কুষ্টিয়ায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া-৩
(সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফসহ দলের ৭৩ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে
হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা হয়েছে। কুমারখালী উপজেলার ঘোরাই গ্রামের লুৎফুর রহমানের
ছেলে জিলহজ হোসেন। মামলায় আওয়ামী লীগের ৭৩ জন নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা
আসামি করা হয়েছে আরো ৪০-৪৫ জনকে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকালে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করা
হয়। মামলাটি নথিভুক্ত হয় রাতে।
এদিকে বৃহস্পতিবার বিকালে গ্রেফতার আওয়ামী লীগের নেতা ও পৌরসভার তিন
কাউন্সিলরকে ওই মামলার আসামি করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা হলেন কুষ্টিয়া পৌরসভার
৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাইফ উল হক ওরফে মুরাদ হোসেন, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর
নজরুল ইসলাম ও ১১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনিস কুরাইশী। তিনজনই নিজ নিজ ওয়ার্ডে আওয়ামী
লীগের সাধারণ সম্পাদক।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), কুষ্টিয়া-১২ তাদেরকে গ্রেফতার
করে। বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে কুষ্টিয়া মডেল থানায় তাদেরকে হস্তান্তর করে র্যাব।
রাতেই গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গ্রেফতারের এ তথ্য জানায় র্যাব।
কুষ্টিয়া মডেল থানা সূত্র জানায়, মামলার এজাহারে জিলহজ উল্লেখ করেছেন,
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় কুষ্টিয়া শহরে বাদীর ছোট ভাই তামজিদ হোসেন আন্দোলনে
অংশ নেন। বিকালে কুষ্টিয়া মডেল থানার সামনে বার্মিজ গলিতে আসামিরা তাকে ধাওয়া করে।
একপর্যায়ে আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুব উল আলম হানিফের নির্দেশে অন্য আসামিরা তাকে এলোপাতাড়ি
কোপায়। হত্যার উদ্দেশ্যে শরীরে রড ও লাঠি দিয়ে বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি মারধর করে
গুরুতর জখম করা হয়। এ সময় তারা গুলিও করতে থাকেন। তাদের ছোড়া গুলি তার বা পায়ে লাগে। এরপর
ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়।
মামলায় আসামিদের মধ্যে আছেন হানিফের চাচাতো ভাই কুষ্টিয়া শহর আওয়ামী
লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক
শেখ হাফিজ, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি
ইয়াসির আরাফাত, সাধারণ সম্পাদক মানব চাকী, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ
সম্পাদক সাদ আহমেদ, আওয়ামী লীগ নেতা মোমিনুর রহমান প্রমুখ।
গতকাল রাতে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কুষ্টিয়া র্যাব ক্যাম্পের কমান্ডার
মোহাম্মদ ইলিয়াস খান বলেন, বৃহস্পতিবার বিকালে কুষ্টিয়া পৌরসভার সামনে অভিযান চালিয়ে
তিনজন কাউন্সিলরকে আটক করা হয়। তারা বিকালে মডেল থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলার এজাহারভুক্ত
আসামি। রাতেই তাদের থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুল হক চৌধুরী
বলেন, গ্রেফতার আসামিদের আজ শুক্রবার দুপুরে আদালতে উপস্থাপন করা হলে আদালত তাদেরকে
জেলে প্রেরণের নির্দেশ দেন।