পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের বিরোধপূর্ণ ভূমি’ নিয়ে শুনানির কার্যক্রম আগামী ২৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে বলে জানিয়েছেন কমিশনের চেয়ারম্যান ও বিচারপতি (অবসরপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ আনোয়ার উল হক। গতকাল বেলা ১১টায় রাঙ্গামাটি সার্কিট হাউজে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
এদিন সকালে পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি (অবসরপ্রাপ্ত) মো. আনোয়ার উল হকের সভাপতিত্বে বৈঠকে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা), চাকমা সার্কেল চিফ ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা ও ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন সচিব আলী মনসুর উপস্থিত ছিলেন।
এ কমিশনের অধীনে গত ১২ সেপ্টেম্বর রাঙ্গামাটি সার্কিট হাউজে কমিশনের পঞ্চম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তবে কমিশনের ষষ্ঠ বৈঠকে মং সার্কেল চিফ, বোমাং সার্কেল চিফ, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ এবং বিভাগীয় কমিশনার কিংবা তাদের কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না। কমিশনের বৈঠক শেষে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের নতুন ভবনে ভূমি কমিশনের শাখা কার্যালয় পরিদর্শন করেন কমিশনের নেতারা।
বৈঠক শেষে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান ও জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা) বলেন, ‘ভূমির জটিলতা নিয়ে এখানে সবকিছু জড়িত। এখানকার সাধারণ প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা ও উন্নয়ন। চুক্তির ২২ বছর পরও এখনো ভূমি ব্যবস্থাপনা জেলা পরিষদে হস্তান্তরিত হয়নি। এখনো অনেক জটিলতা রয়ে গেছে। ভূমি কমিশন চেষ্টা রাখবে, এ জটিলতার মধ্যে কীভাবে সুষ্ঠু সমাধান দেয়া যেতে পারে। তবুও আশা করছি, ভূমি কমিশন দ্রুত এসব সমস্যা সমাধানে কাজ করবে।’
উল্লেখ্য, পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির আলোকে ২০০১ সালে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন গঠন করা হয়। পরবর্তী সময়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) দাবির মুখে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে আইন সংশোধন করে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আনোয়ার উল হককে কমিশন চেয়ারম্যান করে সরকার। বিরোধপূর্ণ ভূমি নিয়ে ওই কমিশনে তিন পার্বত্য জেলা থেকে ৩ হাজার ৯৩৩টি আবেদন জমা পড়েছে। এর মধ্যে খাগড়াছড়ির ২ হাজার ৮৩৯টি, রাঙ্গামাটির ৭৬৯ ও বান্দরবানের ৩২৫টি আবেদন রয়েছে।