মনোহরগঞ্জে পানিবন্দি মানুষের মানবেতর জীবন

কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে বন্যার পানি নামছে ধীরগতিতে। গত ১৫ দিনেও তেমন উন্নতি হয়নি।

কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে বন্যার পানি নামছে ধীরগতিতে। গত ১৫ দিনেও তেমন উন্নতি হয়নি। এখনো পানিতে তলিয়ে রয়েছে বহু ঘর-বাড়ি ও রাস্তাঘাট। বসবাসের অনুপযোগী বসতভিটা ছেড়ে অনেকে উঠেছেন আশ্রয় কেন্দ্রে। আবার অনেকেই পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। খেয়ে না খেয়ে পানি কমার অপেক্ষায় কোনোমতে দিন পার করছেন। মূলত উপজেলার বিভিন্ন স্থানে খাল দখলের ফলে এমন খারাপ পরিস্থিতি হয়েছে।  গতকাল দুপুরে উপজেলার মৈশাতুয়া খালপাড়ে গিয়ে দেখা যায় এমন চিত্র।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৫ দিন আগে কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলা, পাশের জেলা নোয়াখালী এবং ডাকাতিয়ার বেশ কয়েকটি স্থানে বাঁধ ভেঙে মনোহরগঞ্জে বন্যার পানি প্রবেশ করছে। এতে উপজেলায় ভয়াবহ রূপ নেয় বন্যা। পানিবন্দি হয়ে পড়ে প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষ। রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় ঘর থেকে বের হতে পারছেন না তারা। এরই মধ্যে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বন্যার পানি কিছুটা কমলেও মৈশাতুয়া ইউনিয়নের পানি অপরিবর্তিত।

মৈশাতুয়া খালপাড়ের জলিলের স্ত্রী ফারহানা বেগম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘‌মানবেতর জীবনযাপন করছি। ঘর থেকে বাইরে পা রাখার মতো জায়গা নেই। উঠানসহ সব তলিয়ে গেছে। ঘরের মধ্যে একটি তেলের টিন কেটে লাকড়ি দিয়ে কোনোমতে রান্না করছি। খেয়ে না খেয়ে পার করছি সময়। রাত-দুপুরে একটা মানুষ হঠাৎ অসুস্থ হলে চিকিৎসার জন্য যে নিয়ে যাব, সেই ব্যবস্থাও নেই।’

মৈশাতুয়া উত্তর পাড়ার মো. বাহার বলেন, ‘‌২১ আগস্ট থেকে বাড়ির উঠানে কোমর পানি। আজ পর্যন্ত পানির লেভেল এক সমান রয়েছে। পানি না কমার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‌যেসব এলাকা দিয়ে পানি নির্গত হবে, ওই সব এলাকার অধিকাংশ স্থানে বাঁধ দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। যার কারণে পানি কমতে সময় লাগছে।’

স্থানীয় আরেক ব্যক্তি আব্দুল বলেন, ‘‌মৈশাতুয়া ইউনিয়নে গত কয়েক দিনে মাত্র ২-৩ ইঞ্চি পানি কমেছে। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় বাঁধ রয়েছে। যার কারণে পানি কমতে সময় নিচ্ছে।’

মনোহরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উজালা রানী চাকমা বণিক বার্তা বলেন, ‘‌উপজেলায় পানি কমতে আরো সপ্তাহখানেক সময় লাগতে পারে। যেখানে বাঁধের কারণে পানি নামতে সমস্যা হচ্ছে, খবর পাওয়ার সঙ্গে সেখানে অভিযান চালিয়ে বাঁধ ভেঙে দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, বানভাসিদের জন্য ১০৮টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা। দুর্গম এলাকাগুলোয় খাবার পৌঁছানোর জন্য সরকার কাজ করছে।’

আরও