৭-৪০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। উৎপাদন খরচ বাড়ায় এর কমে বিক্রি করতে হলে চট্টগ্রামের খামারিদের লোকসানে পড়তে হবে। 

সব মিলিয়ে এবার খামারে গরুর দাম ২৫-৩০ শতাংশ বেড়েছে বলে জানালেন চট্টগ্রামের স্টুডিও বুল অ্যান্ড এগ্রোর স্বত্বাধিকারী মো. আলাউদ্দিন।

সিলেট বিভাগে কোরবানিযোগ্য পশু আছে প্রায় ২ লাখ ১৩ হাজার। সিলেট নগরীর প্রধান গরুর হাট কাজিরবাজারে গিয়ে দেখা যায়, গত বছর ৭০-৮০ হাজার টাকায় যে গরু বিক্রি হয়েছে তা এবার লাখের বেশি দাম হাঁকছেন বিক্রেতারা। খামারি আব্দুল আলী, ফখরুল ইসলাম ও মখলিছুর রহমান জানান, এবার আগে থেকেই বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। উৎপাদন খরচ বাড়ায় কম দামে বিক্রি করলে লোকসানে পড়বেন তারা। 

পশুর সংখ্যা উদ্বৃত্ত হলেও শেষ পর্যন্ত মূল্য ক্রেতাদের ওপরই নির্ভর করবে জানিয়ে সিলেট জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মু. আলমগীর কবির বলেন, ‘এবার সিলেট বিভাগে পশুর সংখ্যা বেশি। স্থানীয় ও খামারিদের কাছে থাকা কোরবানিযোগ্য পশু মিলিয়ে চাহিদা অনেকটাই পূরণ হয়ে যাবে। আশা করছি আমাদের চাহিদা পূরণ করে সিলেটের পশু দেশের অন্যান্য জায়গায় যাবে বিক্রির জন্য।’ 

রংপুর জেলায় কোরবানির জন্য পশু প্রস্তুত রয়েছে প্রায় ২ লাখ ৮৩ হাজার ৭৩৮টি। জেলার বিভিন্ন হাটে গরুর দাম গত বছরের চেয়ে ১৫-২৫ হাজার টাকা বেশি চাওয়া হচ্ছে। ক্রেতা মো. আমানত হোসেন বলেন, ‘আগের বছর কোরবানি ঈদে যে গরু ৬০-৭০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে, সেটি এবার ৮০-৯০ হাজার টাকা চাওয়া হচ্ছে। দেশী গরুর দাম বেশি চাওয়া হচ্ছে।’ 

এ বিষয়ে রংপুর জেলা ও বিভাগীয় ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. লতিফুর রহমান মিলন বলেন, ‘গোখাদ্যের দাম দ্বিগুণ হওয়ায় এবার কোরবানির পশুর দাম বেশি রাখতে বাধ্য হচ্ছেন খামারিরা।’

দিনাজপুরের খামারিরাও জানালেন, গোখাদ্যের দাম বাড়ায় তারাও বেশি দামে পশু বিক্রিতে বাধ্য হচ্ছেন। সদর উপজেলার চেহেলগাজীর খামারি মনজুর কাদের জানান, গরুর খাবারের দাম প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। এ কারণে গরুর দামও বেড়েছে। গত বছরের চেয়ে কমপক্ষে ৩০ শতাংশ বেশি দামে কোরবানির পশু বিক্রি করতে না পারলে খামারিদের লোকসান গুনতে হবে। 

যশোরে এবার কোরবানি ঈদে পশুর চাহিদা রয়েছে প্রায় ৯০ হাজার। মোট ২৪টি হাটে পশু বেচাকেনা হবে। খামারিরা জানিয়েছেন, উৎপাদন খরচ বাড়ায় গতবারের চেয়ে প্রায় ২০ শতাংশ বেশি দামে তারা পশু বিক্রি করছেন। 

ঝিকরগাছা উপজেলার পানিসাড়া ইউনিয়নের বেজিয়াতলা গ্রামের আবদুস সোবহান জানান, তার খামারে থাকা ২৪টি গরুর মধ্যে ১০-১২টি কোরবানিতে বিক্রি করবেন। তিনি বলেন, ‘আমার খামারে সব দেশী জাতের গরু। এগুলো ১ লাখ ১০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করব। গতবার একই ওজনের গরু ১ লাখের নিচে বিক্রি করেছিলাম। পশুখাদ্যের অস্বাভাবিক দাম বাড়ায় গরুর দাম বেশি রাখতে হচ্ছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে যশোর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. রাশিদুল হক বলেন, ‘আমরা খামারিদের সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ রাখছি। এবার পশুর দাম বেশি বলে তাদের কাছ থেকে জানতে পারছি।’

বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় কোরবানিযোগ্য পশু আছে সাড়ে চার লাখ। এখানকার খামারিদের আশঙ্কা, দাম বেশি হওয়ায় এবার পশু বিক্রি কমে যেতে পারে। বিডিএফএর ভোলা জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল হাসান খোকন বণিক বার্তাকে বলেন, ‘এবার আমার খামারের ৭০ শতাংশের মতো গরু বিক্রি হয়েছে। অন্যান্য বছর এ সময়ে প্রায় সবগুলোই বিক্রি হয়ে যায়। আমার পরিচিত মানুষ থাকায় তারা আমার খামার থেকে নেন। কিন্তু অন্য খামারিরা প্রত্যাশার চেয়ে অর্ধেক সাড়াও পাচ্ছেন না। গত বছরের চেয়ে এবার পশু বিক্রি কমে যেতে পারে।’ 

বিডিএফএর মহাসচিব ও সাদেক এগ্রোর স্বত্বাধিকারী শাহ ইমরান বণিক বার্তাকে বলেন, ‘এ বছর আমরা ওজন হিসেবে ছোট গরু প্রতি কেজি ৫০০ টাকায় বিক্রি করছি। গত বছর ৪৫০ টাকায় বিক্রি করেছি। আমাদের খামারে উৎপাদন খরচ প্রায় ৩০ শতাংশ বেড়েছে। ছোট গরুর চাহিদা বেশি। এ কারণে এগুলোর দাম এবার বেশি থাকবে। তবে বড় আকারের গরুর দাম আগের মতোই থাকতে পারে।’

প্রতি বছর কোরবানিতে অনলাইনে অর্ডার নিয়ে মাংস প্রক্রিয়াকরণ করে গ্রাহকের কাছে ডেলিভারি দেয় বেঙ্গল মিট। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এএফএম আসিফ বণিক বার্তাকে বলেন, ‘খাদ্য উপকরণ ও সার্বিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। এ কারণে ১৭-১৮ শতাংশ বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। আমাদের গরুর ক্ষেত্রে রঙ, জাত, পালনের পদ্ধতি ও আকার বিবেচনায় দাম নির্ধারণ করা হয়। ফলে দামের ক্ষেত্রে ভিন্নতা থাকে।’

বিভিন্ন জেলার খামারিরা জানিয়েছেন, এক জেলা থেকে অন্য জেলায় গরু নিতে চাঁদাবাজি, হাসিলসহ নানা ভোগান্তিতে পড়তে হয় তাদের। ঢাকায় একটি গরু নিয়ে গাড়ি ঢুকতে কয়েক ধাপে ৩-৪ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হয়। এতে তাদের খরচ আরো বেড়ে যাচ্ছে। আবার অনেক স্থানে হাসিলের জন্য গরু নামিয়ে ফেলা হয়। 

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম গত বুধবার এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের বলেন, ‘এবারো দেশে উৎপাদিত গবাদিপশু দিয়েই কোরবানির চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে। খামারিরা যাতে পছন্দ অনুযায়ী হাটে কোরবানির পশু বিক্রি করতে পারে এবং জোর করে কেউ পথে পশু নামাতে না পারে সেজন্য খামারিরা চাইলে ৯৯৯-এ যোগাযোগ করতে পারবে। স্থানীয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। কেউ খামারে পশু বিক্রি করলে তার কাছ থেকে হাসিল আদায় করা যাবে না। কোনো খামারি নিজ বাড়ি থেকে পশু বিক্রি করলেও তাকে হাসিল দিতে হবে না। হাটে আনার পথে কেউ পশু বিক্রি করলে তার কাছ থেকে ইজারা গ্রাহক জোর করে চাঁদা বা হাসিল আদায় করতে পারবে না।’

(প্রতিবেদনটি তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছেন বণিক বার্তার চট্টগ্রাম ব্যুরো, রাজশাহী, বগুড়া, সিলেট, রংপুর, দিনাজপুর, যশোর ও বরিশাল প্রতিনিধি)

আরও